আফগানিস্তানকে উড়িয়ে দিল ভারত

পাকিস্তান ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে হেরে সেমি-ফাইনালের সমীকরণ কঠিন করে ফেলে ভারত। শেষ তিন ম্যাচ জয়ের সঙ্গে রান রেটের হিসেবটাও রাখতে হচ্ছে মাথায়। বড় জয় চাই দলটির। আর আফগানিস্তানের বিপক্ষে সেটাই করেছে তারা। যুদ্ধ বিধ্বস্ত দলটিকে রীতিমতো উড়িয়ে দিয়েছে বিরাট কোহলির দল।

বুধবার আবুধাবির জায়েদ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আফগানিস্তানকে ৬৬ রানের ব্যবধানে হারিয়েছে ভারত। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ২ উইকেটে ২১০ রান করে ভারত। জবাবে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ১৪৪ রানের বেশি করতে পারেনি আফগানরা।

চলতি আসরে ভারতের মূল সমস্যাই ছিল ব্যাটিং। এর আগের দুটি ম্যাচেই তারা হেরেছে ব্যাটিং ব্যর্থতায়। এদিন আফগানদের বিপক্ষে ব্যর্থতার বৃত্ত থেকে বের হয়ে এলেন ব্যাটাররা। তার অগ্রণী ভূমিকা রেখেছেন দুই ওপেনার রোহিত শর্মা ও লোকেশ রাহুল। সে ধারা ধরে রেখে ঝড় তোলেন রিশাভ পান্ত ও হার্দিক পান্ডিয়াও। তাতে এবারের আসরের সর্বোচ্চ সংগ্রহই পায় ভারত।

আগের ম্যাচে নিজের পজিশন ওপেনিং থেকে তিনে নামানো হয়েছিল রোহিতকে। তাতে ব্যর্থ হয়েছিলেন। নিজের জায়গা ফিরে পেয়ে শুরু থেকেই অসাধারণ এ ব্যাটার। তাকে দারুণ সঙ্গ দেন রাহুলও। রানের চাকা সচল রেখে মাঝেমধ্যেই ঝড় তুলেছেন। পাওয়ার প্লে দ্বিতীয় ও পঞ্চম ওভারে যথাক্রমে ১৬ ও ১৭ রান তুলে ঝড়ের আভাস দেন। তাতে পাওয়ার প্লে শেষেই রান আসে বিনা উইকেটে ৫৩।

পাওয়ার প্লে শেষে তাদের আগ্রাসন কিছুটা কমলেও রানের গতি ছিল সচল। নিয়মিত সিঙ্গেল তুলে মাঝেমধ্যেই বাউন্ডারি মেরেছেন। পরের পাঁচ ওভারে রান আসে ৩৮। দ্বাদশ ওভারে নাভিন-উল হকের উপর ফের চড়াও হন তারা। সে ওভারে ১৬ রান তুলে নেন এ দুই ব্যাটার। সে ধারায় পরের ছয় ওভারে ৫৪ রান তুলে নেয় দলটি।

১৫তম ওভারে ১৪০ রানের ওপেনিং জুটি ভাঙতে পারে আফগানিস্তান। কাভারে মোহাম্মদ নবির হাতে ধরা পড়েন রোহিত। এরপর স্কোরবোর্ডে ৭ রান যোগ হতে আরেক ওপেনার রাহুলকেও তুলে নেয় দলটি। গুলবাদিন নাইবের বলে বোল্ড হয়ে যান তিনি। তবে দ্রুত দুই উইকেট হারালেও থামেনি ভারতের আগ্রাসন। উল্টো পান্ত ও পান্ডিয়া রীতিমতো ঝড় তোলেন। তাতে শেষ ২০ বলে রান আসে ৬২। গড়েন অবিচ্ছিন্ন ৬৩ রানের জুটি।

দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৭৪ রানের ইনিংস খেলেন রোহিত। ৪৭ বলে ৮টি চার ও ৩টি ছক্কায় এ রান করেন তিনি। ৪৮ বলে ৬টি চার ও ২টি ছক্কায় ৬৯ রানের ইনিংস খেলেন রাহুল। ১৩ বলে ৪টি চার ও ২টি ছক্কায় ৩৫ রানের দারুণ এক ক্যামিও খেলেন পান্ডিয়া। ১৩ বলে ১টি চার ও ৩টি ছক্কায় ২৭ রানের ইনিংস খেলেন পান্ত।

লক্ষ্য তাড়ায় শুরুটা ভালো হয়নি আফগানিস্তানের। দলীয় ১৩ রানেই জোড়া ধাক্কা খায় দলটি। ফিরে যান দুই ওপেনার হজরতুল্লাহ জাজাই ও মোহাম্মদ শাহজাদ। তবে রহমানুল্লাহ গুরবাজকে নিয়ে তৃতীয় উইকেটে প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেন গুলবাদিন নাইব। ৩৫ রানের জুটিও গড়েন তারা। মোহাম্মদ শামির এক ওভারে ২১ রান তুলে ভালো কিছুর ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। কিন্তু খুব বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি তারা। গুরবাজকে ফিরিয়ে এ জুটি ভাঙেন রবীন্দ্র জাদেজা।

এরপর বল হাতে এসে ঘূর্ণির মায়াজাল বিছান রবিচন্দ্রন অশ্বিন। অথচ চার বছরেরও বেশি সময় পর ফের জাতীয় দলের জার্সিতে টি-টোয়েন্টি খেলতে নেমেছিলেন এ স্পিনার। আর ফিরেই জাদু দেখান। গুলবাদিন ও নজিবুল্লাহ জাদরানকে ফেরান তিনি। তবে সবচেয়ে বড় কথা চার ওভার বল করে মাত্র ১৪ রান খরচ করেন তিনি। যেখানে আফগানদের লক্ষ্য ২১১ রান।

দলীয় ৬৯ রানে ৫ উইকেট হারানো দলটির হাল করিম জানাতকে নিয়ে ধরেন অধিনায়ক মোহাম্মদ নবি। ৫৭ রানের জুটিও গড়েন তারা। তবে রানের গতি সে অর্থে বাড়াতে পারেননি তারা। ফলে বড় ব্যবধানেই হারতে হয় দলটিকে।

দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৪২ রানের ইনিংস খেলেন করিম জানাত। ২২ বলে ৩টি চার ও ২টি ছক্কায় নিজের ইনিংস সাজান তিনি। ৩২ বলে ২টি চার ও ১টি ছক্কায় ৩৫ রান করেন অধিনায়ক নবি। ভারতের পক্ষে ৩২ রানের খরচায় ৩টি উইকেট পান শামি। ২টি শিকার অশ্বিনের।

Comments

The Daily Star  | English

Dengue testing fees to remain Tk 50 in govt hospitals

DGHS issues circular extending the fixed charges for dengue tests till Dec 31

32m ago