দায়িত্ববোধ থেকে কর দেন কাউছ মিয়া

কাউছ মিয়া নামটির সঙ্গে সুপরিচিত দেশের করদাতারা। ৯০ বছর বয়সী এই জর্দা ব্যবসায়ী গত ১০ বছর দেশের সর্বোচ্চ করদাতার হিসেবে এনবিআরের স্বীকৃতি পেয়েছেন।

গত অর্থবছরে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে শীর্ষ করদাতাদের একটি তালিকা প্রকাশ করেছে এনবিআর। গত সপ্তাহে প্রকাশিত তালিকায় যথারীতি এবারও কাউছ মিয়ার নাম সবার ওপরে। কারণ, শুধু আইনগত বাধ্যবাধকতা নয়, কর দেওয়াটা কাউছ মিয়ার কাছে দায়িত্ব।

২০১৬-১৭ অর্থবছরে কাউছ মিয়ার পরিবারকে কর বাহাদুর খেতাব দেয় এনবিআর।

১৯৩১ সালে চাঁদপুরে জন্ম নেওয়া কাউছ মিয়ার পূর্বপুরুষেরা ছিলেন ত্রিপুরার বাসিন্দা। বাবা চেয়েছিলেন ছেলেকে উচ্চশিক্ষিত করতে। কিন্তু কাউছ মিয়ার ধ্যান-জ্ঞ্যানে ছিল ব্যবসা।

মায়ের কাছ থেকে মাত্র আড়াই হাজার টাকা নিয়ে খুব অল্প বয়সে নারায়ণগঞ্জে ব্যবসা শুরু করেন তিনি। নারায়ণগঞ্জে ব্যবসার পাট চুকিয়ে তিনি চলে আসেন পুরান ঢাকায়। এখানে একসঙ্গে তিনি ৪০ ধরনের ব্যবসাও করেছেন।

জর্দার ব্যবসার জন্য কাউছ মিয়া সুপরিচিত হলেও শুরু থেকেই তিনি এই ব্যবসায় ছিলেন না। তার প্রধান ব্যবসা ছিল স্টেশনারি পণ্যের। ১৯৮৮ সালে তিনি জর্দা ব্যবসায় নামেন।

কাউছ কেমিক্যাল ওয়ার্কের সত্তাধিকারী কাউছ মিয়া কর দিচ্ছেন ১৯৫৮ সাল থেকে। অনেক সময়ই তিনি নির্ধারিত হারের চেয়ে বেশি কর পরিশোধ করেছেন যাতে এনবিআর তার ব্যাপারে কোনো প্রশ্ন তুলতে না পারে। এতে যেমন তার ব্যবসার সুনাম বাড়ে তেমনি পরিবারের ভাবমূর্তিও স্বচ্ছ থাকে।

তিনি বলেন, 'কর দেওয়া ভালো কাজ, তাই আমি দেই। আমরা কর না দিলে রাষ্ট্রের খরচ চলবে কীভাবে?'

এ প্রসঙ্গে বছরের শুরুতে তিনি বলেছিলেন, 'টাকা পয়সাই সবকিছু না, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো সম্মান।'

কর দেওয়ার প্রতি তার আগ্রহের কারণ কেউ জানতে চাইলে তিনি জবাবে বলেন, 'আমি মুনাফা করি তাই কর দেই। কর ফাঁকি দিয়ে কেউ ধনী হতে পারে না। কেউ ফাঁকি দিলে তিনি ভুল করছেন। মুনাফা করলে কর দেওয়া ভালো ব্যাপার।'

কাউছ মিয়া তরুণ ব্যবসায়ীদের দেশের ভবিষ্যৎ বলে মনে করেন। তার মতে, তরুণ ব্যবসায়ীরাই দেশ এগিয়ে নিয়ে যাবে।

তার ব্যাপারে গত মার্চে এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমতুল মুনিম বলেন, 'কারও সঙ্গে কাউছ মিয়ার তুলনা চলে না। তার যে মানসিকতা এবং দায়িত্ববোধ তাতে আমি আশা করি অন্য করদাতারাও উদ্বুদ্ধ হবেন এবং দেশের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করতে নিয়মিত কর পরিশোধ করবেন।'

Comments

The Daily Star  | English

Interest payments, subsidies soak up almost half of budget

Interest payments and subsidies have absorbed nearly half of Bangladesh’s total budget expenditure in the first seven months of the current fiscal year, underscoring growing fiscal stress and raising concerns over public finances.

1h ago