তাইজুলের ঘূর্ণিতে কাঁপছে পাকিস্তান

ছবি: ফিরোজ আহমেদ

চট্টগ্রাম টেস্টের আগের দুই দিন কেবল প্রথম সেশনেই পড়েছিল উইকেট। প্রথম দিনে বাংলাদেশ হারিয়েছিল ৪ উইকেট, দ্বিতীয় দিনে ৬ উইকেট। কিন্তু মধ্যাহ্ন বিরতির পর উইকেটের দেখা মিলছিল না বোলারদের। প্রথম দিনের দ্বিতীয় ও তৃতীয় সেশন নির্বিঘ্নে কাটিয়ে দিয়েছিলেন বাংলাদেশের মুশফিকুর রহিম ও লিটন দাস, দ্বিতীয় দিনে পাকিস্তানের দুই ওপেনার আবিদ আলি ও আবদুল্লাহ শফিক। তৃতীয় দিনে এসে সেই গেরো খুললেন পেসার ইবাদত হোসেন। বুদ্ধিদীপ্ত বোলিংয়ে মোহাম্মদ রিজওয়ানকে ফেরালেন তিনি। এরপর দুর্দান্ত ছন্দে থাকা তাইজুল ইসলাম নিজের চতুর্থ শিকারে বানালেন এদিন দুবার জীবন পাওয়া সেঞ্চুরিয়ান আবিদকে। পরের ওভারে হাসান আলিকে বিদায় করে ৫ উইকেট পূরণ করলেন এই বাঁহাতি স্পিনার। তাতে পাকিস্তানকে চেপে ধরে লিড নেওয়ার সুবাস পাচ্ছে স্বাগতিকরা।

রোববার জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে চলছে টেস্টের তৃতীয় দিনের দ্বিতীয় সেশনের খেলা। এই প্রতিবেদন লেখার সময়, প্রথম ইনিংসে পাকিস্তানের সংগ্রহ ১০৪ ওভারে ৯ উইকেটে ২৫৯ রান। ৬টিই দখল করেছেন তাইজুল।

মধ্যাহ্ন বিরতি শেষে খেলা শুরুর তৃতীয় ওভারে উইকেট আদায় করে নেন ইবাদত। এলবিডব্লিউ হয়ে রিজওয়ান সাজঘরে ফেরেন ৩৮ বলে ৫ রান করে। এরপর প্রথম সেশনে টানা ১৬ ওভারের স্পেল করা তাইজুল আক্রমণে ফিরেই তুলে নেন আবিদের উইকেট। আগের বলেই জীবন পাওয়া এই ওপেনার থামেন ২৮২ বলে ১৩৩ রানে। হাসানের ৮ বলের ছোট্ট ক্যামিও শেষ হয় ১২ রানে।

আগের দিনের বিনা উইকেটে ১৪৫ রান নিয়ে খেলতে নেমেছিল পাকিস্তান। মধ্যাহ্ন বিরতির আগে ৩১ ওভারে মাত্র ৫৮ রান তুলতে তারা হারায় ৪ উইকেট। এই সেশনের শুরুতেও তাদেরকে জোর ধাক্কা দিয়েছে মুমিনুল হকের দল।

নিজের আগের ওভারে টানা আউটসুইং করা ইবাদতের ইনসুইংয়ে পরাস্ত হন রিজওয়ান। বল আঘাত করে তার পেছনের পায়ে। এতে ভাঙে পাকিস্তানের ৭৬ বলে ২৫ রানের পঞ্চম উইকেট জুটি। দুই ওভার পর আবিদের কাঙ্ক্ষিত উইকেটের দেখা পায় বাংলাদেশ। অন্যপ্রান্তে উইকেট পড়তে থাকলেও একপ্রান্ত আগলে রেখেছিলেন তিনি। তাকে এলবিডাব্লিউ করে ফেরান বাঁহাতি স্পিনার তাইজুল। আবিদ রিভিউ নিলে দেখা যায়, বল লাগত লেগ স্টাম্পে। তার ম্যারাথন ইনিংসে ছিল ১২ চার ও ২ ছক্কা।

তাইজুলের ঠিক আগের ডেলিভারিতে ফিরতে পারতেন চতুর্থ টেস্ট সেঞ্চুরি পাওয়া আবিদ। স্বভাবের বাইরে গিয়ে ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে এসে বড় শট খেলতে চেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু সংযোগ ঠিক না হওয়ায় বল চলে যায় শর্ট লেগে। দুরূহ ক্যাচটা অনেক চেষ্টা করেও হাতে জমাতে পারেননি ইয়াসির আলি চৌধুরী রাব্বি। প্রথম সেশনেও তাইজুলের বলে বেঁচে গিয়েছিলেন আবিদ। তখন ১১৩ রানে ব্যাট করছিলেন তিনি। স্লিপে তার ক্যাচ হাতে জমাতে ব্যর্থ হয়েছিলেন নাজমুল হোসেন শান্ত।

টানা চার-ছক্কা হাঁকিয়ে তাইজুলকে এলোমেলো করে দেওয়ার প্রয়াস ছিল হাসানের। কিন্তু অতি আগ্রাসী হতে গিয়ে কাটা পড়েন তিনি। সহজ স্টাম্পিংয়ের সুযোগ কাজে লাগাতে ভুল করেননি উইকেটরক্ষক লিটন দাস। ঠিক পরের বলে বাংলাদেশের জোরালো আবেদনে সাড়া দিয়ে সাজিদকে এলবিডব্লিউ আউটের সিদ্ধান্ত দিয়েছিলেন আম্পায়ার। তবে রিভিউ নিয়ে বেঁচে যান তিনি।

এরপর সাজিদ আলিকে বোল্ড করে নিজের দ্বিতীয় উইকেট নেন ইবাদত। রিভিউ নিয়েও এলবিডব্লিউ থেকে রক্ষা না পাওয়া নুমান হন তাইজুলের ষষ্ঠ শিকার।

Comments

The Daily Star  | English

People ready, time right for the election

Chief Adviser Dr Muhammad Yunus said in a question-answer session at Chatham House in London.

9h ago