বাংলাদেশের সম্ভাবনা নিভু নিভু, অপেক্ষা আনুষ্ঠানিকতার

Abid Ali & Liton das
অপরাজিত ৫৬ রান করে বেরিয়ে যাওয়ার সময় লিটন দাসের সঙ্গে কথা বলছেন আবিদ আলি। ছবি: ফিরোজ আহমেদ

টেস্ট শুরুর আগে হয়ত ম্যাচে এমন পরিস্থিতি হবে, এই আশাও ছিল বাড়াবাড়ি। কিন্তু ম্যাচে বড় একটা সময় দারুণ খেলে একটা সময় যে উঁকি দিচ্ছিল জেতার সম্ভাবনাও। দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংটা যদি হতো আরেকটু ভালো, পরিস্থিতিও হতে পারত ভিন্ন। তবে সেসব কিছুই হয়নি। ২০২ রান তাড়ায় পাকিস্তানের ওপেনাররাই গড়েছেন শতরানের জুটি। ম্যাচে তাই অনেকটা আনুষ্ঠানিকতার অপেক্ষা।

সোমবার চট্টগ্রাম জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে চতুর্থ দিনের পর খেলার গতিপথ অনেকটাই পরিষ্কার। ২০২ রানের লক্ষ্যে নেমে বিনা উইকেটে ১০৯ রান তুলে নিয়েছে সফরকারীরা। ম্যাচ জিততে হাতে ১০ উইকেট নিয়ে পাকিস্তানের চাই কেবল ৯৩ রান। ৫৬ রান নিয়ে ক্রিজে আছেন আবিদ আলি, ৫৩ রানে অপরাজিত আব্দুল্লাহ শফিক।

দিনের শুরুটা একটা বিপুল আশা নিয়ে। বাকি ৬ উইকেট নিয়ে আগের দিনের লিডটা অন্তত আড়াইশর দিকে নিতে পারলেও খেলা জমার আভাস থাকত।  মুশফিকুর রহিম প্রথম বলেই মেরেছিলেন চার, কিন্তু ওই ওভারেই হাসান আলির বলে বল ছেড়ে হয়ে যান বোল্ড।

Abid Ali & Abdullah Shafiq
ছবি: ফিরোজ আহমেদ

পরের সময়টা বাংলাদেশকে ভরসা যুগিয়েছিলেন ইয়াসির আলি চৌধুরী ও লিটন দাস। লিটন শুরুতে কিছুটা অস্থির থাকলেও ইয়াসির ছিলেন স্থিতধি। রক্ষণে ছিলেন নিখুঁত, ইতিবাচক শটেও কোন দ্বিধা করেননি। দারুণ সব প্লেসিং শটে মাতান তিনি। ৬ষ্ঠ উইকেট জুটিতে এসে গিয়েছিল ৪৭ রান। জুটিই অবিচ্ছিন্নই থেকে গেল। তবে ইয়াসির থাকতে পারলেন না।

অভিষিক্ত এই ব্যাটসম্যানের বিদায় বড় দুঃখনজনকভাবে। শাহীন শাহ আফ্রিদির বাউন্সারে ডাক করতে গিয়ে হেলমেটে আঘাত পান তিনি। এক ওভার পর অস্বস্তি বোধ করার মাঠও ছাড়তে হয় তাকে। পরে ছিটকে যান ম্যাচ থেকেও। ৭২ বলে ৩৬ রানে থেমে যান ইয়াসির।

ইয়াসিরের কনকাশন বদলি হিসেবে নেমে সুযোগটা কাজে লাগাতে পারেননি নুরুল হাসান সোহান। লাঞ্চ বিরতিতে আর কোন উইকেট না পড়লেও লাঞ্চের পর বাজে শটে নিজের বিপদ আনেন সোহান। ৩৩ বলে থামেন ১৫ রানে।

লিটন ছিলেন আস্থার ছবি হয়ে। দশম টেস্ট ফিফটি করে তার ব্যাটেই মিলছিল লড়াইয়ের ছবি। লিটনকেও থামান শাহীন। তার ভেতরে ঢোকা বলে এলবিডব্লিউতে বিদায় নেন ৮৯ বলে ৫৯ করা লিটন। এরপর আর বেশিক্ষণ টেকেনি বাংলাদেশের ইনিংস।

লক্ষ্যটা তাই আর বড় হয়নি পাকিস্তানের। জবাবে ব্যাট করতে নেমে কোন সমস্যা ছাড়াই এগুতে থাকেন আবিদ আলি ও আব্দুল্লাহ শফিক। আগের ইনিংসের মতো এদিনও জমাট ওপেনিং জুটিতে খেলা সহজ করে ফেলে পাকিস্তান।

প্রথম ইনিংসের নায়ক তাইজুল ইসলামকেও তারা ভালোভাবে সামলে নিয়েছে। আগের ইনিংসের মতো এবারও বিবর্ণ ছিলেন মেহেদি হাসান মিরাজ। দুই পেসার ইবাদত হোসেন, আবু জায়েদ রাহিরাও ছিলেন খরুচে।

এই অবস্থা থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে ম্যাচ জেতা প্রায় অসম্ভব এক স্বপ্ন।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

বাংলাদেশ প্রথম ইনিংস: ৩৩০

পাকিস্তান প্রথম ইনিংস:  ২৮৬ 

বাংলাদেশ দ্বিতীয় ইনিংস:  ৫৬.২ ওভারে ১৫৭  (সাদমান ১, সাইফ ১৮, শান্ত ০, মুমিনুল ০, মুশফিক ১৬, ইয়াসির ৩৬* (আহত অবসর), লিটন ৫৯, মিরাজ ১১, সোহান ১৫, জায়েদ ০, ইবাদত ০ ; শাহীন ৫/৩২, হাসান ২/৫২, ফাহিম ০/১৬, নোমান ০/২৩, সাজিদ ০/৩৩)

পাকিস্তান দ্বিতীয় ইনিংস:  ৩৩ ওভারে ১০৯/০  (আবিদ ৫৬*, শফিক ৫৩*; তাইজুল ০/৩৭, ইবাদত ০/২৩, মিরাজ ০/৩৬, জায়েদ ০/১৩)

Comments

The Daily Star  | English
A dangerous suggestion

A dangerous suggestion

No provision in the constitution should be outside the purview of the judiciary

5h ago