স্মৃতিময় কমলাপুর রেলস্টেশনের বুকস্টল

রেলভ্রমণ নিয়ে রচিত হয়েছে বহু কবিতা। কবিগুরু থেকে নির্মলেন্দু গুণ—কবিরা তাদের লেখায় আনন্দময় যাত্রার ছন্দময় বর্ণনা দিয়েছেন। শুধু কবিতা নয়, নাটক-চলচ্চিত্রও নির্মিত হয়েছে অনেক। আর রেলভ্রমণের সঙ্গে বই পাঠের সম্পর্কটিও যেন গাঢ়। ফলে রেলের শুরু থেকেই স্টেশনগুলোতে বসতে থাকে বইয়ের দোকান।
ছবি: দীপন নন্দী/স্টার

রেলভ্রমণ নিয়ে রচিত হয়েছে বহু কবিতা। কবিগুরু থেকে নির্মলেন্দু গুণ—কবিরা তাদের লেখায় আনন্দময় যাত্রার ছন্দময় বর্ণনা দিয়েছেন। শুধু কবিতা নয়, নাটক-চলচ্চিত্রও নির্মিত হয়েছে অনেক। আর রেলভ্রমণের সঙ্গে বই পাঠের সম্পর্কটিও যেন গাঢ়। ফলে রেলের শুরু থেকেই স্টেশনগুলোতে বসতে থাকে বইয়ের দোকান।

ছবি: দীপন নন্দী/স্টার

সময় কাটাতেই এসব বইয়ের দোকানে ভিড় জমাতেন ভ্রমণকারীরা। সময়ের বিবর্তনে ভালো নেই রেলস্টেশনের বইয়ের দোকানগুলো। ঐতিহ্য টিকিয়ে রাখতে রীতিমতো সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছেন বইয়ের দোকানগুলোর মালিকরা।

দেশের প্রধান রেলস্টেশন কমলাপুর রেলস্টেশন। প্রতিদিনই শত ট্রেনের ভিড়ে হারিয়ে যান হাজারও মানুষ। তবে তাদের মধ্যে খুব বেশি লোকের নজরে পড়ে না প্রবেশ মুখে দাঁড়িয়ে থাকা বইয়ের দোকান ২টি। ভ্রমণকারীদের জন্যে নানা বিষয়ের বই নিয়ে সেখানে আছে 'ক্যামলট বুক স্টল' ও 'সৃজনী'। এই দোকান ২টি এখন কোনোক্রমে টিকে আছে।

'ক্যামলট বুক স্টল'র বর্তমান মালিক হান্নান খান মুকুলের সঙ্গে কথা হয় রেলস্টেশনের বইয়ের দোকান নিয়ে। তিনি জানালেন, গেল শতকের ৩০ দশকের দিকে ফুলবাড়ীয়া রেলস্টেশনে যাত্রা শুরু হয় ক্যামলট'র। লর্ড ক্যামলটের নামে বুকস্টলটির নামকরণ করা হয়েছিল।

ফুলবাড়ীয়া রেলস্টেশন বন্ধ হওয়ার পর ১৯৬৮ সাল থেকে কমলাপুর রেলস্টেশনে আছে বইটির দোকান। এটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন কলকাতার বেকার হোস্টেলে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সহপাঠী এম এ সালেহ আহমেদ।

হান্নান খান মুকুল বলেন, 'এগুলো এখন সবই অতীত। এমন সময় ছিল যখন বইয়ের দোকানটিতে ভিড় লেগেই থাকতো। ট্রেন ছাড়ার আগে চলে আসা মানুষেরা বই দেখতেন, কিনতেনও। তবে এখন আর সে সময় নেই। পাঠক বা ক্রেতা কোনটিই নেই। রেলস্টেশনের বইয়ের দোকান এখন বিলুপ্তির পথে।'

এত সংকটের পরও কেন দোকানটি চালাচ্ছেন?—জবাবে বললেন, 'এখন অভ্যাস হয়ে গেছে!'

তার সঙ্গে কথা বলতে বলতে চোখ যায় সাজিয়ে রাখা বইগুলোর দিকে। হরেক বিষয়ের বই। একটি বিশাল অংশ জুড়ে সেবা প্রকাশনীর নিউজপ্রিন্টে ছাপা পেপারব্যাক বইগুলো। মাসুদ রানা, তিন গোয়েন্দার পাশাপাশি অ্যাডভেঞ্চার, রোমাঞ্চ, ওয়েস্টার্ন—কত রকমের বই আছে এ তালিকায়। আছে হুমায়ূন আহমেদ ও মুহম্মদ জাফর ইকবালের বইয়ের বড় সংগ্রহ। এসবের পাশাপাশি বিশেষভাবে নজর কাড়ে জাতীয় দৈনিক পত্রিকা ও পুরনো ঈদ সংখ্যাগুলো।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলাম, শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়—সবাই রয়েছেন ক্যামলট'র পাশে 'সৃজনী'র স্টলে। ১৯৭২ সালে এ দোকানটি প্রতিষ্ঠা করেন অমল কান্তি নাথ।

'সৃজনী'র ব্যবস্থাপক মো. শফিউল্লাহ ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এখন পাঠক পাওয়াই দুষ্কর। সবাই মোবাইল ফোনে, ফেসবুকে ব্যস্ত। আমাদের এখানে বিক্রির অবস্থা খুবই খারাপ।'

Comments

The Daily Star  | English

Goods worth Tk 16k imported at Tk 2.59 crore

State-run Power Grid Company of Bangladesh Ltd (PGCBL) imported 68 kilograms of tower bolts, nuts and washers from India for a whopping $2,39,695 or Tk 2.59 crore, which is 1,619 times the contract value.

1h ago