মিশন এক্সট্রিম: কতটা দেশি কতটা আন্তর্জাতিক?

‘মিশন এক্সট্রিম’। ছবি: সংগৃহীত

গতকাল শুক্রবার 'মিশন এক্সট্রিম' মুক্তি পেয়েছে। সানি সানোয়ার ও ফয়সাল আহমেদ পরিচালিত সিনেমাটি মুক্তির প্রথম দিনেই অনেক প্রেক্ষাগৃহ হাউজফুল হয়েছে। গত কয়েকবছরে এমনটা চোখে পড়েনি। বাংলা সিনেমার জন্য নিশ্চয়ই এটা ভালো সংবাদ। দর্শকদের মাঝে প্রাণ সঞ্চারিত হয়েছে এই সিনেমার মাধ্যমে।

'মিশন এক্সট্রিম' এর গল্পের দিকে যাব না। কারণ মুক্তির দ্বিতীয় দিনে গল্প বলাটা ঠিক হবে না। তবে এটা বলতেই হয়, গতি রয়েছে সিনেমার গল্পে। কী হয়, কী হয় একটা ব্যাপার রয়েছে। বাংলাদেশের মানুষের গল্প নিয়েই এই সিনেমা। পুরোপুরি দেশীয় সমস্যার গল্প। এতো অল্প বাজেটে এমন গল্পের সিনেমা নির্মাণ সত্যি দুঃসাহসের।

এই সিনেমার ছোটবড় সব অভিনয়শিল্পীই মন দিয়ে অভিনয় করেছেন। তাদের আন্তরিকতা সিনেমার অনেক দুর্বলতা আড়াল করেছে। যদিও অনেক বাঘা-বাঘা অভিনেতার পর্দা উপস্থিতি আপনাকে প্রশ্নের মধ্য ফেলবে। এতো অল্প সময়ের জন্য তাদের পর্দা উপস্থিতি কেন? এটা কী সিনেমার আগামী পর্বের জন্য?

তবে আরিফিন শুভ অনায়াসে সিনেমার চরিত্র নাভিদ শাহরিয়ার হয়ে উঠেছেন। অভিনয়, স্মার্টনেস, অ্যাকশনে দর্শক মন জয় করেছেন। এই সিনেমার জন্য তার পরিশ্রম সার্থক হয়েছে। অভিনয়ে তার পরিমিতি বোধ চোখ জুড়িয়েছে।

তাসকিন রহমান আবারও জ্বলে উঠেছেন স্ব-মহিমায়। ঠাণ্ডা মাথার ভিলেন হিসেবে অনবদ্য তার নাম। তিনি যে লম্বা দৌড়ের ঘোড়া তার জানান দিয়েছেন আগেই। তার মুখের বলা সিনেমার সংলাপ 'বেহেস্তে আমাদের দেখা হবে' বেশ আলোচিত হয়েছে।

নায়িকা চরিত্রের ঐশীর অভিনয় একেবারে পাশের বাড়ির মেয়ের মতো। তাকে বোঝা মনে হয়নি অভিনয়ে। এমন স্বাভাবিক অভিনয় প্রথম সিনেমা হিসেবে তার জন্য বড় পাওয়া।

সাদিয়া নাবিলা পুলিশের যে চরিত্রে অভিনয় করেছেন তাতে বেশ মানিয়েছে। তবে কান্নার দৃশ্যে কী যেন একটা মিসিং মনে হয়েছে। এটা তার অভিনয়ের জন্য নয়, পরিচালক তাকে বোঝাতে সক্ষম হননি বলে মনে হয়েছে।

ইরেশ যাকের, শতাব্দী ওয়াদুদ অল্প সময় পর্দায় থাকলেও তাদের অভিনয়ের ক্যারিশমা দেখিয়েছেন। বাকি অভিনেতাদের মধ্যে রাশেদ মামুন অপু, মনোজ প্রামাণিক ও সুদীপ বিশ্বাস দীপ জ্বলে উঠার আগেই সিনেমার মধ্যেই উধাও হতে হয়েছে।

এই সিনেমায় আরও অভিনয় করেছেন রাইসুল ইসলাম আসাদ, ফজলুর রহমান বাবু, লায়লা হাসান, শহীদুজ্জামান সেলিম, সুমিত সেনগুপ্ত, মাজনুন মিজান, এহসানুল রহমান, সৈয়দ নাজমুস সাকিব, দীপু ইমামসহ অনেকেই।

সিনেমার 'জানি তুমি ছিলে' গানটির কথা, সুর, গায়কী মন্দ না। কিন্তু গানের চিত্রায়ন দেশের বাইরে মরুভূমিতে কী কারণে হয়েছে তা ঠিক বোঝা যায়নি। এ ছাড়া 'নাগর আমার কাঁচা পিরিত' গানটি সিনেমায় বড় বেশি অপ্রয়োজনীয় মনে হয়েছে। যদি খুব প্রয়োজন হতো নতুন একটা গান তৈরি করা যেতো পুরনো গানটি রেখে। সিনেমার আবহসঙ্গীত অন্য অনেক সিনেমার চেয়ে এগিয়ে। সম্পাদনায় মুনশিয়ানার ছাপ রয়েছে।

তবে সিনেমার শেষ দৃশ্যটা খুব ভালোভাবে জমাতে পারেননি কাহিনীকার। আরও ভালো করে গল্পটা ফেঁদে সিনেমার আগামী পর্বের ঘোষণা দেওয়া যেত। তবে পরিচালক হিসেবে সানি সানোয়ার ও ফয়সাল আহমেদের অভিষেক খুব একটা খারাপ না।

'মিশন এক্সট্রিম' কতটা আন্তর্জাতিক আর কতটা দেশি—এ বিষয়ে আরিফিন শুভর সাক্ষাতকার নিয়ে বাহাস চলছে। সিনেমায় আরিফিন শুভর এন্ট্রি, সিনেমার চরিত্রের জন্য সিক্সপ্যাক তৈরি, পর্দায় সিনেমার নাম আসার দৃশ্য, অ্যাকশন দৃশ্যের চিত্রায়নে কিছুটা হলেও আন্তর্জাতিকের ছোঁয়া রয়েছে। যা বাংলা সিনেমার সীমিত বাজেটে সম্ভব হয়েছে। তবে সিনেমার গল্প শতভাগ দেশি।

Comments

The Daily Star  | English

Ishraque holds DSCC meeting as 'mayor'

Organisers said the event aimed to ensuring a cleaner Dhaka and improve civic services

1h ago