পেটে কাঁচি রেখে সেলাই: কারও দায় পায়নি তদন্ত কমিটি

ফরিদপুরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তরুণীর পেটে অস্ত্রোপচারের পর কাঁচি রেখে সেলাই করার ঘটনায় প্রতিবেদন জমা দিয়েছে তদন্ত কমিটি।

তবে প্রতিবেদনে এ ঘটনায় কে দায়ী তা সুনির্দিষ্টভাবে চিহ্নিত করা হয়নি এবং কারও বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশও করা হয়নি।

কয়েকটি বিদেশি নিবন্ধের উদ্ধৃতি দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিভিন্ন দেশে এ ধরনের ঘটনা আগেও ঘটেছে। তাই অস্ত্রোপচারের সময় আরও সতর্ক থাকতে হবে।

গতকাল সোমবার দুপুরে হাসপাতালের পরিচালক সাইফুর রহমানের কাছে এই প্রতিবেদন জমা দেয় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি।

কমিটির সভাপতি ছিলেন ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান। অপর দুই সদস্য গাইনি বিভাগের অধ্যাপক ডা. কানিজ ফাতেমা ও সার্জারি বিভাগের অধ্যাপক ডা. মো. কামরুজ্জামান।

এ বিষয়ে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক সাইফুর রহমান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'কার গাফিলতিতে পেটে কাঁচি রাখার ঘটনাটি ঘটেছে, তা শনাক্ত করতে পারেনি তদন্ত কমিটি। তাছাড়া, তারা ওই অস্ত্রোপচারে যুক্ত কারও বিরুদ্ধে শাস্তি দেওয়ারও সুপারিশ করেনি।'

'তদন্ত প্রতিবেদনে বিশ্বের বিভিন্ন জার্নালের উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়েছে, এ জাতীয় ঘটনা বিরল নয়। এর আগেও বিভিন্ন দেশে অস্ত্রোপচারের সময় এমন ঘটনা ঘটেছে', বলেন তিনি।

তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ২০২০ সালের ৩ মার্চ সার্জারি ইউনিট-২ এর দায়িত্বে নিয়োজিত সহযোগী অধ্যাপক ডা. মোল্লা সরফউদ্দিনের অধীনে ওই অস্ত্রোপচারে আরও ৩-৪ জন চিকিৎসক অংশ নেন।

পরিচালক সাইফুর রহমান ওই প্রতিবেদনের উদ্ধৃতি দিয়ে আরও বলেন, 'গঠিত তদন্ত কমিটি এ বিষয়ে বেশ কয়েকটি সুপারিশ করেছে। এই সুপারিশের মধ্যে আছে, অস্ত্রোপচারের সময় একজন সেবিকাকে যন্ত্রপাতির দায়িত্বে নির্দিষ্টভাবে নিয়োজিত করা। পাশাপাশি অস্ত্রোপচারের সঙ্গে যুক্ত চিকিৎসক, নার্স, ওয়ার্ড বয় ও আয়াদের আরও অধিক দায়িত্বশীল হতে হবে। অস্ত্রোপচারের সময় বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।'

উল্লেখ্য, গোপালগঞ্জ জেলার মুকসুদপুর উপজেলার বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের ঝুটিগ্রামের বাসিন্দা খাইরুল মিয়ার মেয়ে মনিরা খাতুন (১৯)। ২০২০ সালের ৩ মার্চ ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগে তার অস্ত্রোপচার করা হয়। সেসময় একটি কাঁচি মনিরার পেটে রেখে সেলাই করে দেন চিকিৎসক। এ ঘটনার পৌনে ২ বছর পর গত ১১ ডিসেম্বর ওই হাসপাতালেই পুনরায় অস্ত্রোপচার করে তার পেট থেকে কাঁচিটি বের করা হয়।

Comments

The Daily Star  | English

Bangladesh Bank signals market-based exchange rate regime

The central bank will allow the exchange rate of the dollar to be determined by market forces

1h ago