সুরভী-৯ লঞ্চে ধোঁয়া: ফেসবুকে ছবি দেওয়ায় যাত্রীদের মারধর, বরখাস্ত ১

বরিশালে এমভি সুরভী-৯ লঞ্চের ধোঁয়ার ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এবং ৯৯৯ এ কল দিয়ে জানানোয় লঞ্চের স্টাফরা যাত্রীদের মারধর করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় লঞ্চের এক সহকারী ম্যানেজারকে বরখাস্ত করেছে কর্তৃপক্ষ।
তবে লঞ্চ কর্তৃপক্ষের দাবি লঞ্চে আগুন না ধোঁয়া দেখেই আতঙ্কিত হয়ে পরেছিলেন যাত্রীরা।
গতকাল শনিবার মধ্যরাতে মেঘনা নদীতে ঢাকা-বরিশাল রুটের যাত্রীবাহী ৩ তলা লঞ্চ সুরভী-৯ লঞ্চের ইঞ্জিন রুম থেকে ধোঁয়া বের হলে যাত্রীরা আতঙ্কে জাতীয় জরুরি পরিসেবা ৯৯৯ এ খবর দিলে ফায়ার ব্রিগেড চাদপুর জেলার মোহনপুর লঞ্চঘাটে লঞ্চটিকে নোঙর করতে বলে। পরে পরীক্ষা নিরীক্ষা করে ৬ ঘণ্টা পর তাদের বরিশালের উদ্দেশ্যে গন্তব্যে যেতে দেওয়া হয়।
অগাস্টিন গোমেজ নামে এক যাত্রী অভিযোগ করেন, লঞ্চের যাত্রীরা ছবি তুললে ও ভিডিওতে লাইভ করলে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পরে লঞ্চের স্টাফরা ঘাটে এলে তাদের মারধর করে। এতে কয়েকজন আহত হয়। সাংবাদিকেরা ছবি তুলতে চাইলে তাদেরও মারধর করা হয়।
একটি বেসরকারি টেলিভিশনের ক্যামেরা পারসন দেওয়ান মোহন জানান, সকালে তারা লঞ্চে গিয়ে দেখেন যাত্রীদের মারধর করা হচ্ছে। এই ছবি তুলতে গেলে তাদের মারধর করা হয় এবং এবং ক্যামেরা ভাঙচুর করা হয়। এ ঘটনায় দুই সাংবাদিকসহ অন্তত পাঁচ জন আহত হয় বলে দাবি করেন তিনি।
সুরভী-৯ লঞ্চের মালিক রিয়াজুল কবির জানান, 'লঞ্চে আগুন নয়, সাইলেন্সরের এ্যাডজস্টে ধোঁয়া উঠতে দেখে যাত্রীরা ৯৯৯ এ কল দেয় ও ফেইসবুকে লাইভ করে। এই ঘটনায় যাত্রী হয়রানি ও সাংবাদিকদের মারধরের অভিযোগ পেয়ে মিজানুর রহমান নামে সহকারী ম্যনেজারকে সাসপেন্ড করেছি। বর্তমানে লঞ্চে কোনো সমস্যা নেই, ইতোমধ্যে ফায়ার ব্রিগেড কর্তৃপক্ষও লঞ্চে এসে সব দেখে গেছেন।'
লঞ্চের ইঞ্জিন রুমের দায়িত্বপ্রাপ্ত পরিতোষ বলেন, 'সাইলেন্সর হিট হযে ধোঁয়া বেরোতে দেখে যাত্রীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। আমরা বালতিতে করে পানি দিয়ে উত্তাপ কমিয়ে লঞ্চটিকে চালু রাখি।'
সচেতন নাগরিক কমিটির সভাপতি শাহ সাজেদা জানান, মধ্যরাতে মেঘনা নদীতে যাত্রীবাহী লঞ্চে ধোঁয়া কোনো স্বাভাবিক ব্যাপার নয়। এটি থেকে আগুন ছড়িয়ে পড়তে পারতো। লঞ্চে অগ্নিদুর্ঘটনা রোধে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে।
গত ২৩ ডিসেম্বর বরগুনা-ঢাকা রুটের অভিযান-১০ লঞ্চটিতে আগুনে পুড়ে ৪৮ জন মারা যান। এই ঘটনায় আরও অন্তত অর্ধশত নিখোঁজ আছে বলে জেলা প্রশাসন ও যাত্রীদের বিভিন্ন সূত্র জানায়। এই ঘটনার পরে লঞ্চে আগুন আতঙ্কে ভুগছেন যাত্রীরা।
Comments