পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স: এ মাসেই বাধ্যতামূলক হচ্ছে ডোপ টেস্ট

পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স পেতে বা নবায়ন করাতে চলতি বছরের ৩০ জানুয়ারি থেকে সরকার-অধিভুক্ত হাসপাতাল বা ল্যাবরেটরি থেকে ডোপ টেস্ট বাধ্যতামূলক করা হবে।

যারা মাদকাসক্ত নন, তারাই কেবল বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) কাছ থেকে পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়ার জন্য যোগ্য বিবেচিত হবেন। তবে অপেশাদার লাইসেন্সের ক্ষেত্রে ডোপ টেস্ট বাধ্যতামূলক না।

বাণিজ্যিক পরিবহন, ভাড়ায় চালিত গাড়ি অথবা সরকারি বাহনের চালক হিসেবে কাজ করতে হলে পেশাদার লাইসেন্স থাকা আবশ্যক।

প্রধানমন্ত্রী গণপরিবহন কর্মীদের মাদক পরীক্ষার আওতায় আনার নির্দেশনা দেওয়ার প্রায় ১ বছর পর বিআরটিএ এই প্রক্রিয়া চালু করতে যাচ্ছে। বাস ও ট্রাক চালকদের মাদকাসক্তিকে সড়ক দুর্ঘটনার অন্যতম প্রধান কারণ হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

বিআরটিএর চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ মজুমদার গত বুধবার এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে সব বিভাগীয় ও সার্কেল কর্মকর্তাদের একটি পরিপত্র পাঠিয়েছেন।

তাতে বলা হয়েছে, মাদক পরীক্ষা সব জেলা পর্যায়ের সরকারি হাসপাতাল, ঢাকা শহরের ৬টি হাসপাতাল ও সরকারের মাদক নিয়ন্ত্রণ বিভাগের অনুমোদিত সব ল্যাবরেটরিতে মাদক পরীক্ষা করা যাবে।

ঢাকার ৬টি হাসপাতাল হলো—ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ল্যাবরেটরি মেডিসিন অ্যান্ড রেফারেল সেন্টার, জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠান (নিটোর), জাতীয় বক্ষব্যাধি ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল এবং কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল।

পরিপত্রে আরও বলা হয়েছে, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর (ডিজিএইচএস) গত মঙ্গলবার সব সরকারি হাসপাতালে লাইসেন্স প্রত্যাশীদের জন্য মাদক পরীক্ষার ব্যবস্থা করার জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে লিখিতভাবে নির্দেশনা পাঠিয়েছে।

২০২০ সালের ২২ অক্টোবর জাতীয় সড়ক নিরাপত্তা দিবস উপলক্ষে দেওয়া ভাষণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃপক্ষকে চালকদের মাদক পরীক্ষার আওতায় আনার নির্দেশ দেন।

তিনি বলেন, 'আমাদেরকে জানতে হবে যারা (পরিবহন) চালাচ্ছে, তারা মাদক ব্যবহার করছেন কি না। তাদের মাদক পরীক্ষার মধ্য দিয়ে যেতে হবে। প্রত্যেক চালকের জন্য এটি প্রয়োজন। আপনাদের এটি করতেই হবে।'

পরবর্তীতে বিআরটিএ একটি কমিটি গঠন করে। চালক মদ্যপান করেছেন কি না সে বিষয়ে অন-স্পট পরীক্ষা ব্যবস্থাসহ আরও বেশ কিছু সুপারিশ করা হয়।

বিআরটিএর মুখপাত্র শেখ মোহাম্মদ মাহবুব-ই-রব্বানী গতকাল বলেন, 'আমরা অন্যান্য সুপারিশগুলোকে পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়ন করবো।'

পরিবহন খাতের নেতারা ঘোষণা দিয়েছিল, ২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাস থেকে চালকদের মাদক পরীক্ষা শুরু হবে। ওই বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর এই প্রকল্পের বিষয়ে ঘোষণা দিয়ে সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার এনায়েত উল্লাহ জানান, ধারণা করা হয়, রাজধানীর প্রায় অর্ধেক গণপরিবহন চালক বিভিন্ন ধরনের মাদকে আসক্ত।

তিনি জানান, মাদকাসক্তি রাজধানীতে দুর্ঘটনার পেছনে প্রাথমিক ও মূল কারণে পরিণত হয়েছে। কিন্তু ওই উদ্যোগ সে সময় বাস্তবায়িত হয়নি।

বিশেষজ্ঞরা জানান, একজন চালক মাদক গ্রহণের পর ঝিমাতে থাকেন এবং তিনি স্টিয়ারিংয়ের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলতে পারেন, ফলে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।

Comments

The Daily Star  | English

Govt plans to include private sector in US tariff talks

Bangladesh is currently reviewing the proposals and will send a response within the next couple of days, Commerce Secretary Mahbubur Rahman told The Daily Star yesterday over the phone.

13h ago