শাবিপ্রবিতে মুখোমুখি শিক্ষক-শিক্ষার্থী?

শাবিপ্রবিতে শিক্ষকদের মানববন্ধন। ছবি: শেখ নাসির/স্টার

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (শাবিপ্রবি) উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলনের মধ্যেই আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের 'অশালীন মন্তব্য'র প্রতিবাদে শিক্ষকদের মানববন্ধন শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মুখোমুখি দাঁড় করিয়েছে।

এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবির) পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক কামরুল হাসান মামুন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'শিক্ষকদের এই অবস্থান দেখে আমি বিস্মিত। এই মুহূর্তে শিক্ষকদের কোনোভাবেই মাঠে নামা উচিত হয়নি। এটি শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দেওয়া হলো।

তিনি বলেন, 'আমাদের শিক্ষকরা আর শিক্ষক নেই। শিক্ষকদের এমন আচরণের কারণে শিক্ষক-শিক্ষার্থীর সম্পর্ক খারাপ দিকে নিয়ে যাবে। শিক্ষার্থীদের কোনোভাবেই বিরোধীপক্ষ ভাবা উচিত নয়। শিক্ষকরা মূলত এই মানববন্ধন করে শিক্ষার্থীদের আরও উস্কিয়ে দিলেন।'

শিক্ষকদের মানববন্ধনের বিষয়ে জানতে শাবিপ্রবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. তুলসী কুমার দাসের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'শিক্ষকদের মানববন্ধনের বিষয়ে শুনেছি। কিন্তু আমাকে আনুষ্ঠানিকভাবে কেউ জানায়নি। এ কর্মসূচির সঙ্গে শিক্ষক সমিতির কোনো সম্পৃক্ততা নেই।'

এ বিষয়ে মানববন্ধনের অংশ নেওয়া অধ্যাপক হিমাদ্রী শেখর রায় বলেন, 'ক্যাম্পাসে পুলিশী অ্যাকশনের বিষয়টা আমরা সমর্থন করি না আর যে কোন হামলাই নিন্দনীয়। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যা ঘটেছে, তা নিন্দনীয়। শিক্ষক সমিতি আমাদের প্রতিনিধিত্ব করেন বিধায় তারা চেষ্টা করছেন সমঝোতার মাধ্যমে সমাধানের। কিন্তু আজকে আমরা সাধারণ শিক্ষকরা দাঁড়িয়েছি, আমাদের অবস্থান কারো পক্ষে বিপক্ষে না।'

আজকের প্রতিবাদে সাধারণ শিক্ষকরা দাঁড়ালেও শিক্ষার্থীদের পাশে কোনো শিক্ষক না দাঁড়ানোর কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'ওটা যেহেতু একটা তদন্তাধীন বিষয়… সেটা প্রশাসনের সঙ্গে কথাবার্তা চলছে, সমাধান হয়ে যাবে বলে ভেবেছিলাম। আজকে অধ্যাপক লায়লাসহ দুজন শিক্ষক ডেকেছেন, তাই আমরা প্রতিবাদে দাঁড়িয়েছি।'

অধ্যাপক লায়লা আশরাফুন বলেন, 'শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে, তা কেন হলে সেটা তদন্তের দাবি আমাদেরও আছে। তাদের দাবিও একটা প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সমাধান হবে। তাদেরকে আলোচনায় বসানোর চেষ্টা হয়েছে কিন্তু তারা আলোচনায় বসতে রাজি না।'

তিনি বলেন, আমরা ছাত্রদের বিরোধীপক্ষ না। তারা আমাদের সন্তানতূল্য আর তাই তাদের কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য আমাদের অপমানিত করেছে। আর সে কারণে আমরা প্রতিবাদ জানিয়েছি যাতে তাদের বিবেক জাগ্রত হয়। অনেক শ্রেণি তাদের ব্যবহার করতে চাইবে, খারাপভাবে প্রভাবিত করবে; সে ব্যাপার তাদের সতর্ক করতে এই প্রতিবাদ।'

অধ্যাপক জসীম উদ্দিন বলেন, 'আমরা যে ক'জন শিক্ষক মানববন্ধনে দাঁড়িয়েছি, আমরা কোন প্যানেল বা রাজনৈতিক দলের না। আমরা সাধারণ শিক্ষক। শিক্ষার্থীদের দাবিদাওয়া নিয়ে শিক্ষক সমিতি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলছেন। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যা ঘটেছে তার তদন্ত করে সুষ্ঠু সুরাহা হোক তা আমরাও চাই। কিন্তু তারা আন্দোলনর নামে আমাদের নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করবে তা হতে পারে না, আমরা সেটার প্রতিবাদই করেছি।'

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা অশালীন মন্তব্য করেছে এবং নোংরা স্লোগান দিয়েছে— শিক্ষকদের এমন বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়েছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।

তাদের এক মুখপাত্র বলেন, 'আন্দোলনের মধ্য থেকে শিক্ষকদের বিরুদ্ধে কোনো অশালীন বা নোংরা মন্তব্য বা স্লোগান দেওয়া হয়নি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শিক্ষকদের নিয়ে অশালীন ও কুরুচিপূর্ণ মন্তব্যেরও আমরা তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।

Comments

The Daily Star  | English
sirens sound in israel after iran missile attack

Attacking military infrastructure in Western and Central Iran: Israeli military

Trump to decide within two weeks on possible military involvement

20h ago