শাবিপ্রবি উপাচার্যের অপসারণ দাবি সংসদে

ফাইল ছবি।

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে আজকের মধ্যে সরিয়ে দিতে দাবি উঠেছে জাতীয় সংসদে। আজ রোববার সংসদ অধিবেশনে পয়েন্ট অব অর্ডারে দাঁড়িয়ে বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য কাজী ফিরোজ রশিদ ও পীর ফজলুর রহমান এ দাবি করে প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রীকে এই বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানান।

কাজী ফিরোজ রশিদ বলেন, গত কয়েদিন ধরে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরা উপাচার্যের বিরুদ্ধে, হাউস টিউটরের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে যাচ্ছেন তাদের পদত্যাগের দাবিতে। তারা ১১ দিন যাবৎ অনশনে আছেন, ১৬ জন ইতোমধ্যে হাসপতালে ভর্তি হয়েছে। এতে কারো টনক নড়ছে না। শিক্ষামন্ত্রী ছাত্র-ছাত্রীদের বলেছেন যে তোমাদের দাবি দাওয়া রেখে ঢাকা আসো আমার সঙ্গে আলোচনা করতে। আমরা সবাই ছাত্র আন্দোলন করে এসেছি, আন্দোলনের মাঠ ছেড়ে কখনো কোনো ছাত্ররা কারো সঙ্গে দেখা করতে ঢাকা আসবে না আমরা জানি।

তিনি আরও বলেন, মন্ত্রীর উচিত ছিল ওখানে ডাবল মাস্ক পরে যাওয়া। মোনায়েম খান বহুবার আমাদের বঙ্গভবনে ডেকেছেন। আমরা তখন ছাত্র ছিলাম, আমরা বিয়ের দাওয়াত পেতাম না, আমাদের মিলাদের দাওয়াতও দিতো না। কিন্তু বঙ্গবভবনের দাওয়াতও কিন্তু আমরা প্রত্যাখান করেছি। আমরা কখনো কোনো আন্দোলন করতে গিয়ে বঙ্গভবনের দাওয়াতে যাইনি। ছাত্ররা কেন আসবে আপনার কাছে! প্রত্যেকটা ছাত্র আন্দোলন এ দেশে হয়েছে যৌক্তিকভাবে। যখনই যারা সরকারের থাকে সে আন্দোলনকে তারা অযৌক্তিক মনে করে।

কাজী ফিরোজ রশিদ বলেন, উপাচার্য এমন কোনো স্থায়ী পদ না যে তিনি চলে গেলে ওই বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ হয়ে যাবে। একজন উপাচার্যকে সরাতে গিয়ে ছাত্ররা যদি অনশন করে এর চেয়ে দুঃখজনক কিছু নেই। বুঝতে হবে উপাচার্যের ওপরে ছাত্রদের কোনো আস্থা নেই, বিশ্বাস নেই। উনার যদি বিন্দুমাত্র আত্মসম্মানবোধ থাকতো উনি অবশ্যই এখান থেকে সরে আসতেন। উনি জোর করে বসে আছেন পুলিশি ঘেরাওয়ের মধ্যে। এখানেই শেষ নয়, ছাত্ররা গিয়েছিলেন হাউস টিউটরের সঙ্গে দেখা করতে পারেনি। ছাত্রদের সঙ্গে খুব খারাপ আচরণ করেছেন হাউস টিউটর। সেখান থেকেই ঘটনার উৎপত্তি। তখন ছাত্র-ছাত্রীরা ভিসির কাছে গিয়েছিল, ভিসি তাদেরকে সরিয়ে দিয়েছেন, কথা বলেননি। তার পরেই তারা আন্দোলন করল। আন্দোলন করার পরই পুলিশ ডেকে আনলো। এটা কি আইয়ুব, মোনায়েম খানের আমল না কি? যে কথায় কথায় পুলিশ আনবেন। লঠিপেটা করল, কাঁদানে গ্যাস মারলো আমরা দেখলাম। কেন এটার উৎপত্তি হলো, কোনো ছাত্র আন্দোলনকে ছোট করে দেখা উচিত না।

আমি মনে করি অবিলম্বে আর কোনো তদন্ত রিপোর্ট নয়, কারো সঙ্গে আলাপ-আলোচনা নয়, শিক্ষামন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রী আছেন উপাচার্যকে আজকের মধ্যেই ওখান থেকে প্রত্যাহার করে নিয়ে আসেন, ছাত্রদের ক্লাসে ফিরে যেতে সহায়তা করেন—বলেন কাজী ফিরোজ রশিদ।

পীর ফজলুর রহমান বলেন, শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে লাগাতার আন্দোলন চলছে। শিক্ষার্থীরা ভিসির সঙ্গে আলাপ করতে গেলে তাদের লাঠিপেটা করা হয়েছে। ছাত্রদের ওপর আক্রমণ করার কারণেই ভিসির পদত্যাগের দাবিতে তারা আন্দোলন শুরু করে। বিশ্ববিদ্যালয়ের অভিভাবক হিসেবে ভিসি কোনো আলোচনা না করার কারণে শিক্ষার্থীরা আমরণ অনশনে গিয়েছে। অনশনে অসুস্থ হয়ে শিক্ষার্থীরা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। কিন্তু ভিসি আত্মসম্মান বিসর্জন দিয়ে নিলজ্জের মতো পদে আছেন। যে প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা ভিসিকে চায় না কিন্তু লখিন্দরের বাসার মতো সুরক্ষা নিয়ে নিজের বাসায় বসে আছেন। তিনি পদত্যাগ করবেন না। তিনি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলবেন না। স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করতে না চাইলে সরকারের উচিত আজকের মধ্যে তাকে অব্যহতি দেওয়া।

Comments

The Daily Star  | English
International Crimes Tribunal 2 formed

Govt issues gazette notification allowing ICT to try political parties

The new provisions, published in the Bangladesh Gazette, introduce key definitions and enforcement measures that could reshape judicial proceedings under the tribunals

2h ago