আরও ৬ মাস আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি নিয়ে ভাববেন না তামিম

ছবি: ফিরোজ আহমেদ

নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের সেরা ওপেনিং ব্যাটসম্যান তামিম ইকবাল খান। অন্তত পরিসংখ্যান তাই বলে। তবে টি-টোয়েন্টি সংস্করণে তার খেলার ধরণ অনেকদিন ধরেই প্রশ্নবিদ্ধ। এসব আলোচনার মধ্যে বিভিন্ন কারণে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছিলেন তিনি। তাতে মনে হচ্ছিল, এ সংস্করণে ক্যারিয়ারটাই বুঝি থমকে গেল তার। কিন্তু তামিম এই সংস্করণে তার ফেরাটা একদম উড়িয়ে দিচ্ছেন না। আপাতত আরও ছয় মাসের বিরতি নিচ্ছেন তিনি। এরপর পরিস্থিতি অনুসারে প্রয়োজন হলে ফিরতেও পারেন অভিজ্ঞ এই ব্যাটসম্যান।

মূলত তামিমের টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের সমাপ্তির কথা জানান বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। এ সংস্করণে তিনি আর খেলতে চান না বলেই জানিয়েছিলেন বোর্ড প্রধান। তখনই থেকেই নানা গুঞ্জন। হয়তো আর ফেরাই হচ্ছে না তার। শেষ পর্যন্ত এ সংস্করণে ফিরে আসার আভাস দিলেন তামিম। আগামী ছয় মাস তরুণ ক্রিকেটাররা ব্যর্থ হলে হয়তো ফের তাকে দেখা যাবে এ সংস্করণে। তামিন নিজে অবশ্য আশা করছেন তার ফেরার আর কোন প্রয়োজন হবে না। 

বৃহস্পতিবার চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে এ প্রসঙ্গে তামিম বলেন, 'টি-টোয়েন্টির বিষয়টা হলো, ছয় মাস আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি নিয়ে ভাবব না। আশা করি, এই ছয় মাসে তরুণরা এতই ভালো খেলবে যে আমার আর প্রয়োজন পড়বে না। তারপরও ছয় মাস পর যদি এমন সময় আসে যে ক্রিকেট বোর্ড, নির্বাচক বা টিম ম্যানেজমেন্ট যদি মনে করে আমাকে দরকার, আমিও যদি তৈরি থাকি, তখন আবার এটা নিয়ে আলাপ হবে। কিন্তু এই ছয় মাস ভাবছি না।'

এক দুই সিরিজে না বিচার করে তরুণদের পর্যাপ্ত সুযোগ দিতেই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তামিম, 'শেষ সিরিজেও তরুণদের সুযোগ দিয়েছি। ওদেরও যথেষ্ট সুযোগ দেওয়া দরকার। এক দুই সিরিজে আস্থা হারালে সেটা ভুল। ছয় মাসে আমি ব্যক্তিগতভাবে নিশ্চিত আমার আর দরকার হবে না। তারপরও বললাম বিশ্বকাপের আগে বোর্ড বা আমি মনে করলে ফিরব। তবে এই মুহূর্তে এটা নিয়ে ভাবছি না।'

সবশেষ গত বছরের মার্চে জাতীয় দলের হয়ে টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছিলেন তামিম। এরপর একটি বিশ্বকাপ ছাড়াও ঘরের মাঠে তিনটি সিরিজ খেলেছে বাংলাদেশ। বিশ্বকাপে আগে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ জিতেছিল টাইগাররাই। যদিও সেখানেও ব্যর্থ ছিলেন ওপেনাররা। আর বিশ্বকাপে তো পুরো দলই ব্যর্থ। সে ধারা বজায় থাকে পাকিস্তান সিরিজে। 

বিপিএল শেষেই বাংলাদেশে আসছে আফগানিস্তান। এরপর দক্ষিণ আফ্রিকা, ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও জিম্বাবুয়ে সফর করবে টাইগাররা। তবে সূচি অনুযায়ী দক্ষিণ আফ্রিকায় নেই কোনো টি-টোয়েন্টি। সেক্ষেত্রে আলাদা করে নতুন কোনো সূচি ঘোষণা না হলে আগামী ছয় মাসে আটটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ। এই আট ম্যাচে তরুণ ওপেনাররা প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ হলেই কেবল ফিরতেও পারেন তামিম।

বর্তমানে টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশ দলের ওপেনিং পজিশনে প্রতিযোগিতাটা বেশ লম্বাই। প্রথম পছন্দ হিসেবে খেলছেন মোহাম্মদ নাঈম শেখ। তার স্ট্রাইকরেট আর খেলার ধরণ নিয়েও আছে অনেক প্রশ্ন।  বিশ্বকাপে প্রত্যাশা পূরণ করতে না পারায় পাকিস্তান সিরিজে বাদ পড়েন লিটন দাস ও সৌম্য সরকার। বিপিএলে পারফর্ম করে তাদের সামনে আছে ফেরার সুযোগ। পাকিস্তান সিরিজে ফেরা নাজমুল হোসেন শান্তও আছেন প্রতিযোগিতায়। সুযোগের অপেক্ষায় আছেন পারভেজ ইমনের মতো তরুণও।

উল্লেখ্য, জাতীয় দলের হয়ে ৭৮টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছেন তামিম। তাতে ২৪.০৮ গড়ে রান করেছেন ১৭৫৮ রান। তবে স্ট্রাইক রেট কেবল ১১৬.৯৬। এই সংস্করণে বাংলাদেশেরই একমাত্র সেঞ্চুরি এসেছে তার ব্যাটে। স্বীকৃত টি-টোয়েন্টিতে  সবমিলিয়ে ২৩৩টি টি-ম্যাচ খেলে ৩১.০৫ গড়ে করেছেন ৬৫৮৪ রান।

Comments

The Daily Star  | English
wheat production decline in bangladesh

With acreage and output falling, is there any prospect for wheat in Bangladesh?

Falling wheat acreage raises questions about food security amid climate change

16h ago