শিক্ষাসনদ হারিয়ে গেলে করণীয় কী

শিক্ষাসনদ প্রত্যেকের জীবনেই অনেক শ্রমসাধ্য একটি বস্তু। দুর্ঘটনাক্রমে এই মহামূল্যবান কাগজটিও অনেক সময় হারিয়ে যায় কিংবা নষ্ট হয়ে যায়।

অসাবধানতাবশত এমন হলে করণীয় কী তা জেনে নেওয়া যাক।

থানায় জিডি

শিক্ষাসনদ হারিয়ে গেলে সর্বপ্রথম কাজ হলো যে স্থানে হারিয়েছে তার নিকটস্থ থানায় গিয়ে রিপোর্ট করা। এ সময় জিডির জন্য কিছু প্রয়োজনীয় তথ্য সরবরাহ করতে হবে। তার মধ্যে রয়েছে হারিয়ে যাওয়া সার্টিফিকেটের কিছু তথ্য। যতটুকু মনে থাকে ততটুকু দিলেও চলবে।

জিডি লেখা শেষে এর একটি কপি আপনাকে দিয়ে দেওয়া হবে। পরবর্তীতে তা বিভিন্ন জায়গায় দরকার হতে পারে। জিডির কপি হাতে পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই এর কয়েকটি ফটোকপি করে রাখতে হবে।

পত্রিকায় বিজ্ঞাপন

জিডির এক কপি সঙ্গে নিয়ে চলে যেতে হবে কোনো একটি জাতীয় দৈনিকের অফিসে। সেখানে দায়িত্বরত কর্মকর্তাকে তাদের পত্রিকায় সার্টিফিকেট হারানো বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করার জন্য বিস্তারিত তথ্য দিতে হবে। এই তথ্যের ভিত্তিতেই বিজ্ঞপ্তিটি হুবহু প্রকাশিত হবে। তাই এ সময় যে তথ্যগুলো দেওয়া উচিত সেগুলো হলো- জিডি নম্বর, সার্টিফিকেটে উল্লেখিত পরীক্ষার নাম, বোর্ডের নাম, পাশের সাল, যার সার্টিফিকেট হারিয়েছে তার নাম এবং কীভাবে হারিয়েছে তার বিস্তারিত। বিজ্ঞপ্তিটি প্রকাশিত হলে পত্রিকা থেকে তা কেটে রাখতে হবে পরবর্তীতে ব্যবহারের জন্য।

শিক্ষাবোর্ডে আবেদন

সার্টিফিকেট আবেদনের জন্য প্রথমেই সার্টিফিকেট ফি জমা দিতে হবে। আর এর জন্য একমাত্র মাধ্যম অনলাইনে সোনালী সেবা। কোনো ধরনের নগদ অর্থ, পোস্টাল অর্ডার কিংবা ট্রেজারি চালান এখন আর গৃহীত হয় না।

ঢাকা শিক্ষাবোর্ডের ওয়েবসাইট থেকে সোনালী সেবায় পাওয়া যাবে ফি জমা দেওয়ার ফরম। সেটি পূরণ করে সেভ করলে ফি জমা দেওয়ার ফরম পাওয়া যাবে। সেটি প্রিন্ট করে সোনালী ব্যাংকের যে কোনো শাখায় জমা দিলে দুটি জমা রশিদ প্রদান করা হবে। একটি ফি প্রদানকারীর অংশ, আরেকটি বোর্ডের জন্য।

শিক্ষাবোর্ডে আবেদনপত্র জমা

যে শিক্ষাবোর্ডের অধীনে সার্টিফিকেট পরীক্ষাটি অনুষ্ঠিত হয়েছিল সকল প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে এবার সেখানে যেতে হবে। শিক্ষাবোর্ডের তথ্যসংগ্রহ কেন্দ্রে যোগাযোগ করে সার্টিফিকেট তোলার জন্য আবেদন ফরম সংগ্রহ করতে হবে। অতঃপর সেখানে চাওয়া প্রতিটি তথ্য নির্ভুলভাবে দিয়ে পূরণ করতে হবে আবেদনপত্রটি।

আবেদনপত্রের সবার উপরে ইআইআইএন নম্বরটি পাওয়া যাবে ঢাকা শিক্ষাবোর্ডের ওয়েবসাইটের হোম পেজের ইন্সটিটিউট ওয়েবসাইট থেকে।

এ ছাড়া আবেদনকারীর পরীক্ষা সংক্রান্ত ও ব্যক্তিগত বৃত্তান্তের পাশাপাশি সোনালী সেবা নম্বর দিতে হয়, যেটি পাওয়া যাবে সোনালী ব্যাংক থেকে সরবরাহকৃত আবেদনকারীর জমা রশিদে।

আবেদনপত্রটি নিয়মিত ও অনিয়মিত উভয় আবেদনকারীর ক্ষেত্রেই তাদের নিজ নিজ প্রতিষ্ঠান প্রধান কর্তৃক সত্যায়িত হতে হবে।

আবেদনপত্রটি চূড়ান্তভাবে প্রস্তুত হয়ে গেলে শিক্ষাবোর্ডে জমা দেওয়ার সময় এর সঙ্গে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংযুক্ত করতে হবে। সেগুলো হলো- জিডির কপি, পত্রিকায় প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিটির কেটে নেওয়া অংশ এবং বোর্ডের জন্য নির্ধারিত টাকা জমা দেওয়ার রশিদ।

সার্টিফিকেট যদি কোন কারণে আংশিক বা সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে যায় তাহলে জিডি করা বা পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তির দেওয়ার প্রয়োজন নেই। নষ্ট হয়ে যাওয়া সার্টিফিকেট নিয়ে পরবর্তী ধাপগুলো সম্পন্ন করলে চলবে।

প্রয়োজনীয় খরচ

শিক্ষাবোর্ড থেকে শিক্ষা সনদের দ্বি-নকল তোলার ফি ৫০০ টাকা। ত্রি এবং চৌ-নকলের জন্য খরচ হবে ৭০০ টাকা।

শিক্ষা সনদপত্রের বিষয়ে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বনের বিকল্প নেই। সনদ যখন ইস্যু করা হয় তখনই অফসেট কাগজে এর বেশ কয়েকটি অনুলিপি করে রাখা ভালো। যথাযথ যত্নে সনদ রাখলে হারিয়ে যাওয়া বা নষ্ট হয়ে যাওয়ার পরিণামে সময় ও অর্থ অপচয় থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।

Comments

The Daily Star  | English

Iran announces new wave of attacks on Israel: state TV

Israel says conducted 'extensive strikes' in Iran's west, while explosions near Tel Aviv, sirens blare across Israel; smoke rises after explosion in Iran’s Tabriz

13h ago