‘সবকটা জানালা খুলে দাও না’ গানের গীতিকার একুশে পদক পেলেন
সংগীতে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য ২০২২ সালের (মরণোত্তর) একুশে পদক পেয়েছেন গীতিকবি নজরুল ইসলাম বাবু।
গীতিকার হিসেবে তার লেখা 'সব কটা জানালা খুলে দাও না' ও 'একটি বাংলাদেশ তুমি জাগ্রত জনতার' কালজয়ী গান দুটির কথা প্রথমে মনে আসে। মৃত্যুর ৩২ বছর পরও এই বীর মুক্তিযোদ্ধার লেখা গানের কথা শ্রোতাদের মনে উজ্জ্বল হয়ে আছে। তিনি আরও অনেক কালজয়ী গান লিখেছেন।
নজরুল ইসলাম বাবুকে রাষ্ট্রীয় সম্মাননা সংস্কৃতি কর্মীদের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল। অবশেষে সংগীতে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে একুশে পদক পাচ্ছেন তিনি।
দীর্ঘদিন ধরেই সংস্কৃতি কর্মীরা রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দেওয়ার কথা বলে আসছিলেন এই গীতিকবির জন্য। অবশেষে তাকে মরণোত্তর একুশে পদক দেওয়া হচ্ছে। তার স্বীকৃতিতে সংগীতাঙ্গনে আনন্দ ছুঁয়ে গেছে।
নজরুল ইসলাম বাবুর লেখা উল্লেখযোগ্য গানগুলোর মধ্যে আছে- সবকটা জানালা খুলে দাও না, একটি বাংলাদেশ তুমি জাগ্রত জনতার, আমায় গেঁথে দাও না মাগো, দুই ভুবনের দুই বাসিন্দা, পৃথিবীতে প্রেম বলে কিছু নেই, ডাকে পাখি খোল আঁখি, কাল সারারাত ছিল স্বপ্নের রাত, আমার গরুর গাড়ীতে বউ সাজিয়ে, কতো যে তোমাকে বেসেছি ভালো, কাঠ পুড়লে কয়লা হয়, এই অন্তরে তুমি ছাড়া নেই কারো, আমার মনের আকাশে আজ জ্বলে শুকতারা, তোমার হয়ে গেছি আমি, মায়ের মাথার সিঁথির মতো লম্বা সাদা পথ, হৃদয়ের চেয়ে ভালো কোনো ফুলদানি নেই।
নজরুল ইসলাম বাবু ১৯৪৯ সালের ১৭ জুলাই জামালপুরের মাদারগঞ্জ উপজেলার চরনগর গ্রামে মাতুলালয়ে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৭৩ সালে আশেক মাহমুদ কলেজ থেকে বিএসসি ডিগ্রি লাভ করেন। একই বছর বাংলাদেশ বেতার ও বাংলাদেশ টেলিভিশনে গীতিকার হিসেবে তালিকাভুক্ত হন। ১৯৮৪ সালের ২৩ নভেম্বর শাহীন আক্তারকে বিয়ে করেন। তাদের দুই সন্তানের নাম নাজিয়া ও নাফিয়া।
নজরুল ইসলাম বাবু গানের কথায় শব্দ চয়নে অসামান্য দক্ষতা দেখিয়েছেন। শব্দের ব্যবহার তাকে অনন্য করে তুলেছে। তার সমসাময়িক বেশ কয়েকজন গীতিকবি ও সুরকার এমনটাই দাবি করেন।
১৯৯০ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর পৃথিবীর মায়া ছেড়ে পরলোকে পাড়ি জমান নজরুল ইসলাম বাবু। মৃত্যুর পরের বছর তিনি 'পদ্মা মেঘনা যমুনা' ছবিতে গান লিখে শ্রেষ্ঠ গীতিকার হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান।
Comments