সাকিবের চারে চার, সিলেটকে বিদায় করে প্লে অফে বরিশাল

ছবি: ফিরোজ আহমেদ

মুনিম শাহরিয়ারের ঝড়ো শুরু টেনে উত্তাল হয়ে উঠল সাকিব আল হাসানের ব্যাট। ক্রিস গেইল নিজের ছায়া হয়ে টিকে থাকলেও শেষ দিকে সবটা পুষিয়ে দলকে দুশোর কিনারে নিলেন ডোয়াইন ব্রাভো। রান তাড়ায় বিস্ফোরক ব্যাটিংয়ে সিলেটের আশা জিইয়ে রেখেছিলেন কলিন ইনগ্রাম। তবে শিশিরে ভেজা মাঠের কঠিন পরিস্থিতিতে বল হাতেও ঝলক দেখালেন সাকিব। আরও একটি জয় তুলে প্লে অফ রাউন্ড নিশ্চিত করেছে ফরচুন বরিশাল। টানা হারে ধুঁকতে থাকা সিলেট সানরাইজার্সের পরের ধাপের পথ হয়ে গেছে বন্ধ।

এই ম্যাচেও সেরা হয়েছে বরিশাল অধিনায়ক সাকিব। এই নিয়ে টানা চার ম্যাচে দলের জয়ে সেরা হলেন তিনি।  মঙ্গলবার সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে রাতের ম্যাচে হয়েছে রান উৎসব। তাতে সানরাইজার্সকে ১২  রানে হারিয়েছে সাকিবের দল। আগে ব্যাট করে বরিশাল করেছিল ১৯৯ রান। ইনগ্রামের ৯০ রানের উপর ভর করে সানরাইজার্স করতে পারে ১৮৭  রান।

বরিশালের জয়ে অবদান বেশ কয়েকজনের। তবে আরও একবার ব্যাটে-বলে সেরা নৈপুণ্য এলো সাকিবের কাছ থেকেই। ১৯ বলে ৩৮ করার পর ২৩ রানে ২ উইকেট নিয়ে নায়ক তিনি। এই জয়ে ৯ ম্যাচের ছয়টা জিতে ১৩ পয়েন্ট নিয়ে প্লে অফে শীর্ষ দুইয়ে থাকা নিশ্চিত করল তারা। 

দুইশো রান তাড়ায় অনুকূল পরিবেশ পেয়ে ওপেনিংয়ে ঝড় তুলেন ইনগ্রাম। সাকিব-মুজিবদের শুরুতেই এলোমেলো করে দেন তিনি। সঙ্গী এনামুল হক বিজয় বেশিক্ষণ টেকেননি। ইনগ্রাম একাই বাড়াচ্ছিলেন রান।

বিজয়ের সঙ্গে ৩৪ রানের জুটিতে ২৭ রানই ইনগ্রামের। বিজয়কে ফিরিয়ে জুটি ভাঙ্গেন সাকিব।  দ্বিতীয় উইকেটে মোহাম্মদ মিঠুনকে নিয়ে ৩৮ বলে আনেন ৭৪ রানের জুটি। তাতে ৫২ রানই ইনগ্রামের। ১৪ বলে ১৯ করে ক্যাচ উঠিয়ে ফেরেন মিঠুন।

২৩ বলে ফিফটি স্পর্শ করা ইনগ্রাম পরেও খেলছেন দারুণ কিছু শট। সিলেটের আশা-ভরসা হয়ে এগুচ্ছিলেন সেঞ্চুরির দিকে। তবে তার একার লড়াই কুলিয়ে উঠতে পারছিল না দল। অধিনায়ক রবি বোপারা আরেক দফায় করেন হতাশ। তাকেও কাবু করেন সাকিব।

মাঝের সময়টায় কিছুটা মন্থর হয় রানের চাকা। সেঞ্চুরির কাছে গিয়ে থামেন ইনগ্রামও। ৪৯ বলে ১৬ চার ১ ছক্কায় ৯০ রান করে নাজমুল হোসেন শান্ত বলে বাউন্ডারি লাইনে ধরা পড়েন ইনগ্রাম। ঠিক পরের বলেই ফেরেন মিজানুর রহমান।

Shakib Al Hasan
১৯ বলে ৩৮ রানের পথে সাকিব আল হাসান। ছবি: ফিরোজ আহমেদ

বরিশালের শুরুটা ঝড় তুলে রাঙিয়ে তুলেন মুনিম। গেইলকে এক পাশে স্থবির রেখে উত্তাল হয়ে উঠে তার ব্যাট। ড্রাফটে দল না পাওয়া এই ওপেনার দেন তার সামর্থের প্রমাণ।

মাত্র ২৬ বলেই স্পর্শ করেন বিপিএলের প্রথম ফিফটি। এরপরই অবশ্য ফিরে গেছেন। তিনে নামানো হয়েছিল নুরুল হাসান সোহানকে। তিনি আবার হন ব্যর্থ।

চারে নেমে সাকিবের ব্যাট হয়ে উঠে বিস্ফোরক। একের পর এক চার-ছয়ে বোলারদের অস্থির করে তুলেন তিনি। আগ্রাসী এক ফিফটির দিকেই যাচ্ছিলেন বরিশাল অধিনায়ক। আলাউদ্দিন বাবুর বলে আরেকটি ছক্কার চেষ্টায় বাউন্ডারি লাইনে ক্যাচ দেওয়ার আগে ১৯ বলে ৩৮ করে যান তিনি।

আগের ম্যাচে মন্থর ব্যাট করা তৌহিদ হৃদয় এদিন ছক্কায় শুরু করেছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত থামেন ১১ বলে ১০ করে। ওপেন করতে নেমে শেষ পর্যন্ত টিকে থাকা গেইল নিজের খোলস ছেড়ে আর বেরই হননি। ধীরলয়ের ফিফটি করে তিনি অপরাজিত থাকেন ৪৫ বলে ৫২ রানে।

বরিশালের রান দুইশোর কাছে যায় মূলত ডোয়াইন ব্রাভোর কল্যানে। মাত্র ১৩ বলে ৪ ছক্কায় ৩৪ করেছেন তিনি। ওই ইনিংসটাই পরে হয়েছে তফাৎ গড়ার মতো গুরুত্বপূর্ণ। 

সংক্ষিপ্ত স্কোর 

ফরচুন বরিশাল: ২০ ওভারে ১৯৯/৪  (মুনিম ৫১, গেইল ৫২, নুরুল ২, সাকিব ৩৮, হৃদয় ১০, ব্রাভো ৩৪* ; গাজী ১/৪৫, সিরাজ ০/৫৬, স্বাধীন ১/৩৭, আলাউদ্দিন ১/২৮, নাজমুল ১/১৪, মোসাদ্দেক ০/১৫)  

সিলেট সানরাইজার্স: ২০ ওভারে ১৮৭/৬ (ইনগ্রাম ৯০, বিজয় ৭ , মিঠুন ১৯, বোপারা ৯, মোসাদ্দেক ৩৪, মিজানুর ০, আলাউদ্দিন ২২*, স্বাধীন ১*;  মুজিব ০/৪০ , সাকিব ২/২৩ , ব্রাভো ২/৪২, শফিকুল ০/৩৩, রানা ০/২১, জিয়া ০/২৬, শান্ত ২/২)

ফল: ফরচুন বরিশাল ১২ রানে জয়ী।

ম্যান অব দ্য ম্যাচ: সাকিব আল হাসান।

Comments

The Daily Star  | English

Govt warns of tough action against protesting NBR officials

The strike crippled activities at customs and ports, affecting exports, imports, and businesses.

1h ago