মাহমুদুলের ফিফটির পর নারিনের ক্যামিওতে প্লে অফে কুমিল্লা

ছবি: ফিরোজ আহমেদ

কলিন ইনগ্রামের দাপুটে ইনিংসে চড়ে সিলেট সানরাইজার্স পেল লড়াইয়ের পুঁজি। লক্ষ্য তাড়ায় মাহমুদুল হাসান জয় কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সকে পথে রাখার পর সুনীল নারিন খেললেন গুরুত্বপূর্ণ এক ক্যামিও। রোমাঞ্চকর লড়াইয়ে জিতে দ্বিতীয় দল হিসেবে বিপিএলের প্লে অফে নাম লেখাল তারা।

বুধবার সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে ১ বল হাতে রেখে ৪ উইকেটে জিতেছে কুমিল্লা। টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৫ উইকেটে ১৬৯ রান তোলে আগেই আসর থেকে ছিটকে যাওয়া সিলেট। জবাবে ১৯.৫ ওভারে ৬ উইকেটে ১৭৩ রান তুলে জয় নিশ্চিত করে ইমরুল কায়েসের নেতৃত্বাধীন দল। ৮ ম্যাচে তাদের অর্জন ১১ পয়েন্ট।

ম্যাচসেরা মাহমুদুল খেলেন ৫০ বলে ৬৫ রানের অনবদ্য ইনিংস। তিনি মারেন ৭ চার ও ২ ছয়। ৩ চার ও ১ ছক্কায় নারিন ১২ বলে ২৪ রানে অপরাজিত থেকে দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন। এর আগে কুমিল্লার হয়ে বল হাতে মোস্তাফিজুর রহমান ৪ ওভারে ২৩ রানে নেন ৩ উইকেট।

অথচ নারিন ফিরতে পারতেন মুখোমুখি হওয়া প্রথম বলে, কোনো রান না করেই! ইমরুল নাজমুল ইসলাম অপুর শিকার হওয়ার ঠিক পরের বলে লং অনে ক্যাচ তুলেছিলেন নারিন। কিন্তু সুযোগ লুফে নিতে না পেরে ম্যাচটাই হাত ফসকে যেতে দেন সিলেটের মুক্তার আলী।

উদ্বোধনী জুটিতে বড় সংগ্রহের ভিত পেয়েও কাজে লাগাতে পারেনি সিলেট। ইনগ্রাম ও এনামুল হক বিজয় মিলে ১২.২ ওভারে স্কোরবোর্ডে আনেন ১০৫ রান। কিন্তু এনামুলের বিদায়ে এই জুটি ভাঙার পর ইনগ্রাম এক প্রান্তে তাণ্ডব চালিয়ে গেলেও অন্য প্রান্তে বাকিরা ভূমিকা রাখতে ব্যর্থ হন। লেন্ডল সিমন্স, অধিনায়ক রবি বোপারা, আলাউদ্দিন বাবুদের কেউই পরিস্থিতির দাবি মেটাতে পারেননি।

৩৫ বলে ফিফটি ছোঁয়া দক্ষিণ আফ্রিকান ইনগ্রাম ফেরেন ইনিংসের শেষ ওভারে। তার ব্যাট থেকে আসে ৮৯ রান। ৬৩ বলের ইনিংসে ৯ চার ও ৩ ছক্কা মারেন তিনি। এনামুল ৪ চার ও ৩ ছয়ে ৩৩ বলে করেন ৪৬ রান। দুজনকেই সাজঘরে পাঠান বাঁহাতি পেসার মোস্তাফিজ।

জবাব দিতে নেমে দলীয় ২২ রানের মধ্যে বড় দুই ব্যাটারকে হারিয়ে ধাক্কা খায় কুমিল্লা। লিটন দাস আউট হন ৪ বলে ৭ রানে। ফাফ ডু প্লেসি মাঠ ছাড়েন ৫ বলে ২ করে। এরপর মাহমুদুল ও মঈন আলী ৬৬ বলে ৮২ রানের জুটি গড়ে লড়াইয়ে ফেরান দলকে।

ইংলিশ তারকা মঈনের ব্যাট থেকে ৪ চার ও ২ ছয়ে আসে ৩৫ বলে ৪৬ রান। অধিনায়ক ইমরুল উইকেটে গিয়েই চড়াও হন। তবে টিকতে পারেননি লম্বা সময়। ২ ছক্কায় ৮ বলে ১৬ রানে শেষ হয় এই বাঁহাতির ইনিংস।

ওপেনার মাহমুদুল শুরুতে রানে-বলে তাল রেখে এগোচ্ছিলেন। এক পর্যায়ে, তার সংগ্রহ ছিল ৩১ বলে ৩২ রান। তবে থিতু হওয়ার পর চাহিদা মেটাতে আগ্রাসী হয়ে ওঠেন তিনি। ৪২ বলে ফিফটি ছুঁয়ে কুমিল্লাকে লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে নিতে থাকেন। তখনই বাধ সাধেন বাবু। এই পেস অলরাউন্ডার ১৮তম ওভারে পরপর দুই ডেলিভারিতে ফেরান মাহমুদুল ও আরিফুল হককে।

শেষ ২ ওভারে কুমিল্লার দরকার দাঁড়ায় ২২ রান। পরিস্থিতি বিবেচনায় কঠিন হলেও জ্বলে ওঠেন ক্যারিবিয়ান তারকা নারিন। ১৯তম ওভারে একেএস স্বাধীনকে ২ চার ও ১ ছক্কা পিটিয়ে ১৯ রান আদায় করে নেন তিনি। তাতে জয় চলে আসে তাদের নাগালে। পরের ওভারে চার মেরে খেলা শেষ করে দেন আবু হায়দার রনি।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

সিলেট সানরাইজার্স: ২০ ওভারে ১৬৯/৫ (ইনগ্রাম ৮৯, এনামুল ৪৬, সিমন্স ১৬, বোপারা ১, বাবু ১০, মোসাদ্দেক ১*; আবু হায়দার ০/২৭, নাহিদুল ০/১৭, মোস্তাফিজ ৩/২৩, নারিন ১/৩৪, তানভীর ১/৩৭, মঈন ০/২৭)

কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স: ১৯.৫ ওভারে ১৭৩/৬ (লিটন ৭, মাহমুদুল ৬৫, ডু প্লেসি ২, মঈন ৪৬, ইমরুল ১৬, নারিন ২৪*, আরিফুল ০, আবু হায়দার ৬*; নাজমুল ২/৩৬, স্বাধীন ১/২৯, বাবু ২/২৪, বোপারা ১/৩২, গাজী ০/২১, মুক্তার ০/২২, মোসাদ্দেক ০/৭)

ফল: কুমিল্লা ৪ উইকেটে জয়ী।

Comments

The Daily Star  | English

Govt relieves Kuet VC, Pro-VC of duties to resolve crisis

A search committee will soon be formed to appoint new candidates to the two posts

2h ago