জ্যাকসের ঝড়ে বিপিএলের প্লে-অফে চট্টগ্রাম

ছবি: ফিরোজ আহমেদ

ব্যাটারদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় স্কোরবোর্ডে বড় পুঁজি জমা করল সিলেট সানরাইজার্স। লেন্ডল সিমন্স, অধিনায়ক রবি বোপারা ও মোসাদ্দেক হোসেনের ঝড়ে শেষ ১০ ওভারে তারা তুলল ১০৬ রান। বাঁচা-মরার লড়াইয়ে বিশাল লক্ষ্য তাড়ায় এরপর চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সকে পথ দেখালেন উইল জ্যাকস। এই ইংলিশ ওপেনারের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে বিপিএলের প্লে-অফের টিকেট পেল দলটি।

শনিবার মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে ৪ উইকেটে জিতেছে চট্টগ্রাম। টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেটে ১৮৫ রানের বড় সংগ্রহ গড়ে সিলেট। জবাবে ৫ বল হাতে রেখে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৮৮ রান তুলে জয় নিশ্চিত করে আফিফ হোসেনের নেতৃত্বাধীন চট্টগ্রাম।

ম্যাচসেরা জ্যাকস হাঁকান আসরে তার চতুর্থ হাফসেঞ্চুরি। ৫৭ বলে অপরাজিত ৯১ রান আসে তার ব্যাট থেকে। ৩৫ বলে ফিফটি ছোঁয়ার পর আরও আগ্রাসী হয়ে ওঠেন তিনি। ক্যারিয়ারসেরা ইনিংসে ৮ চার ও ৪ ছক্কা মারেন তিনি। আলাউদ্দিন বাবুর করা শেষ ওভারের প্রথম বলে ছক্কা হাঁকিয়ে ম্যাচ শেষ করে দেন তিনি।

ফরচুন বরিশাল ও কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের পর তৃতীয় দল হিসেবে বিপিএলের প্লে-অফ নিশ্চিত করল চট্টগ্রাম। ১০ ম্যাচে তাদের অর্জন ১০ পয়েন্ট। তারা রয়েছে পয়েন্ট তালিকার তিন নম্বরে। সমান ম্যাচে মাত্র ৩ পয়েন্ট পাওয়া সিলেটের বিদায় নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল অনেক আগে।

সিলেটকে উদ্বোধনী জুটিতে ভালো শুরু এনে দেন কলিন ইনগ্রাম ও এনামুল হক বিজয়। তারা ২৯ বলে যোগ করেন ৪১ রান। জুটি ভাঙে ইনগ্রামের বিদায়ে। মেহেদী হাসান মিরাজের ভেতরে ঢোকা বলে বোল্ড হন তিনি। তার সংগ্রহ ১৯ বলে ২৪ রান। মিজানুর রহমানকে টিকতে দেননি মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরী।

জোড়া আঘাত সামলে তৃতীয় উইকেটে ৩৮ বলে ৫৪ রানের আরেকটি ভালো জুটি গড়েন এনামুল ও সিমন্স। দুজনকে একই ওভারে ফেরান বাঁহাতি পেসার মৃত্যুঞ্জয়। ক্যারিবিয়ান সিমন্স ছিলেন মারমুখী মেজাজে। ৫ চার ও ২ ছয়ে ২৭ বলে ৪২ রানে ক্যাচ দেন তিনি। তিন বল পর এনামুল স্টাম্প হারান কাটারে। তিনি করেন ২৬ বলে ৩২ রান।

পাঁচে নেমে বোপারা চালান তাণ্ডব। খোলস ছাড়তে কিছুটা সময় নেন তিনি। পরে তিনি তোপে দাগেন বেনি হাওয়েল ও শরিফুল ইসলামের ওপর। ইনিংসের শেষ ওভারে ছক্কা-চার হাঁকানোর পর থামে তার ইনিংস। মাত্র ২১ বলে ২ চার ও ৪ ছক্কায় তিনি করেন ৪৪ রান।

কম যাননি মোসাদ্দেকও। ২২ বলে ৩৫ রানে অপরাজিত থাকেন তিনি। বোপারার সঙ্গে তার জুটিতে আসে ৪১ বলে ৮০ রান। তাতে ফুলে ফেঁপে ওঠে সিলেটের ইনিংস। চট্টগ্রামের হয়ে ৪ ওভারে ৩৭ রানে ৩ উইকেট নেন ছন্দে থাকা মৃত্যুঞ্জয়। খরুচে শরিফুল দেন ৪১ রান, হাওয়েল ৪২ রান।

জ্যাকস ব্যাটে চট্টগ্রামের শুরুটাও হয় জুতসই। এই ডানহাতির তাণ্ডবে পাওয়ার প্লেতে ৬০ রান তুলে ফেলে দলটি। এর মধ্যেই জাকির হাসান ও আফিফ সাজঘরে ফিরে যান। তবে চট্টগ্রামের রান চাকাকে শ্লথ করতে পারেনি সিলেট।

তৃতীয় উইকেটে যোগ্য সঙ্গী পেয়ে যান জ্যাকস। চ্যডউইক ওয়ালটনও ক্রিজে নেমেই হাত খুলে খেলতে থাকেন। দুজনের ৪১ বলে ৬৯ রানের জুটি ভাঙে দুর্ভাগ্যজনকভাবে। লেগ স্পিনার জুবায়ের হোসেন লিখনকে টানা ২টি ছক্কা মারার পর রান আউট হন ওয়ালটন। দুর্দান্ত থ্রোতে স্টাম্প ভেঙে দেন বোপারা।

২৩ বলে ৩৫ করা ওয়ালটনের পর থিতু হতে পারেননি হাওয়েল। ছয়ে নেমে দারুণ এক ক্যামিও খেলেন শামীম হোসেন পাটোয়ারি। মাত্র ৭ বলে ৩ চার ও ১ ছক্কায় ২১ রান করে লক্ষ্য একেবারে নাগালে নিয়ে আসেন তিনি। মেহেদী হাসান মিরাজ দ্রুত ফিরলেও বাকিটা অনায়াসে সারেন জ্যাকস।

সিলেটের হয়ে ২টি করে উইকেট নেন সোহাগ গাজী ও বাবু। ভীষণ খরুচে ছিলেন জুবায়ের ও একেএস স্বাধীন। জুবায়ের ৩ ওভারে দেন ৩৫ রান। পেসার স্বাধীনের ২ ওভারে আসে ৩০ রান। ষষ্ঠ ওভারে জ্যাকসের কাছে বেদম মার খাওয়ার পর তাকে আর আক্রমণে আনেননি বোপারা। ওই ওভারে এসেছিল ২১ রান।

Comments

The Daily Star  | English

Exporters fear losses as India slaps new restrictions

Bangladesh’s exporters fear losses as India has barred the import of several products—including some jute items—through land ports, threatening crucial trade flows and millions of dollars in earnings.

4h ago