রানার দারুণ বোলিংয়ে ফাইনালে সাকিবের বরিশাল

mehedi hasan rana
ফরচুন বরিশালের জয়ে দারুণ অবদান মেহেদী হাসান রানার। ছবি: ফিরোজ আহমেদ

মুনিম শাহরিয়ারের ঝড়ো শুরুর পর পথ হারিয়ে মাঝারি পুঁজি গড়েছিল ফরচুন বরিশাল। তবে রান তাড়ায় মন্থর শুরুর পর কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সে শেষ দিকে খেলা করে দেয় কঠিন। পরে মেহেদী হাসান রানার দারুণ বোলিংয়ে পেরে উঠেনি ইমরুল কায়েসের দল।

কুমিল্লাকে ১১ রানে হারিয়ে ৮ম বিপিএলের ফাইনালে উঠেছে সাকিব আল হাসানের দল।  মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়াম সোমবার প্রথম কোয়ালিফায়ার ছিল কম রানের। আগে ব্যাট করে কেবল ১৪৩ রান করেছিল বরিশাল। ওই রান তাড়ায় এক পর্যায়ে বিনা উইকেটে ৫৯ থেকেও আর ম্যাচ বের করতে পারেনি তারা। পুরো ২০ ওভার খেলে ৭ উইকেটে করেছে ১৩৩ রান।

শেষ দুই ওভারে খেলা জেতার জন্য দরকার ছিল ২২ রান। রানার সামনে তখন ফাফ দু প্লেসি আর সুনিল নারাইনের মতো দুই ব্যাটসম্যান। নারাইনের ক্যাচ ফসকে গেলেও ওই ওভারে তিনি ফেরান দু প্লেসিকে। শেষ তিন বল থেকে দেন মাত্র ৩ রান। তখনই ম্যাচ হেলে যায় বরিশালের দিকে। শেষ ৬ বলে ১৮ রানের সমীকরণ আর মেলানো হয়নি তাদের।

এর আগে ১৭তম ওভারেও কেবল ৩ রান দিয়েছিলেন তিনি। ৩ ওভারের স্পেলে ১৫ রান দিয়ে রানা শিকার করেন ২ উইকেট।

রান তাড়ায় অতি সতর্ক শুরু আনেন লিটন দাস ও মাহমুদুল হাসান জয়। লক্ষ্যটা বড় না হওয়ায় তাদের রান তোলার গতি ছিল মন্থর। তবে সেটাই হয়েছে কাল।  লিটন অবশ্য চেষ্টা করে রান আনতে গিয়ে ক্যাচও উঠিয়েছিলেন । ১৫ রানে তার ক্যাচ ছেড়ে দেন মুনিম।

জয় খোলস থেকে আর বেরুতেই পারেননি। পাওয়ার প্লেতে আসে ৩৮ রান। ১০ ওভার শেষে কুমিল্লার রান ছিল বিনা উইকেটে ৫৯। তখনই বেড়ে যায় চাপ। অনেকগুলো ডট বল খেলে পরে তা পুষিয়ে দেওয়া হয়নি এদিনই ওয়ানডে দলে ডাক পাওয়া জয়। ৩০ বলে কেবল ২০ রান করে মেহেদী হাসান রানার বলে বোল্ড হন তিনি।

তিনে নেমে ব্যর্থ ইমরুল কায়েস। শফিকুল ইসলামের বলে মাত্র ৫ রান করে থার্ড দেন সহজ ক্যাচ। থিতু হওয়া লিটন ফেরেন আলত শটে। শফিকুলের বলে থার্ড ফেলে রান বের করতে গিয়ে প্লেইড হন হয়ে স্টাম্প ভেঙ্গে যায় তার। কুমিল্লার ওপেনার ফেরেন ৩৫ বলে ৩৮ করে।

৪৯ বলে ৭৬ রানের সমীকরণে মঈন আলি তুলেছিলেন ঝড়। তবে ১৫ বলে তিন ছয়ে ২২ রান করে ফিরলে খেলা ঘুরে যায়। ফাফ দু প্লেসিও শেষ করতে পারেননি। গুরুত্বপূর্ণ সময়ে তাকে ফেরান রানা। খেলা হয়ে যায় কঠিন।

এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে প্রথম ওভারেই দুই ছক্কা, এক চারে শুরু মুনিমের। প্রথম কয়েকটি বল জড়সড়ো থাকলেও ক্রিস গেইলও ডানা মেলছিলেন। পাওয়ার প্লের প্রথম ৬ ওভারেই চলে আসে ৫৭ রান। গেইল অবশ্য টিকতে পারেননি বেশি। ১৯ বলে ২২ করে শহিদুল ইসলামের বলে ক্যাচ উঠিয়ে ফেরেন।

মুনিম ছিলেন সাবলীল। মাঝে কিছুটা সময় নীরব থাকার পর আবার তার ব্যাট হয় উত্তাল। তবে ফিফটির ঠিক আগে পা হড়কান তিনি। তানভীর ইসলামের বলে স্লগ সুইপের চেষ্টায় এলবিডব্লিউতে বিদায় ৩০ বলে ৪৪ করা মুনিমের।

এরপরই ছন্দ হারায় বরিশাল। অধিনায়ক সাকিব আল হাসান চারে নেমে বিস্ময়করভাবে রানআউটে আত্মাহুতি দেন। তানভীরের বল ঠেলে দিয়েছিলেন, কিন্তু মিড অনে ফিল্ডারের হাতে বল রেখেও ছুটেন রানের জন্য। নন স্ট্রাইকিং প্রান্তে নাজমুল হোসেন শান্ত কোন সাড়া না দিলেও সাকিব আরেক প্রান্তে চলে গিয়ে ফেরেন মাত্র ১ রানে।

পরের ওভারেই মঈন আলির বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে থামেন শান্ত। ১ উইকেটে ৮৪ থেকে ৪ উইকেটে ৮৮ পরিণত হয় বরিশাল। চরম বিপদের পরিস্থিতি থেকে প্রতিরোধ আসেনি তৌহিদ হৃদয়ের ব্যাটেও।

জিয়াউর রহমান ১ ছক্কায় ১৭ করে থামান তার দৌড়। ডোয়াইন ব্রাভো, নুরুল হাসান সোহান টিকে থাকলেও দ্রুত রান আনতে পারেননি। তবে ওই রানই তাদের বোলাররা আরও একবার দেখালেন ঝলক।

সংক্ষিপ্ত স্কোর

ফরচুন বরিশাল:  ২০ ওভারে ১৪৩/৮  (মুনিম ৪৪ ,গেইল ২২, শান্ত ১১, সাকিব ১, জিয়া ১৭, হৃদয় ১, ব্রাভো ১৭ , সোহান ১১, মুজিব ৬*, রানা ০*   ; নাহিদুল ০/১৬ , মোস্তাফিজ ০/২৮ , নারাইন ১/১৬, তানভীর ১/৩৩, মঈন ২/২৩, শহিদুল ৩/২৫ )

কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স: ২০ ওভারে ১৩৩/৭  (লিটন ৩৮, জয় ২০, ইমরুল ৫, ফাফ ২১, মঈন ২২, নারাইন  ১৭ , অঙ্কন ১, নাহিদুল ১*, শহিদুল ০* ; মুজিব ২/৩৩ , শফিকুল ২/১৬  , সাকিব  ০/২৭ , ব্রাভো ১/২৬, রানা , শান্ত ০/১৩ )

ফল: ফরচুন বরিশাল ১১ রানে জয়ী।

Comments

The Daily Star  | English

Why Dhaka has become unliveable

To survive Dhaka, you need a strategy. Start by embracing the absurd: treat every crisis as a plot twist.

11h ago