পটুয়াখালী

৫ কিলোমিটার সরকারি খালে ১৫ বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ

পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলায় ৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের সরকারি প্রায় আড়াই কিলোমিটারই দখল হয়ে গেছে। দখলদাররা খালটির ১৫টি স্থানে বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ করছে। এতে খালের স্বাভাবিক পানি প্রবাহ বন্ধ হয়ে গেছে। খালের পানি সেচের কাজে ব্যবহার করতে না পেরে তরমুজসহ রবি ফসল চাষাবাদ ব্যাহত হচ্ছে। ক্ষতির মুখে পড়েছেন খালের ২ পাড়ের অন্তত ১০ হাজার কৃষক।
‘ভাঙা খালে’ বাঁধ দিয়ে চলছে মাছ চাষ। ছবি: সোহরাব হোসেন/স্টার

পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলায় ৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের সরকারি প্রায় আড়াই কিলোমিটারই দখল হয়ে গেছে। দখলদাররা খালটির ১৫টি স্থানে বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ করছে। এতে খালের স্বাভাবিক পানি প্রবাহ বন্ধ হয়ে গেছে। খালের পানি সেচের কাজে ব্যবহার করতে না পেরে তরমুজসহ রবি ফসল চাষাবাদ ব্যাহত হচ্ছে। ক্ষতির মুখে পড়েছেন খালের ২ পাড়ের অন্তত ১০ হাজার কৃষক।

উপজেলার ছোটবাইশদিয়া ইউনিয়নের কোড়ালিয়া গ্রামের মধ্য দিয়ে এই 'ভাঙা খাল' প্রবাহিত হয়েছে।

সোমবার ওই এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, দাড়ছিড়া নদীর পাড় থেকে পূর্ব দিকে আড়াই কিলোমিটার অংশ বাঁধ দেওয়ায় খালটি ১৫টি পুকুরে পরিণত হয়েছে। খালে বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ করায় জমিতে সেচের পানির সংকট দেখা দিয়েছে।

স্থানীয় কৃষক আবুল গাজী দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, তিনি ২ একর জমিতে তরমুজ চাষ করেছেন। এখন মিঠা পানির সেচ দেওয়া প্রয়োজন। কিন্তু সরকারি খালে বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ করায়, পানি পাওয়া যাচ্ছে না। এতে তরমুজের ফলন ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

খাল পাড়ের বাসিন্দা আরেক কৃষক দুদা কাজী জানান, প্রভাবশালীরা খাল দখল করায় তারা কয়েক বছর ধরে ঠিকভাবে তরমুজ আবাদ করতে পারছেন না। এ ছাড়া বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতার কারণে তাদের বীজতলা নষ্ট হচ্ছে।

যোগাযোগ করা হলে উপজেলার উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মামুন হোসেন দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, ভাঙা খালের ২ পাড়ে অন্তত ২৫০ হেক্টর কৃষি জমি আছে। এর মধ্যে ৩৫ হেক্টর জমিতে তরমুজ চাষ হয়।

মিঠা পানির সংকটে তরমুজের আবাদ কম হচ্ছে বলে জানান তিনি।

জানতে চাইলে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, 'গত বছর উপজেলায় ৭ হাজার ৬৩০ হেক্টর জমিতে তরমুজের আবাদ হয়েছিল। এতে উৎপাদন খরচ হয় ১১৪ কোটি ৩৫ লাখ টাকা। তরমুজ উৎপাদন হয়েছিল ২ লাখ ৬৭ হাজার ৫০ টন। বিক্রি হয়েছিল ৩২০ কোটি ৪৬ লাখ টাকা।'

কৃষকদের স্বার্থ বিবেচনায় খালটির অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি। 

খালটির ৩টি স্থানে বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ করছেন রাকিব হাওলাদার। খাল দখলের বিষয়ে তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বাড়িতে যাতায়াতের রাস্তার জন্য বাঁধ দেওয়া হয়েছিল। পরে সেখানে মাছ চাষ শুরু করা হয়।'

তবে কৃষকের সেচের প্রয়োজনীয় পানি সরবরাহে কেউ বাধা দিচ্ছে না বলে জানান তিনি।

আরেক দখলদার মো. রিয়াজ দফাদার তার বাড়ির সামনে বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ করছেন। তিনি ডেইলি স্টারকে বলেন, 'খালে অনেকেই বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ করছে। আমিও করছি।'

যোগাযোগ করা হলে রাঙ্গাবালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মাশফাকুর রহমান ডেইলি স্টারকে বলেন, 'কোনোভাবেই সরকারি খালে বাঁধ দিয়ে পানির স্বাভাবিক প্রবাহ বন্ধ করা যাবে না। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'

Comments

The Daily Star  | English

Khaleda returns home after 6 days in hospital

Thousands of party activists, along with senior BNP leaders, are escorting Khaleda's convoy back to her Gulshan residence

24m ago