মাস্ক থাকলেও কাজ করবে আইফোনের ফেস রিকগনিশন ফিচার

ছবি: সংগৃহীত

করোনাভাইরাস মহামারির কারণে অ্যাপলের আইফোন ব্যবহারকারীরা ফেস রিকগনিশন ফিচারের মাধ্যমে ফোন আনলক করার সুবিধা থেকে বঞ্চিত আছেন। মাস্ক পরা অবস্থায় এতদিন এ ফিচারটি কাজ করছিল না। তবে অ্যাপলের সর্বশেষ সফটওয়্যার আপডেটে মহামারির কারণে তৈরি হওয়া এ ঝামেলা থেকে মুক্তি পেতে পারেন ব্যবহারকারীরা।

অ্যাপলের অপারেটিং সিস্টেম আইওএসের বহুল আলোচিত ১৫ দশমিক ৪ আপডেটে 'ফেস আইডি' ফিচারের উন্নয়ন করা হবে। যার ফলে ব্যবহারকারীরা মাস্ক না খুলেও তাদের ফোন আনলক করতে পারবেন। প্রযুক্তিগত দিক দিয়ে একে একটি বড় সাফল্য বলা যায়, কারণ মাস্কবিহীন মুখ স্ক্যান করে গ্রাহকের পরিচয় সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যতটা সহজ, একজন মাস্ক পরা মানুষের ঢেকে রাখা মুখমণ্ডল দেখে একই কাজ করা অনেকাংশেই কঠিন হবার কথা। নতুন ফিচারটি এখনো বেটা পর্যায়ে আছে। এটি আগামী কয়েক সপ্তাহ বা মাসের মধ্যে আইফোন-১২ ও তার পরবর্তী ডিভাইসগুলোর জন্য চালু করা হতে পারে।

সিএনএন-এর এক প্রতিবেদনে এই আপডেটের একটি প্রারম্ভিক সংস্করণ ব্যবহারের অভিজ্ঞতার কথা বলা হয়েছে। বিভিন্ন নকশাযুক্ত মাস্ক, কালো রঙের কে-৯৫ মাস্ক ও অন্যান্য বাহারি মাস্ক পরে এ ফিচারটি পরীক্ষা করা হয়। অনেক ক্ষেত্রে ফেস আইডি প্রথম চেষ্টাতেই সফল হয়। তবে এর কার্যকারিতায় ধারাবাহিকতার অভাব রয়েছে বলে প্রতিবেদনে জানানো হয়। মাস্ক পরে ফেস আইডি ব্যবহারের প্রথম প্রচেষ্টা ব্যর্থ হলে গ্রাহককে মাস্ক খুলে চেষ্টা করতে না বলে আইফোন গ্রাহকের কাছে পাসওয়ার্ড চেয়েছে বলে জানান ব্যবহারকারীরা।

দুই-একবার সানগ্লাস ও টুপি পরে ফোন আনলক করতে সমর্থ হলেও, এ ফিচারে ধারাবাহিকতার অভাব দেখতে পান বেটা ভার্সনের ব্যবহারকারীরা। এ বিষয়ে অ্যাপলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, চশমা পরিহিত অবস্থায় যাতে এ ফিচারটি কাজ করে, সেটি তারা নিশ্চিত করছেন। তবে সানগ্লাসের ক্ষেত্রে এটি শুধুমাত্র বিশেষ পরিস্থিতিতে কাজ করবে। অর্থাৎ, সানগ্লাসের উপস্থিতিকে অবজ্ঞা করে বাকি মুখমণ্ডল থেকে পরিচয় নিশ্চিত করার মত যথেষ্ট তথ্য পেলেই কেবল আনলক হবে ফোন। অন্যভাবে বলা যায়, মাস্ক আর সানগ্লাস একসঙ্গে পড়ে ফেস আইডি ব্যবহার করতে যাওয়া খুব একটা বুদ্ধিমানের কাজ হবে না।

অ্যাপলের নতুন ফিচারটি একই সঙ্গে একটি প্রযুক্তিগত সাফল্য ও চ্যালেঞ্জ প্রকাশ করেছে। ফিচারের ধারাবাহিকতার অভাবে এটি স্পষ্ট হয়েছে যে, মাস্ক পরে থাকা অবস্থায় ফেস রিকগনিশন ফিচারের উপযোগিতা প্রশ্নবিদ্ধ এবং এটি শুধু অ্যাপলকেই নয়, আরও অনেক ফোন নির্মাতাকেই একই রকম চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলবে। উল্লেখ্য, বেশিরভাগ আধুনিক স্মার্টফোনেই এ ফিচার রয়েছে।

ফেশিয়াল রিকগনিশন সফটওয়্যারগুলো সাধারণত আগে তুলে রাখা ছবির সঙ্গে এক বা একাধিক ছবির তুলনা করার মাধ্যমে কাজ করে। অ্যাপলের ফেস আইডি ফিচার ব্যবহার করার সময় ফোনটি গ্রাহকের একটি ছবি তুলে নেয়। সে ছবির সঙ্গে ফোনে আগে সেভ করে রাখা একটি ছবির তুলনা করে ফোন আনলকের চেষ্টা চালায় অ্যাপল। এ ক্ষেত্রে মাস্ক পরিণত হয় বাড়তি প্রতিবন্ধকতায়। ফলে অ্যাপল ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানগুলো চেহারার দৃশ্যমান অংশ, অর্থাৎ নাকের ওপরের অংশটুকু এবং বিশেষ করে, চোখের ওপর বিশেষ নজর দিতে বাধ্য হচ্ছে।

অ্যাপল জানিয়েছে, যেহেতু মাস্ক পরা অবস্থায় বায়োমেট্রিক তথ্যের পরিমাণ কমে যায়, অনেক গ্রাহকের ক্ষেত্রে এ ফিচার অত দ্রুত কাজ নাও করতে পারে এবং তাদের কাছে পাসকোড চাওয়া হতে পারে।

অ্যাপলের এ ফিচারটি এখনো বেটা পর্যায়ে আছে এবং এর মানোন্নয়নের জন্য তারা বেটা টেস্টারদের কাছ থেকে তথ্য ও মতামত সংগ্রহ করছে। ফলে এখনই এ বিষয়ে কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছানো সম্ভব হচ্ছে না।

অ্যাপল মাস্ক পরিহিতদের আইফোন আনলক করার জন্য বিভিন্ন বিকল্প ব্যবস্থা নিয়েও কাজ করেছে এর আগে। গত বছর তারা এর একটি আংশিক সমাধান দেয়। যাতে অ্যাপল ওয়াচ ব্যবহার করে আইফোন আনলক করার সুবিধা দেওয়া হয়।

তবে এ ক্ষেত্রেও বেশ কিছু সীমাবদ্ধতা আছে। এই প্রক্রিয়ায় ২টি ডিভাইসকে কাছাকাছি রাখতে হয়। এক হাতে মোবাইল আর আরেক হাতে ঘড়ি থাকলে ২ হাত একদম কাছে নিয়ে আসতে হয়। আর অ্যাপল পে, অ্যাপ স্টোর বা আইটিউনসে কিছু কেনাকাটা করতে গেলে পাসকোড দেওয়ার বাধ্যবাধকতা আছে।

সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে, এ সমাধানের ফায়দা পেতে হলে আইফোনের পাশাপাশি অ্যাপল ওয়াচও কিনতে হয় গ্রাহককে।

Comments

The Daily Star  | English

CA’s special aide questions IMF, World Bank role in 15 years of graft

Global lenders extended loans without questioning the environment before the July revolution, he says

1h ago