বিডিআর বিদ্রোহের ১৩ বছর: দীর্ঘসূত্রতার আবর্তে বিচারিক প্রক্রিয়া

বিডিআর বিদ্রোহের ১৩ বছর পেরিয়ে গেলেও দীর্ঘ আইনি প্রক্রিয়া ও কোভিড-১৯ মহামারির কারণে নিহতদের পরিবার এবং হত্যা মামলার আসামিরা এখনো বিচারের অপেক্ষায় আছেন।
সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে এখনো ৬৯টি আপিল বিচারাধীন থাকায় তাদের অপেক্ষা কবে শেষ হবে তা এখন পর্যন্ত অনিশ্চিত।
এর পাশাপাশি একই ঘটনায় বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে দায়ের করা আরেকটি মামলায় সাক্ষীদের জবানবন্দি রেকর্ড করা শেষ করতে পারেননি বিচারিক আদালত।
তাই হত্যা মামলার অনেক আসামি কারাদণ্ডের সাজা ভোগ করা সত্ত্বেও জেল থেকে বের হতে পারছেন না। কারণ, তারা এখন বিচারাধীন দ্বিতীয় মামলায় অভিযুক্ত।
২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি তৎকালীন বাংলাদেশ রাইফেলসের (বিডিআর) পিলখানা সদর দপ্তরে সংঘটিত ওই বিদ্রোহে ৫৭ সেনা কর্মকর্তাসহ মোট ৭৪ জন নিহত হন।
ওই বিদ্রোহের বর্বরতা গোটা জাতিকে হতবিহ্বল করে দেয়। পরে বিডিআরের নাম পরিবর্তন করে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) রাখা হয়।
এই গণহত্যা মামলায় মোট ৮২৯ জনকে আসামি করা হয়, যাদের বেশিরভাগই বিডিআর সদস্য।
২০১৩ সালের ৫ নভেম্বর ঢাকার একটি আদালত এই গণহত্যায় জড়িত থাকার দায়ে ১৫০ জন বিডিআর সদস্য ও ২ জন বেসামরিক নাগরিককে মৃত্যুদণ্ড দেয়। এতে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয় আরও ১৬০ জনকে। রায়ে মোট ২৫৬ জনকে সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়, যাদের বেশিরভাগ বিডিআর সদস্য।
আদালত অন্য ২৭৮ জন আসামিকে বেকসুর খালাস দিলেও পরে প্রসিকিউশন ৬৯ জনের খালাসের বিরুদ্ধে আপিল করে।
২০১৫ সালের জানুয়ারিতে হাইকোর্ট আসামিদের আপিল শুনানি শুরু করে এবং ২০১৭ সালের ২৭ নভেম্বর এক রায়ে ১৩৯ জনের মৃত্যুদণ্ড নিশ্চিত করে। এছাড়া ১৮৫ জনের যাবজ্জীবন ও ২৫৬ জনের ৩ থেকে ১০ বছরের কারাদণ্ড বহাল রাখা হয়।
এ ছাড়া আদালত ২০৯ জন আসামিকে খালাস দেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের ফাঁসি এখন নির্ভর করছে আপিল বিভাগের শুনানি ও তার রায়ের ওপর।
গত শুক্রবার অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন বলেন, বিডিআর বিদ্রোহ মামলা একটি গুরুত্বপূর্ণ মামলা। হাইকোর্টের দেওয়া রায়কে চ্যালেঞ্জ করে রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামিপক্ষ আপিল বিভাগে আপিল করেছে। মামলার সিরিয়াল অনুসারে আপিলের শুনানি কখন শুরু হবে, তা সর্বোচ্চ আদালত সিদ্ধান্ত নেবেন।
এছাড়া আপিল শুনানি শেষ করতে কত সময় লাগবে ও কবে নাগাদ রায় কার্যকর হবে, তা তিনি বলতে পারছেন না বলে মন্তব্য করেন।
সংক্ষেপিত: ইংরেজিতে পুরো প্রতিবেদনটি পড়তে ক্লিক করুন 13 Years of BDR mutiny: Justice tangled up in lengthy procedures
Comments