সাইরেন শুনে আন্ডারগ্রাউন্ডে চলে যাই: ইউক্রেন প্রবাসী বাংলাদেশি রিজভী হাসান

ইউক্রেন প্রবাসী বাংলাদেশি মেডিকেল শিক্ষার্থী রিজভী হাসান। ছবি: সংগৃহীত

রুশ সেনাবাহিনীর আক্রমণের মুখে দক্ষিণ ইউক্রেনের বন্দর নগরী ওডেসায় গতকাল রাত ১১টা থেকে আজ শুক্রবার সকাল ৬টা পর্যন্ত কারফিউ জারি করা হয়। এসময় সবাই নিজ নিজ ঘরে থাকায় পুরো শহরে নেমে আসে এক অপার্থিব নীরবতা।

অন্যদের মতো বাংলাদেশি মেডিকেল শিক্ষার্থী রিজভী হাসান এবং তার ৪ ফ্ল্যাটমেট একটি ১৭ তলা ভবনে অস্থির সময় কাটাচ্ছিলেন। দুশ্চিন্তায় সারারাত ঘুমাতে পারেননি।

আজ স্থানীয় সময় দুপুর ১২টায় রিজভী দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ভোর ৪টার দিকে সারা শহরে সাইরেন বাজানো হয়। এই সংকেতের অর্থ হচ্ছে সবাইকে আন্ডারগ্রাউন্ডে (মাটির নিচে) চলে যেতে হবে।'

তিনি জানান, সবাই তাড়াহুড়ো করে দালানের নিচে আশ্রয়স্থলে চলে যান। সেখানে তারা প্রায় ২ ঘণ্টার মতো অবস্থান করেন।

ওডেসা জাতীয় মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের এমবিবিএস শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী রিজভী বলেন, 'পরিস্থিতি খুবই ভীতিকর ছিল। আমরা সবাই খুব ভয়ে ছিলাম। পরিশেষে আরেকটি নিরাপত্তা সূচক সংকেত এলো, যা থেকে আমরা জানতে পারলাম আপাতত আক্রমণের ভয় নেই। তখন আমরা ঘরে ফিরে গেলাম।'

তিনি জানান, ওডেসায় প্রায় ৫০০ বাংলাদেশি আছেন এবং তাদের অনেকেই পোল্যান্ড সীমান্তের দিকে এগুচ্ছেন। বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য পোল্যান্ডের সীমান্ত উন্মুক্ত করে দেওয়ায় তিনি নিজেও সেখানে যাওয়ার জন্য একটি গাড়ি ভাড়া করার চেষ্টা করছেন।

রিজভী জানান, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম এবং বাংলাদেশ দূতাবাসের পক্ষ থেকে গতকাল তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। তিনি পোল্যান্ডের বাংলাদেশ দূতাবাসের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে সক্রিয় আছেন বলেও জানান।

রিজভী বলেন, 'আমি দূতাবাসের সঙ্গে সারাক্ষণ যোগাযোগ রাখছি। তারা আমাকে পোল্যান্ডের সীমান্তে যাওয়ার ব্যবস্থা করে দেবে বলে জানিয়েছে। চাইলে আমি নিজেও ব্যবস্থা করতে পারি। এখন আমি সবচেয়ে ভালো প্রক্রিয়াটি চিহ্নিত করার চেষ্টা করছি।'

বাংলাদেশের দূতাবাসের নির্দেশনা অনুযায়ী, প্রায় ২ থেকে আড়াই হাজার বাংলাদেশি পোল্যান্ডের সীমান্ত অভিমুখে যাত্রা করছেন।

পোল্যান্ড, জার্মানি ও ইতালিতে অবস্থিত বাংলাদেশের দূতাবাসের কর্মকর্তারা বাংলাদেশিদের প্রয়োজন অনুযায়ী যাত্রা সংশ্লিষ্ট নথি-সেবা দিতে সীমান্ত এলাকায় ছুটে যাচ্ছেন।

পোল্যান্ডে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত সুলতানা লায়লা হোসেন জানান, তারা জরুরি ভিত্তিতে সব বাংলাদেশিদের জন্য থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করবেন। সেখান থেকে তাদেরকে বাংলাদেশে অথবা পরিস্থিতির উন্নতি হলে ইউক্রেনে পাঠানো হবে।

তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, তিনি ইউক্রেনে ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন ফর মাইগ্রেশনের (আইওএম) সঙ্গে যোগাযোগ করছেন, যাতে ভিসার মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার কারণে আটকে থাকা বাংলাদেশিদের আইওএমের মাধ্যমে দেশে ফিরিয়ে আনা যায়।

Comments

The Daily Star  | English
National Consensus Commission Holds Talks with BNP, Jamaat, and NCP

Parties split over ‘pluralism’, nat’l constitutional council

The National Consensus Commission’s talks with major political parties have yielded a broad consensus on key issues such as caretaker government system and a bicameral parliament, but the parties remain divided on some sensitive questions.

11h ago