‘ফ্যামিলি কার্ড’ বিতরণে কঠোর তত্ত্বাবধান প্রয়োজন

স্টার ফাইল ছবি

'ফ্যামিলি কার্ড' বিতরণের মাধ্যমে দেশে ১ কোটি নিম্নআয়ের পরিবারের কাছে সাশ্রয়ী মূল্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য বিক্রির সরকারি সিদ্ধান্তকে আমরা স্বাগত জানাই।

যেমনটি আমরা আগে দেখেছি, কিছু অসাধু গোষ্ঠী টিসিবির পণ্য আবারও উচ্চমূল্যে খোলা বাজারে বিক্রির মতো কাজ করে থাকে। আমরা আশা করি, 'ফ্যামিলি কার্ড' ব্যবস্থায় এ ধরনের দুর্নীতি হবে না। নিম্নআয়ের পরিবার, যাদের সত্যিই এটির প্রয়োজন তারা সুবিধা পাবে।

গত কয়েক মাস ধরে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম লাগামহীনভাবে বেড়ে চলেছে। গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, কিছু নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম রেকর্ড গড়েছে। এই মূল্যবৃদ্ধি নিম্ন ও মধ্যম আয়ের মানুষের জীবনকে অত্যন্ত কঠিন করে তুলছে। তারা ইতোমধ্যেই করোনা মহামারির কারণে সৃষ্ট অর্থনৈতিক মন্দায় ক্ষতিগ্রস্ত।

আমরা 'ফ্যামিলি কার্ড' বিতরণের মাধ্যমে ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) থেকে কম দামে নিম্নবিত্তদের কাছে পণ্য বিক্রির সিদ্ধান্তকে পুরোপুরি সমর্থন করলেও আগের তিক্ত অভিজ্ঞতার কারণে এ নিয়ে সংশয়ও প্রকাশ করছি।

অতীতের অনেক সরকারি ত্রাণ কর্মসূচিকে আমরা দুর্নীতির কবলে পড়তে দেখেছি। 'ফ্যামিলি কার্ড' বিতরণের উদ্দেশ্য দুর্নীতি ঠেকানো। তবে এটি কেবল তখনই সুফল দিতে পারবে যখন 'ফ্যামিলি কার্ড' দেওয়ার জন্য পরিবার নির্বাচন ও বিতরণ প্রক্রিয়াকে দুর্নীতিমুক্ত রাখা হবে। এটি দীর্ঘ প্রক্রিয়া। রাজনৈতিক পক্ষপাতিত্ব এড়াতে এবং সুবিধাভোগী তালিকা তৈরির প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে কঠোর সরকারি তত্ত্বাবধানের প্রয়োজন হবে।

বিশেষজ্ঞরা বারবার রাজনৈতিক নেতাদের এই জাতীয় কর্মসূচিগুলো নিয়ে সতর্ক করেছেন। কারণ এটি প্রায়শই দরিদ্রদের তাদের সুবিধা থেকে বঞ্চিত করেছে। স্থানীয় প্রশাসনের উচিত কার্ড পাওয়ার যোগ্য সুবিধাবঞ্চিত পরিবারগুলো নিয়ে তথ্যভাণ্ডার তৈরি করা।

পূর্ববর্তী ত্রাণ বিতরণের ক্ষেত্রে আমরা প্রায়শই অব্যবস্থাপনা ও অন্যান্য সমস্যার কারণে দীর্ঘ লাইন ও বিশৃঙ্খলা দেখেছি। এই ধরনের সমস্যা এড়াতে সরকারের উচিত আগে থেকেই ব্যবস্থা নেওয়া।

সরকার যদি ব্যবস্থাগুলো সঠিকভাবে নিতে পারে তবে এই কর্মসূচি নিশ্চিতভাবেই দুর্দশাগ্রস্ত মানুষকে সহায়তা করবে। একইসঙ্গে, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে আনতে আরও কঠোর প্রচেষ্টা প্রয়োজন, কারণ এটিই এই সংকটের একমাত্র বাস্তবসম্মত দীর্ঘমেয়াদী সমাধান।

Comments

The Daily Star  | English

Project stalled amid bureaucratic hurdles

The construction of Jagannath University’s long-awaited second campus in Keraniganj has stalled due to bureaucratic delays.

40m ago