এখানে কোনো বিচার নেই, মামলা করলে কী হবে?

প্রীতি ও তার বাবা। ছবি: সংগৃহীত

কলেজ শিক্ষার্থী সামিয়া আফরান প্রীতির আগামী মাসে একটি চাকরি শুরু করার কথা ছিল। যদিও তার এইচএসসি পরীক্ষার আর মাত্র কয়েক মাস বাকি। কিন্তু, বাবা-মায়ের পাশে দাঁড়াতে রাজধানীর একটি শপিং কমপ্লেক্সে কাজ করার সিদ্ধান্ত নেন তিনি।

বাবা জামাল উদ্দিন ২ সন্তানের লেখাপড়ার খরচ যোগাতে হিমশিম খাচ্ছিলেন। প্রীতির ভাই সামি এসএসসি পরীক্ষার্থী। প্রীতি তার মাকে দুশ্চিন্তা করতে নিষেধ করতেন। কারণ শিগগির তিনি পরিবারকে আর্থিকভাবে সহযোগিতা করতে পারবেন।

গত বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানীর শাহজাহানপুরের একটি ব্যস্ত সড়কে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকে লক্ষ্য করে গুলি চালানো হলে এক আততায়ীর গুলিতে প্রীতির মৃত্যু হয়।

পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনাস্থলে গুলিবিদ্ধ হন প্রীতি।

গতকাল সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজের (ঢামেক) মর্গের সামনে মেয়ের মরদেহের জন্য অপেক্ষা করছিলেন প্রীতির বাবা জামাল উদ্দিন।

তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমি কোথায় বিচার চাইব? এখানে কোনো বিচার নেই'।

৫৪ বছর বয়সী এই বাবা বলেন, 'এ দেশে কোনো শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নেই। যদি থাকত তাহলে এ ধরনের গোলাগুলির ঘটনা ঘটত না।'

জামাল উদ্দিন তার পরিবার নিয়ে পশ্চিম শান্তিবাগের একটি ভাড়া বাসায় থাকতেন।

জামাল উদ্দিন মিরপুরের একটি কারখানায় কাজ করেন। একজন মুক্তিযোদ্ধার বংশধর হিসেবে তিনি সরকারি ভাতা পান। যা তার পরিবারকে চলতে সহায়তা করে।

তিনি বলেন, 'গুলিটি প্রীতির পিঠের বাম পাশে আঘাত করে। আমি তার ছবি দেখেছি... কোনো বাবা-মাকে যেন তাদের সন্তানের এমন মৃত্যু দেখতে না হয়।'

মামলা করবেন কিনা জানতে চাইলে জামাল বলেন, 'আমরা গরিব মানুষ। মামলা করলে কী হবে?... আমি এসব ভাবতে পারছি না। আমার মেয়ে তো চলে গেছে'।

প্রীতির মা হোসনে আরা জানান, আগামী ১ এপ্রিল থেকে তার মেয়ের ১৫ হাজার টাকা বেতনে চাকরি শুরুর কথা ছিল।

গত ৪ দিন ধরে প্রীতি খিলগাঁও এলাকায় তার বান্ধবী সুমাইয়ার বাসায় ছিলেন। সেখান থেকে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরছিলেন।

কিন্তু, তার মা তাকে ফোন করে বাসায় ফিরতে নিষেধ করেন। কারণ, তাদের বাসায় একজন অতিথি এসেছিলেন বলে ঘুমানোর জন্য পর্যাপ্ত জায়গা ছিল না।

প্রীতি আবার তার সঙ্গে থাকা বান্ধবী সুমাইয়ার বাড়িতে ফিরে যাচ্ছিলেন। তখন তিনি গুলিবিদ্ধ হন।

Comments

The Daily Star  | English
Nat’l election likely between January 6, 9

EC suspends registration of AL

The decision was taken at a meeting held at the EC secretariat

7h ago