লিবিয়ায় নিখোঁজ বাংলাদেশি সাংবাদিক ও প্রকৌশলী নিরাপত্তা হেফাজতে

সাংবাদিক জাহিদুর রহমান ও প্রকৌশলী সাইফুল ইসলাম (বাঁ দিক থেকে)। ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা থেকে লিবিয়ার রাজধানী ত্রিপলিতে যাওয়ার পর নিখোঁজ বাংলাদেশি সাংবাদিক জাহিদুর রহমান ও প্রকৌশলী সাইফুল ইসলাম নিরাপত্তা হেফাজতে আছেন বলে লিবিয়ান কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। 

তবে কবে নাগাদ তারা মুক্তি পাবেন সে বিষয়ে এখনো কোন তথ্য জানানো হয়নি।

লিবিয়ায় বাংলাদেশ দূতাবাস তাদের মুক্ত করার চেষ্টা করছে বলে জানিয়েছে।

লিবিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল এস এম শামিম উজ জামান সোমবার রাতে দ্য ডেইলি স্টারকে এসব তথ্য জানিয়েছেন।

তিনি বলেন 'আমরা সাংবাদিক জাহিদুর রহমান ও প্রকৌশলী সাইফুল ইসলামের খোঁজ জানার জন্য লিবিয়া কর্তৃপক্ষের সঙ্গে অনবরত যোগাযোগ করছিলাম। সোমবার ঢাকার সময় সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে আমরা জানতে পারি এই ২ জনকে সেফ কাস্টডিতে নেওয়া হয়েছে।'

'আমরা এখনো তাদের সঙ্গে দেখা করতে পারিনি। ইতিবাচক দিক যে তারা এখন সরকারি কর্তৃপক্ষের হেফাজতে আছে। এই প্রথম সরকারি কোনো দপ্তর বিষয়টা নিশ্চিত করলো। আমি বিষয়টি জানার সঙ্গে সঙ্গে ঢাকায় পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বিস্তারিত জানিয়েছি,' বলেন তিনি।

তাদের মুক্ত করার চেষ্টা চলছে বলেও জানান তিনি।

গত ২১ মার্চ লিবিয়ায় যান বেসরকারি টেলিভিশন এনটিভির বিশেষ প্রতিনিধি জাহিদুর রহমান। ২৩ মার্চ থেকে তিনি নিখোঁজ ছিলেন।

জাহিদুরের ছেলে ফারহান আসিফ রহমান সোমবার রাতে দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সন্ধ্যায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমানের মাধ্যমে আমরা জানতে পারি বাবার খোঁজ পাওয়া গেছে। লিবিয়ান সরকারি বাহিনী নাকি বিষয়টি নিশ্চিত করেছে দূতাবাসকে।'

ত্রিপোলিতে সাংবাদিক জাহিদুর রহমান। ছবি: সংগৃহীত

দূতাবাস সূত্র জানায়, বাংলাদেশি সাংবাদিক ও প্রকৌশলী নিখোঁজের বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন লিবিয়ান রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে কথা বলেন। দূতাবাসের কর্মকর্তারা নিখোঁজদের বিষয়ে তথ্য

জানতে লিবিয়ার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ সরকারের নানা দপ্তরে যোগাযোগ করেন।

পরে দূতাবাসকে জানানো হয়, বাংলাদেশি সাংবাদিক ও প্রকৌশলীকে গোয়েন্দা হেফাজতে সেফ কাস্টডিতে রাখা হয়েছে। 

তবে তাদের সঙ্গে থাকা লিবিয়ান গাড়ি চালক মোহাম্মদ খালেদকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। 

পারিবারিক সূত্র জানায়, গত ৩ মার্চ সাংবাদিক জাহিদ টার্কিশ এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইটে পারিবারিক ভিসা নিয়ে লন্ডনে যান। সেখান থেকে আয়ারল্যান্ড, স্কটল্যান্ড ঘুরে ২১ মার্চ তিনি লিবিয়ায় পৌঁছান। 

পরদিন ২২ মার্চ তিনি নিজের ফেসবুকে ত্রিপোলি থেকে একটি স্ট্যাটাস দিয়ে জানান, গৃহযুদ্ধ কবলিত দেশটিতে প্রবেশ ছিল রীতিমতো বেশ চ্যালেঞ্জের। 

এরপর প্রকৌশলী সাইফুল ইসলামকে সঙ্গে নিয়ে ত্রিপোলির বিভিন্ন স্থানে ঘুরে বেড়ান ও ছবি তোলেন। 

এতে লিবিয়ার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সন্দেহ হলে ২৩ মার্চ গাড়িচালক মোহাম্মদ খালেদসহ তাদের ৩ জনকে আটক করা হয়।

জাহিদুর রহমানের সঙ্গে থাকা প্রবাসী প্রকৌশলী সাইফুল ইসলাম টিপুর বাবা দারুল ইসলাম ৩৪ বছর ধরে লিবিয়ায় বাস করছেন এবং সেখানেই ব্যবসা করেন। 

দারুল ইসলাম সোমবার রাতে দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, সাংবাদিক জাহিদুর ও তার ছেলে সাইফুল ইসলাম টিপুকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের হেফাজতে রাখা হয়েছে বলে সোমবার সন্ধ্যায় তারা জানতে পেরেছেন।

দূতাবাস থেকে তাদের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।

সাইফুলের মা সাজেদা খানম ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আপনারা আমার ছেলের জন্য দোয়া করবেন যেন সে দ্রুত আমাদের কাছে ফিরে আসে।'

সাংবাদিক জাহিদুর রহমানের স্ত্রী তাসলিমা রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনিও শিগগির স্বামীকে ফেরত চান। 

শরিফুল হাসান, ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক।
 

Comments

The Daily Star  | English
Strategies we can employ in tariff talks with the US

US tariff announcement opens new window for Bangladesh garment exports

Under the new policy, Bangladesh will face a 20 percent tariff

57m ago