সার্বজনীন পেনশন আইনের খসড়া প্রকাশ, ১২ এপ্রিল পর্যন্ত মতামত দেওয়ার সুযোগ

ফাইল ছবি

সার্বজনীন পেনশন আইনের খসড়া প্রকাশ করা হয়েছে। এতে আগামী ১২ এপ্রিল পর্যন্ত মতামত দেওয়া যাবে বলে জানিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়।

গতকাল মঙ্গলবার রাতে মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, অর্থমন্ত্রীর তত্ত্বাবধানে সরকারি ও বেসরকারি খাতের সমন্বয়ে ১৫ সদস্যের গভর্নিং বোর্ড কর্তৃক সরকারের প্রস্তাবিত সার্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা পরিচালিত হবে।

গভর্নিং বডির সদস্যরা হলেন- গভর্নর, বাংলাদেশ ব্যাংক সচিব, অর্থ বিভাগের সচিব, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের চেয়ারম্যান, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড সচিব, সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সচিব, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সচিব, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ সচিব, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের চেয়ারম্যান, সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন সভাপতি, ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ (এফবিসিসিআই) সভাপতি, বাংলাদেশ এমপ্লয়ার্স ফেডারেশন সভাপতি, বাংলাদেশ উইমেন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ (বিডব্লিউসিসিআই) নির্বাহী চেয়ারম্যান, যিনি এর সদস্য সচিবও হবেন।

খসড়া আইনে যা বলা হয়েছে:

জাতীয় পরিচয়পত্রকে ভিত্তি ধরে সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনার আওতায় ১৮ বছর বা তদূর্ধ্ব বয়স থেকে ৫০ বছর বয়সী সব বাংলাদেশি নাগরিক অংশগ্রহণ করতে পারবে।

বিদেশে কর্মরত বাংলাদেশি কর্মীরা এ কর্মসূচিতে অন্তর্ভুক্ত হতে পারবে।

অন্য কোনো আইনে যাই থাকুক না কেন, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন জারী না হওয়া পর্যন্ত সরকারি ও আধা-সরকারি বা স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠানে কর্মরত কর্মচারীরা সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থার আওতা বহির্ভূত থাকবে।

সরকার কর্তৃক সরকারি গেজেটে বাধ্যতামূলক করে প্রজ্ঞাপন জারি না করা পর্যন্ত, প্রাথমিকভাবে সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থায় অন্তর্ভুক্তি স্বেচ্ছাধীন থাকবে।

সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনায় অন্তর্ভুক্তির পর একজন চাঁদাদাতা ধারাবাহিকভাবে কমপক্ষে ১০ বছর চাঁদা দেওয়া সাপেক্ষে মাসিক পেনশন পাওয়ার যোগ্যতা অর্জন করবে এবং চাঁদাদাতার বয়স ৬০ বছর পূর্তিতে পেনশন তহবিলে পুঞ্জিভূত মুনাফাসহ জমার বিপরীতে পেনশন দেওয়া হবে।

প্রতিটি চাঁদাদাতার জন্য একটি পৃথক ও স্বতন্ত্র পেনশন হিসাব থাকবে, যা এই আইনের অধীনে প্রণীত বিধি পরিচালিত হবে।

চাকরিরত চাঁদাদাতারা চাকরি পরিবর্তন করলেও পূর্ববর্তী হিসাব নতুন কর্মস্থলের বিপরীতে স্থানান্তরিত হবে, নতুনভাবে হিসাব খোলার প্রয়োজন হবে না।

কর্তৃপক্ষ মাসিক সর্বনিম্ন চাঁদার হার নির্ধারণ করবে। মাসিক এবং ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে চাঁদা দিতে পারবে এবং অগ্রীম ও কিস্তিতে জমা দেওয়ার সুযোগ থাকবে।

মাসিক চাঁদা দিতে দেরি হলে, বিলম্ব ফিসহ বকেয়া চাঁদা দেওয়ার মাধ্যমে পেনশন হিসাব সচল রাখা যাবে এবং ওই বিলম্ব ফি চাঁদাদাতার নিজ হিসাবে জমা হবে।

পেনশনারগণ আজীবন অর্থাৎ মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত পেনশন সুবিধা ভোগ করবেন।

পেনশনে থাকাকালীন ৭৫ বছর পূর্ণ হওয়ার পূর্বে মৃত্যুবরণ করলে পেনশনারের নমিনি অবশিষ্ট সময়কালের (মূল পেনশনারের বয়স ৭৫ বছর পর্যন্ত) জন্য মাসিক পেনশন প্রাপ্য হবেন।

কমপক্ষে ১০ বছর চাঁদা দেওয়ার পূর্বে চাঁদাদাতা মারা গেলে জমাকৃত অর্থ মুনাফাসহ তার নমিনিকে ফেরত দেওয়া হবে।

পেনশন তহবিলে জমাকৃত অর্থ কোনো পর্যায়ে এককালীন উত্তোলনের প্রয়োজন হলে, চাঁদাদাতার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে জমাকৃত অর্থের সর্ব্বোচ্চ ৫০ শতাংশ ঋণ হিসাবে উত্তোলন করা যাবে, যাহা ধার্যকৃত ফিসহ পরিশোধ করতে হবে এবং ফিসহ পরিশোধিত অর্থ চাঁদাদাতার নিজ হিসাবেই জমা হবে।

পেনশনের জন্য নির্ধারিত চাঁদা বিনিয়োগ হিসেবে গণ্য করে কর রেয়াতের জন্য বিবেচিত হবে এবং মাসিক পেনশন বাবদ প্রাপ্ত অর্থ আয়কর মুক্ত থাকবে।

সর্বজনীন পেনশন পদ্ধতিতে সরকারি অথবা আধা-সরকারি বা স্বায়ত্বশাসিত অথবা বেসরকারি প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করতে পারবে। এক্ষেত্রে কর্মী ও প্রতিষ্ঠানের চাঁদার অংশ জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নির্ধারিত হবে।

সরকার কর্তৃক সময় সময় প্রজ্ঞাপন জারী হওয়া সাপেক্ষে, নিম্ন আয়সীমার নিচের নাগরিকগণের অথবা দুস্থ চাঁদাদাতার ক্ষেত্রে পেনশন তহবিলে মাসিক চাঁদার একটি অংশ সরকার অনুদান হিসেবে প্রদান করতে পারবে।

মন্ত্রণালয়ের লিংক (https://mof.portal.gov.bd/site/page/dd8f0829-6531-414e-9a4c-a5354f542986)

Comments

The Daily Star  | English

7 colleges to continue operating under UGC until new university formed

Prof AKM Elias, principal of Dhaka College, to be appointed as the administrator

4h ago