চুনোপুঁটিরা আটক, পরিকল্পনাকারী এখনো ধরা-ছোঁয়ার বাইরে: টিপুর স্ত্রী

নিহত জাহিদুল ইসলাম টিপু। ছবি: সংগৃহীত

আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ঢাকার শাহজাহানপুরে আওয়ামী লীগ নেতা জাহিদুল ইসলাম টিপুকে হত্যা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)। টিপু হত্যার অন্যতম পরিকল্পনাকারীসহ ৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব।

তবে টিপুর স্ত্রী ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর ফারহানা ইসলাম ডলি মনে করছেন, এই ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী এখনো আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ধরা-ছোঁয়ার বাইরে। পরিবার নিয়ে তিনি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলেও জানান।

শনিবার সন্ধ্যায় দ্য ডেইলি স্টারকে ফারহানা ইসলাম ডলি বলেন, 'আজকে র‍্যাবের যে সংবাদ সম্মেলন হয়েছে, সেখানে যাদের আটকের কথা বলা হয়েছে, আমি মনে করি, তারা আসলে চুনোপুঁটি। যাদের ধরা হয়েছে তারা সহকারী হিসেবে থাকতে পারে। কিন্তু, তাদের ওপরে আরও অনেকে আছেন, এ ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী আছেন।'

তিনি আরও বলেন, 'টিপু হত্যার পর ঘুরেফিরে আসছে সুমন শিকদার মুসার নাম, যিনি এখন দুবাই আছেন বলা হচ্ছে। আমি মনে করি, তিনিও এখানে চুনোপুঁটি। মুসাও এখানে মূল পরিকল্পনাকারী না। তিনি সহকারী হিসেবে থাকতে পারেন।'

'মতিঝিলে টিপু রাজনীতি ও ব্যবসা নিয়েই ব্যস্ত ছিল। এই এলাকায় আমার স্বামীর জনপ্রিয়তা ছিল। আমি চাই এই ঘটনায় মূল পরিকল্পনাকারীদের খুঁজে বের করে বিচারের আওতায় আনা হোক। আমি আমার পরিবারের নিরাপত্তা চাই,' যোগ করে ডলি।

এ দিকে, মতিঝিল এলাকায় আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মতিঝিল থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম ওরফে টিপু সামনের কমিটিতে মতিঝিল থানার সভাপতি পদে প্রার্থী হতে চেয়েছিলেন। ২০১৯ সাল থেকে তিনি ওই এলাকায় জনসংযোগ বাড়িয়ে দেন, তার জনপ্রিয়তাও বাড়ছিল।

পরিচয় প্রকাশে অনিচ্ছুক যুবলীগের এক নেতা ডেইলি স্টারকে বলেন, 'তার জনপ্রিয়তা ছিল। কিন্তু, কারো সঙ্গে বিরোধ ছিল কিনা তা জানি না। এ ছাড়া আন্ডারওয়ার্ল্ডের কারো সঙ্গেও তার বিরোধ ছিল বলে আমাদের জানা ছিল না। যাদেরকে আটক করা হয়েছে তাদের সঙ্গে টিপুর দ্বন্দ্ব থাকতে পারে। কিন্তু, এই হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী আরও প্রভাবশালী কেউ হতে পারেন বলে আমি মনে করি।'

নাম প্রকাশ না করার শর্তে যুবলীগের অপর এক নেতা ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সুমন শিকদার মুসা তালিকাভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসীর সহযোগী বলে পুলিশ জানিয়েছে। তার বিরুদ্ধে অনেক মামলা আছে। এতো মামলা নিয়ে সে বিদেশ যায় কীভাবে এটাও এখানে একটা বড় প্রশ্ন।'

যুবলীগ ও আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা ডেইলি স্টারকে জানান, যে অস্ত্র দিয়ে টিপুকে হত্যা করা হয়েছে সে অস্ত্র এখনো উদ্ধার হয়নি। সেই অস্ত্র উদ্ধার করা হোক। যাদেরকে আটক করা হয়েছে তারা যে আসলেই এই হত্যায় জড়িত এর বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ দরকার।

গত ২৪ মার্চ রাতে শাহজাহানপুরের আমতলী এলাকায় হেলমেটধারী আততায়ীর গুলিতে নিহত হন টিপু (৫৪)। ওই সময় গাড়ির কাছেই রিকশায় থাকা বদরুন্নেছা সরকারি মহিলা কলেজের শিক্ষার্থী সামিয়া আফনান প্রীতিও গুলিতে নিহত হন। আহত হন টিপুর গাড়ি চালক মুন্না।

র‌্যাবের ভাষ্য, এই হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী হলেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ১০ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওমর ফারুক (৫২)। হত্যাকাণ্ডটি দেশে ঘটলেও তা নিয়ন্ত্রণ করা হয় দুবাই থেকে। এর জন্য যে ১৫ লাখ টাকার চুক্তি হয়, তার বেশিরভাগের যোগান দেন ওমর ফারুক।

ওমর ফারুকসহ আলোচিত এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে আরও ৩ জন র‌্যাবের হাতে আটক হোন। তারা হলেন: আবু সালেহ শিকদার ওরফে শুটার সালেহ (৩৮), নাছির উদ্দিন ওরফে কিলার নাছির (৩৮) ও মোরশেদুল আলম ওরফে কাইল্লা পলাশ (৫১)।

Comments

The Daily Star  | English

Stocks fall on poor performance of large companies

Indexes of the stock market in Bangladesh declined yesterday on rising the day before, largely due to the poor performance of Islami Bank Bangladesh along with the large-cap and blue-chip shares amid sales pressures..Large-cap refers to shares which account for large amounts in market capi

2h ago