বিএনপির হাঁকডাক ও হুমকি-ধামকিতে জনগণের কোনো আগ্রহ নেই: ওবায়দুল কাদের

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

আন্দোলনের নামে বিএনপি যদি আবারও সন্ত্রাসী ও ধ্বংসাত্মক পথ বেছে নেয়, তাহলে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে তাদের বিরুদ্ধে দুর্বার প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

তিনি বলেন, 'ফ্যাসিবাদী বিএনপি এদেশের গণতন্ত্রকামী জনগণের কাছে বারবার প্রত্যাখ্যাত হয়েছে এবং ভয়াবহ পরিণতির সম্মুখীন হয়েছে। শক্তিশালী বিরোধী দল হিসেবে আবির্ভূত হওয়া ও আন্দোলনের নামে বিএনপি যদি আবারও সন্ত্রাসী ও ধ্বংসাত্মক পথ বেছে নেয়, তাহলে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে তাদের বিরুদ্ধে দুর্বার প্রতিরোধ গড়ে তোলার মাধ্যমে সমুচিত জবাব দেওয়া হবে।'

আজ সোমবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ কথা জানান সেতুমন্ত্রী।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বক্তব্যের প্রতি নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাতে তিনি এই বক্তব্য দেন।

অতি অল্প সময়ের মধ্যে বিএনপিকে শক্তিশালী বিরোধী দল হিসেবে আবির্ভাবের ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এ প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, তার এই ঘোষণার মধ্য দিয়ে আবারও বিএনপির শক্তিহীনতা, দুর্বলতা, অক্ষমতা ও দৈন্যতার নির্মম বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। প্রকারান্তরে এই বক্তব্যের মাধ্যমে তিনি স্বীকার করেছেন যে কার্যত বিএনপি একটি শক্তিহীন ও অন্তঃসারশূন্য রাজনৈতিক দল।

তিনি আরও জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শক্তিশালী বিরোধী দলের অনুপস্থিতির নিয়ে যে কথা বলেছেন,  মির্জা ফখরুলের বক্তব্যের মধ্য দিয়ে সেটাই প্রতীয়মান হয়েছে।

'সংসদীয় গণতন্ত্রের রীতি অনুযায়ী বিরোধী দলের শক্তিমত্তা প্রতিষ্ঠার স্থান হলো মহান জাতীয় সংসদ। সে অর্থে বিরোধী দলকে ছায়া সরকার হিসেবেও অভিহিত করা হয়। যে কোনো রাজনৈতিক দলকে শক্তিশালী বিরোধী দল হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করার লক্ষ্যে জাতীয় সংসদে প্রয়োজনীয় সংখ্যক আসন প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে হয়। যদি বিএনপি নেতাদের প্রশ্ন করি, বর্তমান জাতীয় সংসদে তাদের আসন সংখ্যা কত?  আর সেটা দিয়ে তারা কতটুকু শক্তিশালী বিরোধী দল হতে পেরেছে তা জাতির সামনে প্রমাণিত', যোগ করেন ওবায়দুল কাদের।

তিনি বলেন, আগামী নির্বাচন ছাড়া জাতীয় সংসদে শক্তিশালী বিরোধী দল হয়ে ওঠা কোনোভাবেই বিএনপির পক্ষে সম্ভব নয়। তবে কী ধ্বংসাত্মক এবং সন্ত্রাসী কার্যক্রমের মধ্য দিয়ে অগ্নিসন্ত্রাসের মতো ন্যক্কারজনক ও কাপুরুষোচিত শক্তি প্রদর্শনের ইঙ্গিত দিচ্ছে বিএনপি?

ওবায়দুল কাদের আরও জানান, দেশের সচেতন জনগণ মনে করে, বিএনপির এই দুরভিসন্ধিমূলক ঘোষণার নেপথ্যে রাষ্ট্রবিরোধী গভীর কোনো ষড়যন্ত্র রয়েছে। অবশ্য অতীত ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়, বিএনপি নেতাদের 'অতি অল্প সময়ের' কোনো সীমারেখা নেই। তাই বিএনপির হাঁকডাক ও হুমকি-ধামকিতে জনগণের কোনো আগ্রহ নেই।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, মির্জা ফখরুল ইসলামের দ্বিচারিতার কারণ হলো তারা জনকল্যাণে রাজনীতি করেন না। যে কোনো উপায়ে ক্ষমতাকে কুক্ষিগত করা তাদের রাজনীতির একমাত্র লক্ষ্য। নিজেদের স্বৈরতন্ত্র ও ফ্যাসিবাদী আদর্শের নিকৃষ্ট ইতিহাসকে আড়াল করতে এবং জনগণকে বিভ্রান্ত করার জন্যই বিএনপি নেতৃবৃন্দ বারবার এই চিত্তাকর্ষক পরিভাষা ব্যবহার করে। বিএনপি তার দুর্নীতিবাজ ও সন্ত্রাসী নেতৃত্বের স্বার্থ চরিতার্থে জনগণের স্বার্থকে ঢাল হিসেবে সামনে নিয়ে আসে। মূলত বিএনপি অন্তরে ফ্যাসিবাদী আর মুখে গণতন্ত্রী।

তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে দীর্ঘ স্বাধীনতা সংগ্রামের মধ্য দিয়ে বিকশিত মহান মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ ও গণতান্ত্রিক চেতনায় উদ্ভাসিত। তাই দেশে যখনই কোনো ফ্যাসিবাদী শাসন জেঁকে বসতে চেয়েছে তখনই জনগণ গণআন্দোলন গড়ে তুলেছে। আর সেই আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছে গণমানুষের রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ।

ওবায়দুল কাদের বলেন, ফ্যাসিবাদী বিএনপি রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির ভোটারবিহীন প্রহসনের নির্বাচনের মাধ্যমে যখন ক্ষমতা কুক্ষিগত করতে চেয়েছিল তখন আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে জনগণ দুর্বার গণআন্দোলন গড়ে তোলে। একইভাবে স্বৈরাচারী বিএনপি ২০০৬ সালে জোর করে ক্ষমতা দখল করার জন্য যখন নীল নকশার নির্বাচনের আয়োজন করে, তখনও আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে এই চক্রান্তের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায় বাংলার জনগণ।'

Comments

The Daily Star  | English

10-day holiday for Eid-ul-Azha

The decision was made today at a meeting of the advisory council at the Secretariat

32m ago