শিক্ষার্থী-ব্যবসায়ী সংঘর্ষ: সংবাদ সম্মেলনে ১০ দাবি ঢাকা কলেজ শিক্ষার্থীদের

ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিউমার্কেটসহ আশপাশের ব্যবসায়ীদের সংঘর্ষের ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষপাতের অভিয়োগ ও ব্যবসায়ীদের দায়ী করেছেন ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরা।

বুধবার দিনগত রাগ ১১টার দিকে ঢাকা কলেজের শহীদ আ ন ম নজীব উদ্দিন খান খুররম অডিটোরিয়ামে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তারা এসব কথা বলেন।

সাধারণ শিক্ষার্থীদের পক্ষে সংবাদ সম্মেলন কথা বলেন, ঢাকা কলেজের স্নাতকোত্তর শ্রেণির শিক্ষার্থী সুজয় বালা ও মাসুম বিল্লাহ।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, 'গত সোমবার দিনগত রাত আনুমানিক নিউমার্কেট ওয়েলকাম ও ক্যাপিটাল নামের ফাস্টফুডের দোকানের অভ্যন্তরীণ কোন্দলকে কেন্দ্র করে ঢাকা কলেজের ২ শিক্ষার্থীকে গুরুতর আহত করা হয়। এই ঘটনা ক্যাম্পাসে ছড়িয়ে পড়লে স্বাভাবিকভাবে শিক্ষার্থীরা উত্তেজিত হয়ে ঢাকা কলেজের সামনে সড়কে প্রতিবাদ জানান। সেখান থেকে ক্যাম্পাসে ফিরে আসার সময় নিউ মার্কেটের ব্যবসায়ী, কর্মচারী ও হকাররা ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের নামে গুজব ছড়িয়ে একযোগে হামলা চালায়।'

'এরপর ঘটনাস্থলে পুলিশ আসে। এ সময় ডিএমপির রমনা জোনের এডিসি হারুনুর রশিদ ও নিউ মার্কেট থানার ওসি শ ম কায়য়ুম ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ না করে বিতর্কিত ভূমিকায় অবতীর্ণ হন। এ সময় নিউ মার্কেটের ব্যবসায়ী, কর্মচারী ও হকাররা ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায়। ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরা হামলা প্রতিরোধ করতে চেষ্টা করলে পুলিশ বিনা উসকানিতে নির্বিচারে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের ওপর রাবার বুলেট, টিআর শেল নিক্ষেপ ও গুলি বর্ষণ করে। এতে ঢাকা কলেজের শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়। তাদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।'

আরও বলা হয়, 'সোমবার রাত ৩টার দিকে ঢাকা কলেজের সম্মানিত শিক্ষকবৃন্দ সুষ্ঠ তদন্ত ও বিচারের আশ্বাস দিলে শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে ফিরে যায়। পরের দিন মঙ্গলবার সকাল ৯টায় কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থীরা ঘটনার তদন্ত ও বিচার চেয়ে কলেজের প্রধান ফটকের সামনে প্রতিবাদ জানায়। এ সময় নিউ মার্কেটের ব্যবসায়ী, হকার ও কর্মচারীরা বহিরাগত সন্ত্রাসীদের সঙ্গে নিয়ে ফের ঐক্যবদ্ধভাবে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায়। ঘটনা জেনে কলেজের শিক্ষকরা প্রধান ফটকে গেলে তাদেরকেও লাঞ্ছিত ও হামলা করে আহত করা হয়। পরে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরা ক্ষিপ্ত হয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।'

পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে বলা হয়, 'এ ঘটনার পর আবারও পুলিশ সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর নির্বিচারে টিয়ার শেল, রাবার বুলেট ও গুলি চালায়। শিক্ষার্থীরা এ সময় ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে ক্যাম্পাসে অবস্থান নেয়। তারপরও ব্যবসায়ী হকার কর্মচারীদের আগ্রাসন থেকে থাকেনি। তারা কলেজের প্রধান ফটকের সামনে এসে ভেতরে অবস্থান নেওয়া শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায়। পরে বেশ কয়েকবার ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।'

সংবাদ সম্মেলনে তারা ১০ দফা দাবি তুলে ধরেন। তাদের দাবিগুলোর মধ্যে আছে, এই হামলার উসকানিদাতা, ইন্ধনদাতা ও হামলাকারীদের তদন্ত সাপেক্ষে চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা; আহত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসার সব দায়ভার নিউমার্কেট ব্যবসায়ী সমিতি ও আইনশৃঙ্খলাবাহিনীকে নেওয়া; হামলায় নিহত পথচারী নাহিদের পরিবারকে যথাযথ ক্ষতিপূরণ দেওয়া; অ্যাম্বুলেন্সের ওপর হামলাকারীদের ভিডিও ফুটেজ দেখে শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা; দায়িত্বরত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ডিসি, এডিসি ও নিউ মার্কেট থানার ওসিকে প্রত্যাহার এবং পুলিশ প্রশাসনকে কলেজ প্রশাসনের কাছে ক্ষমা চাওয়া; প্রতিটি মার্কেট ও দোকানে সিসিটিভি স্থাপন করা; প্রতিটি মার্কেটে কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জন্য আচরণবিধি প্রণয়ন ও তার সুষ্ঠু বাস্তবায়ন; ফুটপাত দখলমুক্ত, অবৈধ কার পার্কিং উচ্ছেদ ও চাঁদাবাজি বন্ধ করা; ক্রেতা হয়রানি, নারীদের যৌন হয়রানি বন্ধে একটি বিশেষ মনিটরিং সেল গঠন করে ক্রেতাদের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং চন্দ্রিমা সুপার মার্কেট ও নিউ সুপার মাকের্টে ঢাকা কলেজের সম্পদ লিজ বাতিল করে ফিরিয়ে দেওয়া।

 

 

Comments

The Daily Star  | English

US retailers lean on suppliers to absorb tariffs

Rather than absorbing the cost or immediately passing it on to consumers, many US apparel retailers and brands have turned to their suppliers in Bangladesh, demanding they share the pain

5h ago