দ্রুত জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন আইন প্রণয়ন করুন

এটি অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক যে, ২ বছর আগে খসড়া তৈরি হলেও জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন আইন এখনো প্রণীত হয়নি। এই ২ বছরে জাতীয় সংসদে অনেক বিল পাস হলেও এই খসড়া আইনটি এখনো অচল রয়ে গেছে। এর কারণ আমরা সরকারের কাছে জানতে চাই।
ছবি: স্টার

এটি অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক যে, ২ বছর আগে খসড়া তৈরি হলেও জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন আইন এখনো প্রণীত হয়নি। এই ২ বছরে জাতীয় সংসদে অনেক বিল পাস হলেও এই খসড়া আইনটি এখনো অচল রয়ে গেছে। এর কারণ আমরা সরকারের কাছে জানতে চাই।

আমরা সবাই জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনকে আমাদের নদীগুলোকে রক্ষা করতে সক্ষম এমন একটি শক্তিশালী ও স্বাধীন সত্ত্বা হিসেবে গড়ে তুলতে আইন প্রণয়নের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে সচেতন। তবে আপাতদৃষ্টিতে মনে হয়, আমাদের আইনপ্রণেতা ও নদী নিয়ে কাজ করে এমন মন্ত্রণালয়ের কাছ থেকে এটি যতটুকু গুরুত্ব পাওয়ার কথা তা পাচ্ছে না।

নতুন আইন প্রণয়নে আমাদের আইনপ্রণেতাদের উদাসীনতার বিষয়টি সম্প্রতি জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান হাওলাদার তুলে ধরেছেন। তিনি একটি চমকপ্রদ তথ্য দিয়েছেন যে, নদী নিয়ে কাজ করা মন্ত্রণালয়গুলো প্রথমে কমিশনই গঠন করতে চায়নি।

তিনি আরও জানান, নদী নিয়ে আন্দোলনরত কর্মী ও গণমাধ্যমই কমিশন গঠনের পক্ষে জনমত তৈরি করেছিল এবং অবশেষে হাইকোর্টের হস্তক্ষেপে তা গঠিত হয়েছে।

প্রশ্ন হলো, হাইকোর্টের যুগান্তকারী রায়ে যে কমিশনকে নদীর আইনগত অভিভাবক ঘোষণা করা হয়েছে, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলো সেই কমিশনের বিরুদ্ধে কেন?

এর কারণ কি এটাই যে, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সরকারি কর্মকর্তা বা সরকারের ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিরাই প্রকৃত নদী দখলকারী?

আমরা মনে করি, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোকে এ বিষয়ে তাদের অবস্থান স্পষ্ট করতে হবে। ২০১৯ সালে হাইকোর্ট আমাদের নদীগুলোকে রক্ষার জন্য ১৭ দফা নির্দেশনা দিয়েছেন। নদী দখল ও দূষণকে ফৌজদারি অপরাধ ঘোষণা করেছেন এবং দখলকারী ও দূষণকারীদের জন্য কঠোর শাস্তির পরামর্শ দিয়েছেন।

সেই সময়ে আদালত জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনকে ক্ষমতায়ন করতে এবং নদী সংক্রান্ত অপরাধে কারাদণ্ড ও মোটা অঙ্কের জরিমানার কঠোর বিধান অন্তর্ভুক্তির জন্য সরকারকে জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন আইন সংশোধনের নির্দেশ দেন।

আদালতের আদেশের পর জাতীয় নদী সংরক্ষণ কমিশন আইন-২০২০ এর খসড়া প্রস্তুত করা হয়েছে, যেখানে নদী দখল এবং দূষণ মোকাবিলা করার বিধান রাখা হয়।

এই খসড়া আইনটি জাতীয় নদী সংরক্ষণ কমিশন আইন-২০১৩ এর স্থলে প্রণীত হওয়ার কথা। জাতীয় নদী সংরক্ষণ কমিশন আইন-২০১৩ নদী দখল ও দূষণের সঙ্গে জড়িত অপরাধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার ক্ষমতা দেয় না, কেবল সুপারিশ করতে পারে। এ কারণেই আমাদের নতুন আইন প্রয়োজন।

আমরা মনে করি, সরকার যদি আমাদের নদীগুলোকে বাঁচানোর ব্যাপারে সত্যিই আন্তরিক হয়, তাহলে নতুন জাতীয় নদী রক্ষা আইন প্রণয়নের জন্য দ্রুত উদ্যোগ নেওয়া উচিত। আইন পাসের ক্ষেত্রে কোনো ধরনের বিলম্ব আমাদের নদীগুলোর অবস্থা আরও খারাপ করে তুলবে। কেননা একেরপর এক আমাদের সব নদীই প্রতিনিয়ত নিরবচ্ছিন্ন দখল ও দূষণের কারণে ধীরে ধীরে মারা যাচ্ছে।

Comments

The Daily Star  | English

Interest payments surpass Tk 100,000cr for first time

The government’s interest payments against foreign loans surged 24.5 percent in fiscal year 2023-24, exceeding the Tk 100,000 crore mark for the first time in history, thanks to higher borrowing costs for loans from both domestic and foreign sources.

13h ago