স্বাস্থ্যঝুঁকি কমাতে নিম্নস্তরের সিগারেটের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব

বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা আহছানিয়া মিশন ঢাকা ও ইকোনোমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) আয়োজিত এক সেমিনারে স্বাস্থ্যঝুঁকি কমানো ও সরকারের রাজস্ব আয় বাড়াতে নিম্নস্তরের সিগারেটের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব করেছেন বক্তারা।
তারা বলছেন, সিগারেট শিল্পের ৭৫ শতাংশ জায়গা দখল করে থাকলেও গত ২ বছর ধরে নিম্নস্তরের সিগারেটের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। ফলে এই স্তরের ধুমপায়ীর সংখ্যা কমছে না।
আজ শনিবার রাজধানীর পল্টনে ইআরএফ কার্যালয়ে আয়োজিত 'টোব্যাকো প্রাইস এন্ড ট্যাক্স' বিষয়ক সেমিনারে বক্তারা এই প্রস্তাব দেন। ইআরএফ সভাপতি শারমীন রিনভীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক এস এম রাশিদুল ইসলাম, ঢাকা আহছানিয়া মিশনের উপপরিচালক মোখলেছুর রহমান, সিটিএফকে গ্র্যান্ডস ম্যানেজার আব্দুস সালাম মিয়াসহ আরও অনেকে বক্তব্য রাখেন। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন উন্নয়ন সমন্বয়ের পরিচালক (গবেষণা) আবদুল্লাহ নাদভী।
সেমিনারে জাতীয় মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি ও মূল্যস্ফীতিকে বিবেচনায় নিয়ে সিগারেটের দাম বাড়ানোর প্রয়োজন বলে মত দেন বক্তারা। পাশাপাশি তারা আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী ২০৪১ সালের মধ্যে দেশকে তামাকমুক্ত করতে হলে তামাকজাত পণ্যের দাম বাড়ানোর বিকল্প নেই।
উন্নয়ন সমন্বয়ের পরিচালক (গবেষণা) আবদুল্লাহ নাদভী মূল প্রবন্ধে জানান, সিগারেটের বর্তমান শুল্ক কাঠামো বেশ জটিল। এটিকে আরও সহজ করার পরামর্শ দেন তিনি। তিনি প্রতি দশ শলাকার নিম্ন স্তরের সিগারেটের দাম ৩৯ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৫০ টাকা, মধ্য স্তরের সিগারেটের দাম প্রতি প্যাকেট ৬৩ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৭৫ টাকা করার প্রস্তাব করেন।
পাশাপাশি উচ্চস্তরের সিগারেটের প্রতি প্যাকেটের দামও সুনির্দিষ্টভাবে নির্ধারণের প্রস্তাব করেন তিনি।
তিনি বলেন, 'এ প্রস্তাব কার্যকর করা হলে সরকারের রাজস্ব আয় হবে। পাশাপাশি ধুমপায়ী কমবে ১৩ লাখ এবং ৯ লাখ তরুণ ধুমপানে নিরুৎসাহিত হবে।'
ঢাকা আহছানিয়া মিশনের উপ পরিচালক মোখলেছুর রহমান স্বাগত বক্তব্যে বলেন, 'সরকার ২০৪০ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত দেশ গড়ার ঘোষণা করেছে। এই লক্ষ্য অর্জনে সিগারেট ও অন্যান্য তামাকজাত পণ্যে কর বাড়ানোর বিকল্প নেই।'
সিটিএফকে গ্র্যান্ডস্ ম্যানেজার আব্দুস সালাম মিয়া বলেন, 'উন্নত দেশ হওয়ার স্বপ্ন পূরণে তামাক নিয়ন্ত্রণ জরুরি। এতে দারিদ্র বিমোচন যেমন হবে তেমনি তামাকজনিত রোগের পেছনে সরকারের ব্যয় কমে আসবে।'
ইআরএফের সাধারণ সম্পাদক এস এম রাশিদুল ইসলাম বলেন, 'তামাক নিয়ে সরকার উভয় সংকট আছে। সরকার তামাক নিয়ন্ত্রণ করতে চায়, আবার রাজস্বের জন্য তামাক খাতে নির্ভরশীলতা রয়েছে। তবে ধুমপান কমাতে হলে সিগারেটের দাম বিশেষ করে নিম্নস্তরের সিগারেটের দাম বাড়াতে হবে। কেননা ৭৫ শতাংশ সিগারেট ধুমপায়ী নিম্নস্তরের সিগারেট ব্যবহার করে।'
Comments