নৌকায় নারায়ণগঞ্জ থেকে বুড়িগঙ্গা-পদ্মা-যমুনা দিয়ে সিরাজগঞ্জ

ইঞ্জিনচালিত নৌকায় ঝুঁকি নিয়ে বুড়িগঙ্গা, পদ্মা ও যমুনা নদী হয়ে নারায়ণগঞ্জ থেকে সিরাজগঞ্জে যাচ্ছে নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন পোশাক কারখানায় কর্মরত দেশের পশ্চিম ও উত্তরাঞ্চলের মানুষ।
নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন পোশাক কারখানার শ্রমিকেরা ইঞ্জিনচালিত নৌকায় ঝুঁকি নিয়ে নারায়ণগঞ্জ থেকে সিরাজগঞ্জে যাচ্ছেন। ছবি: জাহাঙ্গীর শাহ/ স্টার

ইঞ্জিনচালিত নৌকায় ঝুঁকি নিয়ে বুড়িগঙ্গা, পদ্মা ও যমুনা নদী হয়ে নারায়ণগঞ্জ থেকে সিরাজগঞ্জে যাচ্ছে নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন পোশাক কারখানায় কর্মরত দেশের পশ্চিম ও উত্তরাঞ্চলের মানুষ।

নারায়ণগঞ্জ থেকে ঢাকা হয়ে উত্তরাঞ্চলে যাতায়াতে ভোগান্তি এবং অতিরিক্ত ভাড়ার কারণে তারা এই ঝুঁকির পথ বেছে নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন লালমনিরহাট, দিনাজপুর, সিরাজগঞ্জ ও পাবনা জেলার বাসিন্দারা।

দিনাজপুরের কোতোয়ালি থানার ইসলামাবাদ গ্রামের রিফাত হোসেন বলেন, 'আমি নারায়ণগঞ্জে একটা পোশাক কারাখানায় কাজ করি। আমি, আমার স্ত্রী, বন্ধু-বান্ধবসহ আমার এলাকার ৭ জন সেখানে কাজ করি। নারায়ণগঞ্জ থেকে ঢাকায় এবং তারপর ঢাকা থেকে দিনাজপুরে যেতে বাসের ভাড়া বেশি এবং ভোগান্তিও বেশি। এ কারণে আমরা ৭ জনসহ মোট ১১৯ জন নৌকায় করে নারায়ণগঞ্জ থেকে নদীপথে ঢাকা, মুন্সিগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, পাবনা ও সিরাজগঞ্জ হয়ে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিয়েছি। এখানে নৌকা ভাড়া লাগে ৪০০ টাকা করে। সময় লাগে ১০ থেকে ১২ ঘণ্টা। একটু ঝুঁকি নিয়েও যেতে হচ্ছে। কি করবো। সারা বছর কারখানায় অসহনীয় যন্ত্রণার পর আবার পথে পথে দুর্ভোগের ভয়েই তো এ পথে যাচ্ছি।'

ছবি: জাহাঙ্গীর শাহ/ স্টার

লালমনিরহাট জেলার অদিতমারি উপজেলার সামিউল ইসলাম রিয়াদ বলেন, 'আমি প্যানটেক্স ডেক্স লিমিটিডে নামের একটি পোশাক কারখানায় কাজ করি। আমার ভাই-ভাবী, আপা-দুলাভাই, ৩ জন বন্ধুসহ আমরা ৮ জন যাচ্ছি। ভোর ৪ টায় নারায়ণগঞ্জ থেকে রওয়ানা দিয়েছি। দুপুর ১২টায় মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ফেরি ঘাটে এসে নৌকার ইঞ্জিনের পাখা ভেঙে গেছে। এক ঘণ্টার বেশি সময় হয়ে গেছে এখনও ঠিক হয়নি। আরও যে কতক্ষণ এখানে থাকতে হবে, বলতে পারছি না। ভোগান্তি এড়াতে এই পথে এসেও ভোগান্তিতে পড়েছি।'

নৌকার মাঝি জহুরুল ইসলাম বলেন, 'আমরা নারায়ণগঞ্জেই নৌকা চালাই। ঈদের আগে পোশাক কারখানার কর্মীরা আমাদের নৌকায় নারায়ণগঞ্জ থেকে সিরাজগঞ্জের জামির্তা ঘাটে গিয়ে নেমে যান। ১২০ জন গেলে জনপ্রতি ৪০০ টাকা করে মোট ৪৮ হাজার টাকা পাই। ভোর ৪টায় রওয়ানা দিলে বিকেল ৪টায় পৌঁছাই। একদিনে এই টাকাটাতো আমাদের কাছে অনেক বড় টাকা। তাই ঈদের আগে ও পরে এই পথে আমরা নৌকা চালাই। নদীপথে মুন্সিগঞ্জের মাওয়াঘাটের কাছে তালতরা এলাকায় ঘাটের ইজারাদারকে যাওয়া-আসার পথে ২০০ করে ৪০০ টাকা এবং নারায়ণগঞ্জে ঘাট এলাকার ভাইদের ঈদের আগে ও পরে কয়েকদিনের জন্য নৌকা প্রতি দিতে হয় ১৫ হাজার টাকা করে। এই নৌপথে কয়েকশো নৌকা চলে।'

মানিকগঞ্জের পুলিশ সুপার গোলাম আজাদ খান বলেন, 'এত বড় নদীপথে নৌকায় যাতায়াত অবশ্যই যাত্রীদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। এটা দেখার জন্য আমি নৌপুলিশকে জানিয়েছি।'

এদিকে, নৌপুলিশের ফরিদপুর অঞ্চলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. খোরশেদ আলম বলেন, 'এত বড় নদীপথে নৌকায় যাত্রী যাতায়াতের তথ্য আমাদের জানা নেই। এটা নারায়ণগঞ্জ নৌ-পুলিশের দেখা দরকার।

Comments

The Daily Star  | English

All educational institutions reopen after heatwave-induced closures

After several closures due to the heatwave sweeping the country, all primary and secondary schools, colleges, madrasas, and technical institutions across the country resumed classes today

15m ago