অধিনায়কত্ব থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা মুমিনুলের

mominul haque
সংবাদ সম্মেলনে অধিনায়ক মুমিনুল হক: ফিরোজ আহমেদ

নিজে রানে নাই, দলও পারফর্ম করছে না এই অবস্থায় টেস্ট অধিনায়কত্ব ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মুমিনুল হক। নিজের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনকে জানিয়ে দিয়েছেন তিনি।

মঙ্গলবার বিকেলে বোর্ড সভাপতির গুলশানের বাসায় গিয়ে বৈঠক শেষে গণমাধ্যমকে  এই খবর দেন মুমিনুল। বিসিবি প্রধান তাকে অধিনায়ক থাকতে অনুরোধ করলেও মুমিনুল নিজে তার ব্যাটিংয়ে মন দিতে চান।

বিসিবি প্রধানের বাসা থেকে বেরিয়ে সন্ধ্যায় গণমাধ্যমকে মুমিনুল জানান, দলকে অনুপ্রেরণা দিতে না পেরে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি, 'ওরকম কিছু না, আমি শুধু বলেছি যে অধিনায়ক হিসেবে দলে অবদান রাখতে পারছি না। আমার কাছে মনে হয় এই মুহুর্তে কাউকে দায়িত্ব দেওয়া উচিত। আমিতো বলে আসছি, এখন উনারা কি সিদ্ধান্ত নেয় উনাদের ব্যাপার।' 

'যখন আপনি ভাল খেলবেন দলের জন্য ফল নাও হয় তবু দলকে মোটিভেট করতে পারবেন। আমার কাছে মনে হয়, আমিও ভাল খেলতে পারছি না। দলও ফলাফল করতে পারছে না। এই অবস্থায় অধিনায়কত্ব করা খুব কঠিন। আমার কাছে মনে হয় এই সময় না করাই ভাল (অধিনায়কত্ব)। '

শ্রীলঙ্কা সিরিজ শেষ হওয়ার পর থেকেই অধিনায়কত্ব নিয়ে আলোচনায় ছিলেন মুমিনুল। টানা রান খরায় থাকায় তার নেতৃত্ব হয়ে পড়ে প্রশ্নবিদ্ধ। সোমবার ক্রিকেট অপারেশন্স চেয়ারম্যান জালাল ইউনুস জানান, রান না পাওয়ায় অধিনায়কত্ব মুমিনুলের কাছে চাপ হয়ে গেছে। এই ব্যাপারে তাই মুমিনুলকেই নিতে হবে সিদ্ধান্ত।

মঙ্গলবার বিকেলে দ্য ডেইলি স্টারের সঙ্গে আলাপে বোর্ড সভাপতি জানান, এই মুহূর্তে কোন বদলের পক্ষে নন তারা। মুমিনুলের অধিনায়কত্ব নিয়েও নন উদ্বিগ্ন। তবে মুমিনুলের সঙ্গে আলাপের পর বাকি সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছিলেন তিনি। 

সেই আলাপেই মুমিনুল জানিয়ে দেন নিজের সিদ্ধান্তের কথা,  'আমি অনুভব করি আমার ব্যাটিংয়ে যদি মনোযোগ দিতে পারি তাহলে ভাল। উনারা এখন সিদ্ধান্ত নেবেন।'

নানামুখী আলোচনায় প্রভাবিত হয়ে এমন সিদ্ধান্ত নেননি বলে জানান মুমিনুল। তবে তার কণ্ঠ থেকে ঠিকই বের হয় অভিমানের সুর। চলতি বছরই নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে মাউন্ট মাঙ্গানুইতে তার নেতৃত্বে ঐতিহাসিক জয় পেয়েছিল বাংলাদেশ। সেই স্মৃতি এখন কেবলই পেছনের ঘটনা তার কাছে,  'আসলে কঠিনের কিছু না। পৃথিবীতে সবই এমন হবে। শুধু আমি না অনেক অধিনায়কের  ক্ষেতে হবে। অবদান রাখতে হবে।'

'অতীত হয়ে গেছে (মাউন্ট মাঙ্গানুই)। অতীত কারো কাছে মনে থাকে না। অতীত আর ম্যাটার করে না।'

গত বছরের নভেম্বর থেকে ১৫ ইনিংসে ১২.৫৭ গড়ে মোটে ১৭৬ রান করেছেন মুমিনুল। ১২বার পেরুতে পারেননি এক অঙ্কের গণ্ডি। দলে অবদান রাখতে না পারাই একমাত্র কারণ মুমিনুলের কাছে,  'শুধু আমি না, কেউ যদি অবদান রাখতে না পারে তাহলে চাপ আসবে। এটা স্বাভাবিক ব্যাপার। '

মুমিনুল নিজের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দিলেও তাকে নেতৃত্ব চালিয়ে যেতে অনুরোধ করেন বিসিবি প্রধান,  'উনি বলেছে (অধিনায়কত্ব চালিয়ে যেতে)। কিন্তু  আমি জিনিসটা চাচ্ছি না।'

আগামী দুই তারিখ বোর্ডের সভায় পরবর্তী অধিনায়কের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হবে। অধিনায়কত্ব থেকে সরে যাওয়ার ঘোষণা দিলেও সেটা কোন সিরিজ থেকে কার্যকর হবে তা স্পষ্ট করেননি তিনি। ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজ সামনে রেখে মুমিনুলকে অধিনায়ক করে আগেই স্কোয়াড ঘোষণা করেছিল বিসিবি। 

২০১৯ সালে সাকিব আল হাসান নিষিদ্ধ হলে হুট করেই টেস্ট অধিনায়ক করা হয় মুমিনুলকে। তার অধীনে ১৭টি টেস্ট খেলে বাংলাদেশ জিতেছে ৩টিতে। এরমধ্যে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুটি। অন্য জয়টি দেশের ইতিহাসেই সবচেয়ে বড়। মাউন্ট মাঙ্গানুইতে নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে দিয়েছিল মুমিনুলের দল।

Comments

The Daily Star  | English

Yunus promises election on time

Chief Adviser Prof Muhammad Yunus yesterday reaffirmed his commitment to holding the 13th national election in the first half of February next year.

8h ago