ডুসেন-মিলার ঝড়ে ভারতের পাহাড় ডিঙালো দ.আফ্রিকা

Rassie van der Dussen & David Miller
ডেভিড মিলারের সঙ্গে রাসি ফন ডার ডুসেন। বিশ্বকাপ মিস করছেন তিনি। ফাইল ছবি

ঈশান কিশানের এনে দেওয়া শক্ত ভিতের উপর ঝড় তুলে রিশভ পান্ত, হার্দিক পান্ডিয়ারা ভারতকে নিয়ে গিয়েছিলেন দুশো ছাড়িয়ে। বিশাল সেই রান তাড়ায় নেমে ডোয়াইন প্রিটোরিয়াসের শুরুর তাণ্ডবের পর দারুণ জুটিতে বাকিটা সারলেন রাসি ফন ডার ডুসেন আর ডেভিড মিলার। প্রোটিয়ারা পেল রোমাঞ্চকর জয়।

বৃহস্পতিবার দিল্লিতে পাঁচ ম্যাচ সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে ভারতে ৭ উইকেটে হারিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা। আগে ব্যাট করে ভারতের করা ২১১ রান ৫ বল আগে পেরিয়ে যায় সফরকারীরা।

৪৬ বলে ৭ চার, ৫ ছক্কায় অপরাজিত ৭৫ রান করেন ডুসেন, খুনে ব্যাটিংয়ে ৩১ বলে ৪ বাউন্ডারি, ৫ ছক্কায় মিলার অপরাজিত থাকেন ৬৪ রানে। চতুর্থ উইকেটে জুটিতে এই দুজন ৬৩ বলেই তুলেন ১৩১ রান। টি-টোয়েন্টিতে রান তাড়ায় প্রোটিয়াদের নিজেদের রেকর্ড এটি। এর আগে ২০০৭ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ২০৬ রান তাড়া করে জিতেছিল তারা। 

অথচ এদিন ডেথ ওভারে সফরকারীদের জন্য ম্যাচ হয়ে পড়েছিল কঠিন। শেষ চার ওভারে দরকার ছিল ৫৬ রান। হার্শাল প্যাটেলের ১৭তম ওভার থেকে তিন ছক্কা, এক চারে ২২ রান নিয়ে নেন ডুসেন।  শেষ তিন ওভারে সমীকরণ নেমে আসে ৩৪ রানে। ১৮তম ওভারের প্রথম বলেই ছক্কায় গ্যালারিতে পাঠান মিলার। স্ট্রাইক পেয়ে ডুসেন আরও এক ছক্কা আর দুই চারে ম্যাচ করে দেন সহজ। ১২ বলে ১২ রানের প্রয়োজন নিয়ে আর কোন চিন্তা করতে হয়নি তাদের।

এর আগে রান তাড়ায় নেমে তৃতীয় ওভারে অধিনায়ক টেম্বা বাভুমা ফিরে যাওয়ার পর সুরটা বেধে দেন প্রিটোরিয়াস। নেমেই চার-ছয়ে মেতে উঠেন তিনি। মাত্র ১৩ বলে ৪ ছক্কা, ১ বাউন্ডারিতে ২৯ করে যান এই অলরাউন্ডার। প্রিটোরিয়াসের তাণ্ডবের কারণে শুরুতে থিতু হতে সময় নেওয়ায় চাপ হয়নি কুইন্টেন ডি ককের। 

তবে হার্শালের বলে প্রিটোরিয়াসের বিদায়ের পর থিতু হওয়া ইনিংসটা পূর্ণতা দেওয়া হয়নি ডি ককেরও। আক্সার প্যাটেলের বলে ইতি টানেন তিনি। ম্যাচ তখন কিছুটা যেন ভারতের দিকে। সেই অবস্থা থেকে সব বদলে দেন ডুসেন-মিলার। 

বেশ কয়েকজন প্রথম সারির খেলোয়াড়কে বিশ্রামে দিয়ে এই সিরিজে নামা ভারত বোলিং আক্রমণ নিয়ে হতাশ হতেই পারে। সুযোগটা সেভাবে কাজে লাগাতে পারেননি আবেশ খান, ভুবনেশ্বর কুমার নিজের কার্যকারিতে নিয়ে হয়ে পড়েছেন প্রশ্নবিদ্ধ। হার্শাল ছিলেন খরুচে। যুজভেন্দ্র চেহেল আইপিএল ফর্মটা টেনে আনতে পারেননি আন্তজার্তিক মঞ্চে। 

মিলার-ডুসেনের কৃতিত্বই বেশি। প্রতিপক্ষের কোন বোলারকেই থিতু হতে দেননি তারা। রানে ভরা দিল্লির বাইশ গজের সুবিধা কাজে লাগিয়েছেন শতভাগ। 

টস জিতে ভারতকেই ব্যাট করতে দিয়েছিলেন বাভুমা। আগে নেমে জুতসই শুরু আনেন দুই ওপেনার রতুরাজ গায়কোয়াড় ও ইশান। ঝড়ের আভাস দিয়ে রতুরাজ ১৫ বলে ২৩ করে ফেরার পর শ্রেয়াস আইয়ারের সঙ্গে জমে উঠে ইশানের জুটি। দুজনের জুটিতে আসে ৮০ রান। শুরুর জড়তা কাটিয়ে ইশান হয়ে উঠেছিলেন দুর্বার। ৪৮ বলে ১১ চার, ৩ ছক্কায় তার আগ্রাসী ইনিংস থামে কেশব মহারাজের বলে। খেলা ধরে রেখে এগুনো শ্রেয়াস থামেন ২৭ বলে ৩৬ করে। তাতে সমস্যা হয়নি, বরং ঝড় তুলে রান বাড়ানোর জায়গা পান পান্ত-হার্দিক। অধিনায়কের ব্যাট থেকে আসে ১৬ বলে ২৯। মাত্র ১২ বলে ৩১ করে অপরাজিত থাকেন হার্দিক। 

দলকে বড় রান পাইয়ে দিয়েও শেষ পর্যন্ত লাভ হলো না। ম্যাচ শেষে অধিনায়ক পান্ত বললেন, পুঁজিটা তাদের জুতসই ছিল। কিন্ত বোলিং হয়নি তেমনটা।  রোহিত শর্মার বিশ্রামের কারণে এই সিরিজে নেতৃত্ব পেয়েছিলেন লোকেশ রাহুল। তিনিও চোটে পড়লে নেতৃত্বের সুযোগ পান পান্ত। টানা ১২টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ জেতার পর তার অধিনায়কত্বে হার দেখল ভারত।  

 

Comments

The Daily Star  | English

Govt relieves Kuet VC, Pro-VC of duties to resolve crisis

A search committee will soon be formed to appoint new candidates to the two posts

3h ago