মুমিনুলের ‘বিশ্রামে’ সমাধান?

Mominul Haque
ফাইল ছবি: ফিরোজ আহমেদ

অ্যান্টিগা টেস্ট শেষ হওয়ার পর অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের ইঙ্গিতপূর্ণ কথায় মূল আলোচনায় সাবেক অধিনায়ক মুমিনুল হক। টান রান খরায় থাকা এই বাঁহাতিকে বিশ্রামের আদলে বাদ দেওয়ারও প্রসঙ্গ উঠেছে। তবে মুমিনুলকে যদি 'বিশ্রাম' দেওয়া হয় তাহলে কি আছে কোন সমাধান? এই মুহূর্তে তার বিকল্পই বা হবেন কেন?

সর্বশেষ ১৭ ইনিংসে তার ফিফটি পেরুনো স্কোর একটাই। টানা ১১ ইনিংস ধরে নেই ফিফটির দেখা। টেস্টে বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ ১১বার তিন অঙ্কে যাওয়া মুমিনুল এখন দুই অঙ্কে যেতেই জেরবার দশা। টানা ৯ ইনিংসে আউট হয়েছেন এক অঙ্কের ঘরে।

এমন অবস্থায় যেকোনো ব্যাটসম্যানের বাদ পড়ার প্রসঙ্গ আসাটাই স্বাভাবিক। ব্যাটে রান খরার কারণেই ছেড়ে দিয়েছেন বা 'ছাড়তে হয়েছে' নেতৃত্ব। এবার দল থেকে বাদ পড়ার জায়গায় তিনি।

ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে যাওয়ার আগে মুমিনুলের ত্রুটি কাটাতে কাজ করছিলেন বিকেএসপির তার কোচ নাজমুল আবেদিন ফাহিম তার পর্যবেক্ষণ অ্যান্টিগায় শেষ দুই ইনিংসের পর মুমিনুলের পায়ের নিচের মাটি অনেকটা দুর্বল হয়ে গেছে,  'কঠিন। গত দুটি ব্যর্থতার পর অবশ্যই তার ভিত নড়ে গেছে। এগুলোর আগে হয়ত সে খুব বেশি ভাবেনি কিন্তু এই দুই ইনিংসের পর ভাবতে বাধ্য হবে।'

ডানহাতি বোলার যখন অ্যারাউন্ড দ্য উইকেটে এসে বল করছেন, তখন মুমিনুলের শরীর খানিকটা এগিয়ে এলেও পা সেভাবে এগুচ্ছে না। ব্যাট স্যুয়িং হচ্ছে না ঠিকঠাক। তবে এই সমস্যা নেটে কাটিয়ে উঠেও কেন ম্যাচে আবার হচ্ছে তা ভেবে দুশ্চিনায় ফাহিম, 'টেকনিক্যাল সমস্যা মনস্ত্বত্ত্বিকভাবেও বাধা দিতে পারে। নেটে শেষবার যখন দেখলাম তাকে সাবলীল মনে হয়েছিল। হয়ত আগের  ব্যর্থতাগুলো ম্যাচে তার উপর প্রভাব ফেলেছে। সে আড়াআড়ি আসছে কিন্তু ব্যাটটা ঘোরানোর জায়গা করতে পারছে না। শেষ যে আউট হলো ওটা ছিল হতাশার। একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যাটারের এই ডেলিভারি ডিল করা কঠিন হওয়া উচিত ছিল না।'

এত ব্যর্থতার পরও মুমিনুলকে বিশ্রামে পাঠানোর পক্ষে নন বিকেএসপির ক্রিকেট উপদেষ্টা। এতে কোন সমাধান দেখছেন না তিনি,  'বিশ্রাম কোন কিছু করবে না। তাকে ঠিক জিনিসটা করতে হবে। তাকে দিয়ে ঠিক জিনিসটা করিয়ে নিতে হবে। কোচরা আছেন তাদের এই নিয়ে কাজ করতে হবে। তাদের জানতে হবে মুমিনুলের মানসিক অবস্থা কি। এসব পরিস্থিতিতে আপনাকে অনেক সাহসী হতে হবে। তার আত্মবিশ্বাস তলানিতে। বাংলাদেশের ক্রিকেটের জন্য তার ছন্দে ফেরা জরুরি।'

সেন্ট লুসিয়া টেস্টে মুমিনুলকে বিশ্রামে রাখলে তার যোগ্য বিকল্পেরও ঘাটতি থাকছে। দলের সঙ্গে যোগ দিতে গিয়েছেন ৮ বছর পর টেস্ট দলে ফেরা এনামুল হক বিজয়। সম্প্রতি ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে লিস্ট-এ সংস্করণে রান বন্যা বইয়ে দিলেও লাল বলে তার পারফরম্যান্স প্রশ্নবিদ্ধ। সর্বশেষ ঘরোয়া মৌসুমে লাল বলে তেমন কিছু করেননি বিজয়। টেস্টে তার পরিসংখ্যানও একেবারেই মলিন।

হুট করে গিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কঠিন কন্ডিশনে তার লাল বলে সাফল্য পাওয়া নিয়ে সংশয় আছে। এছাড়া আছেন মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। মোসাদ্দেক টেস্ট দলে থাকলেও গত মৌসুমে লাল বলের ক্রিকেট খুব একটা খেলেননি। এছাড়া তাকে পুরোপুরি ব্যাটসম্যান হিসেবে আমলে নেয় না টিম ম্যানেজমেন্ট।

মুমিনুলকে বিশ্রামে পাঠানোর ক্ষেত্রে আরেক বাধা নাজমুল হোসেন শান্তর ফর্ম। মুমিনুলের মতো না হলেও চরম রান খরায় শান্ত। এক সঙ্গে দুজন ব্যাটারকে বসিয়ে নতুন দুজনকে খেলানো টিম ম্যানেজমেন্টের জন্য খুব সহজ সিদ্ধান্ত না। সব মিলিয়ে দ্বিতীয় টেস্টের আগে বাংলাদেশ দলে অস্বস্তির হাওয়া ভারি।

Comments

The Daily Star  | English

‘People's will, not mine’

Yunus tells Malaysia's Bernama why he stepped into Bangladesh's political hot seat

37m ago