জাবি: প্রশাসনিক ভবন নিয়ে আরেক দফা তথ্য গোপন

জাবিতে বিদ্যমান প্রশাসনিক ভবনের ২০০৮ সালের নকশা। নকশার বাম দিকের চিহ্নিত অংশটুকুর কাজ শেষ হয়েছে। নকশার বাকি অংশটুকু আর নির্মাণ করা হয়নি।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে চলছে অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের দ্বিতীয় ধাপের কাজ। এরই মধ্যে উন্নয়নের নামে শত কোটি টাকা অপচয় ও তথ্য গোপনের গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। এবার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন নিয়ে দ্বিতীয় দফায় তথ্য গোপনের অভিযোগ উঠেছে।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিটেইল প্রজেক্ট প্ল্যানের (ডিপিপি) ১০ নং পৃষ্ঠায় ইতোপূর্বে গৃহীত বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের মাধ্যমে নির্মিত স্থাপনার নাম উল্লেখ করা হয়। কিন্তু সেখানেও দেখা যায় বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদ্যমান দুইটি প্রশাসনিক ভবনের কথা উল্লেখ নেই।

উল্লেখিত একটি প্রশাসনিক ভবনটি যে অসম্পূর্ণ এবং সম্প্রসারণযোগ্য সে বিষয়েও কোনো তথ্য নেই।

কিন্তু একই পৃষ্ঠায় উল্লেখিত অন্যান্য ভবনগুলোর ক্ষেত্রে ব্রাকেটে সম্পন্নকৃত বা দখলকৃত ইত্যাদি শব্দ দিয়ে বর্তমান অবস্থার কথা বোঝানো হয়েছে।

উদাহরণস্বরূপ একাডেমিক ভবন অংশের ১২ নং এ লাইব্রেরির ক্ষেত্রে ব্রাকেটে বলা হয়েছে, লাইব্রেরির শুধুমাত্র 'দক্ষিণ ব্লক সম্পন্নকৃত'। কিন্তু প্রশাসনিক ভবনেরও শুধুমাত্র দক্ষিণ ব্লক সম্পন্নকৃত হলেও তার কোনো উল্লেখ নেই।

সেখানে বিদ্যমান প্রশাসনিক ভবনটি যে অসম্পূর্ণ এবং সম্প্রসারণযোগ্য সেটি উল্লেখ না করে ভবনটিকে ৫৫৭৫ বর্গমিটার বা প্রায় ৬০ হাজার বর্গফুট দেখানো হয়েছে। অর্থাৎ শুধুমাত্র নির্মিত অংশটিকেই দেখানো হয়েছে।

তবে নকশা অনুযায়ী এই ভবনটির আয়তন হওয়ার কথা ১ লাখ ৬৩ হাজার ৬৬ দশমিক ১১ বর্গফুট।

এই ভবনটি পূর্ণাঙ্গরূপে নির্মাণ করতে ৪০ কোটি টাকার প্রয়োজন হবে বলে ইতোপূর্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান প্রকৌশলী আবদুস সালাম মো. শরীফ জানিয়েছিলেন।

কিন্তু বিদ্যমান প্রশাসনিক ভবনটিকে বাদ রেখে তৃতীয় আরেকটি প্রশাসনিক ভবনের জন্য ১৫২ দশমিক ৮০ কোটি টাকার প্রস্তাব করা হয়। সেক্ষেত্রে, ১০০ কোটি টাকার অপচয় হবে বলে মত দিয়েছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্টরা।

আবারো প্রশাসনের তথ্য গোপন করা নিয়ে শিক্ষাবিদ আনু মোহাম্মদ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'প্রথমত ডিপিপির ১০ নং পৃষ্ঠায় দুটি প্রশাসনিক ভবনের কথা উল্লেখ করা হয়নি। দ্বিতীয়ত যেটির কথা উল্লেখ করা হয়েছে সেটিও যে অসম্পূর্ণ ও সম্প্রসারণযোগ্য সে ব্যাপারে কিছুই উল্লেখ না করাটা আরও একটি তথ্য গোপন।' 

তিনি আরও বলেন, 'যদি তথ্য গোপন নাও করা হতো সেক্ষেত্রেও তৃতীয় প্রশাসনিক ভবনের কোনো যৌক্তিকতা নেই। শত কোটি টাকা অপচয় করে বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন কোনো প্রশাসনিক ভবনের দরকার নেই।'

প্রশাসনিক ভবন নিয়ে তথ্য গোপনের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক প্রকৌশলী মো. নাসির উদ্দিন কোনো মন্তব্য করতে চান না বলে জানিয়ে দেন।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নুরুল আলম এবং সাবেক উপাচার্য ফারজানা ইসলামকে একাধিকবার কল করা হলেও তারা কেউ কল ধরেননি এবং টেক্সট মেসেজ দেওয়া হলেও তার রিপ্লাই দেননি।

এর আগে ডিপিপির কার্যাবলি অংশের ১৭ নম্বর পৃষ্ঠায় ১৫.৪.১৭ এ প্রশাসনিক ভবন নির্মাণ অংশের ভিত্তিতে 'জাবিতে উন্নয়নের অপচয় শত কোটি টাকা ও তথ্য গোপনের অভিযোগ' শিরোনামে গত ১৩ জুন দ্য ডেইলি স্টারে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। 

এসব প্রতিবেদনে উল্লেখিত নথি দ্য ডেইলি স্টারের হাতে আছে।

Comments

The Daily Star  | English

Students, teachers call for JnU 'shutdown'

JnU students have continued their blockade at the capital's Kakrail intersection for the second consecutive day

2h ago