হোয়াইটওয়াশড হয়ে টেস্টে ১০০ হারের দেখা পেল বাংলাদেশ

Raymon Reifer
ইবাদত হোসেনের ক্যাচ ঝাঁপিয়ে ধরছেন রেমন রেইফার। ছবি- এএফপি

বৃষ্টির বাগড়া না থাকলে ম্যাচের সমাপ্তি হতে পারত তৃতীয় দিনই, বৃষ্টির প্রভাবে চতুর্থ দিনও অর্ধেকটা সময় অপেক্ষায় থাকলে হলো ওয়েস্ট ইন্ডিজকে। খেলা শুরু হতেই অবশ্য সময় লাগেনি। ঘণ্টা খানেকের মধ্যেই খেল খতম। বাংলাদেশের পরিণতি আরেকটি বিশাল হার। টেস্ট নিজেদের ইতিহাসের শততম।

সেন্ট লুসিয়ায় সোমবার কোন রকমে ইনিংস হার এড়ালেও গল্পটা ভিন্ন হয়নি। ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে ১০ উইকেটে বিধ্বস্ত হয়েছে সাকিব আল হাসানের দল। দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজেও অনুমিতভাবেই হোয়াইটওয়াশড হয়েছে।

চা-বিরতির পর ৬ উইকেটে ১৩২ রান নিয়ে নেমে ৯ ওভার ব্যাট করে নুরুল হাসান সোহানের ফিফটিতে ১৮৬ রানে থামে বাংলাদেশের ইনিংস। মাত্র ১৩ রানের লক্ষ্য ক্যারিবিয়ান দুই ওপেনার তুলে নেন ২.৫ ওভারেই।

এই নিয়ে ১৩৪ টেস্টে বাংলাদেশ পেল ১০০তম হারের দেখা। কুলীন সংস্করণে তিন অঙ্কের হারের দেখা পেলেও কেবল ১৬ জয় আর ১৮টি ড্র করতে পেরেছে লাল সবুজের প্রতিনিধিরা। টেস্ট খেলুড়ে দেশগুলোর মধ্যে ১০০টা টেস্ট হারল বাংলাদেশ সবচেয়ে কম ম্যাচ খেলে। সাদা পোশাকে বাংলাদেশের রুগ্ন দশারই জানান দেয় যেন তা।

আগের দিন বৃষ্টিতে ভেসে গিয়েছিল ৩৩ ওভারের বেশি। খেলা না হলে চতুর্থ দিনে গড়াতই না। চতুর্থ দিনেও প্রবল বৃষ্টির পর ভেজা মাঠ পুরো দিন ফেলে দিয়েছিল শঙ্কায়।

দীর্ঘ অপেক্ষায় দুই সেশনের বেশি সময় ভেস্তে যাওয়ার পর শুরু হয় খেলা। আনুষ্ঠানিকতা সারার মিশনে খুব বেশি বেগ পেতে হয়নি স্বাগতিকদের।

সোহান এক দিকে মেরে খেলে রান বাড়ালেও আরেকদিকে টপাটপ পড়তে থাকে উইকেট। দিনের চতুর্থ ওভারে আলজেরি জোসেফের শিকার হন মেহেদী হাসান মিরাজ।

জোসেফের বাড়তি বাউন্স আর গতি সামলাতে পারেননি মিরাজ, ধরা দেন উইকেটের পেছনে। পরের ওভারে কেমার রোচকে চার-ছক্কা পিটিয়ে বিনোদন দেন সোহান। জোসেফকেও মারেন দুই বাউন্ডারি। ইবাদত হোসেনকে আগলে রান বাড়ানোর ইচ্ছা ছিল তার। হয়নি। সিলসের সামনে পুরো একটি ওভার পড়ে দ্বিতীয় বলেই বিদায় তার।

ইবাদতও বাড়তি বাউন্সে কাবু। শর্ট লেগে তার সহজ ক্যাচ নেন রেমন রিফার। দুই বল পরই সিলস দারুণ ইয়র্কারে বিদায় করে দেন শরিফুল ইসলামকে। স্কোর তখন সমান। অলআউট হলে ওয়েস্ট ইন্ডিজের লক্ষ্য হতো কেবল ১।

পরের ওভারে সোহান স্ট্রাইক পেয়ে চার-ছক্কায় আরও কিছু রান বাড়িয়ে নেন। পেয়ে যান সিরিজে নিজের দ্বিতীয় ফিফটি।

তবে কতক্ষণ আর তার একার পক্ষে ম্যাচ লম্বা করা সম্ভব? খালেদ আহমেদকে আলগে রাখতে আর পারেননি তিনি। ওভারের শেষ বলে রান নিতে গিয়ে জন ক্যাম্পবেল সরাসরি থ্রোতে রান আউটে কাটা পড়লে থামতে হয় বাংলাদেশকে।  বাংলাদেশ এদিন টিকতে পারে স্রেফ ৯ ওভার। ৬০ রানে অপরাজিত রয়ে যান সোহান।

১৩ রানের লক্ষ্যে নেমে ধীরে সুস্থে জেতার রান তুলে নেয় স্বাগতিকরা। ক্যাম্পবেল অপরাজিত থাকেন ১১ বলে ৯ রানে, অধিনায়ক ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েট মাঠ ছাড়েন ৬ বলে ৪ রান করে।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

বাংলাদেশ প্রথম ইনিংস: ২৩৪

ওয়েস্ট ইন্ডিজ প্রথম ইনিংস:  ৪০৮ 

বাংলাদেশ দ্বিতীয় ইনিংস:  ৪৫ ওভারে ১৮৬ (তামিম ৪, জয় ১৩, শান্ত ৪২, বিজয় ৪, লিটন ১৯, সাকিব ১৬, সোহান ৬০, মিরাজ ৪, ইবাদত ০, শরিফুল ০, খালেদ ০ ; রোচ ৩/৫৪, আলজেরি ৩/৫৭, ফিলিপ ০/২৩, সিলস ৩/২১, মেয়ার্স ০/২১)

ফল: ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১০ উইকেটে জয়ী। 

ম্যান অব দ্য ম্যাচ: কাইল মেয়ার্স। 

সিরিজ: ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২-০ ব্যবধানে জয়ী। 

Comments

The Daily Star  | English

Govt dissolves NBR as per IMF proposal

An ordinance published last night disbands NBR and creates two new divisions

2h ago