প্রচলিত গাড়ির দামে পেলে ইলেকট্রিক গাড়িতে আগ্রহী শতভাগ ব্রিটিশ ক্রেতা

যুক্তরাজ্যে এক গবেষণায় দেখা গেছে, যারা নতুন গাড়ি কেনার কথা ভাবছেন— তাদের মধ্যে প্রায় শতভাগ মানুষ একই দামে পেলে প্রচলিত গাড়ির বদলে ইলেকট্রিক কার (ইভি) কিনতে আগ্রহী।
ছবি: ইলেকটেক

যুক্তরাজ্যে এক গবেষণায় দেখা গেছে, যারা নতুন গাড়ি কেনার কথা ভাবছেন— তাদের মধ্যে প্রায় শতভাগ মানুষ একই দামে পেলে প্রচলিত গাড়ির বদলে ইলেকট্রিক কার (ইভি) কিনতে আগ্রহী।

অনেকদিন ধরেই পরবর্তী প্রজন্মের এই বাহনটি নিয়ে জল্পনা-কল্পনা চলছে যুক্তরাজ্যের নাগরিকদের মধ্যে। বৈদ্যুতিক বাহন কেনার বিষয়ে তারা ভাবছেন গাড়ির গতি, চার্জিং ব্যবস্থা, ব্যাটারির স্থায়িত্ব ও দক্ষতার বিষয়ে। 

এর আগে, ২০১১ সালে যুক্তরাজ্যের নাগরিকদের ব্যক্তিগত গাড়ি কেনার সিদ্ধান্তের বিষয়ে 'ড্রাইভিং অ্যাওয়ে ফ্রম ফসিল ফুয়েলস' শীর্ষক এক গবেষণা পরিচালনা করা হয়। তখন অবশ্য উল্টো চিত্র দেখা গিয়েছিল। এক দশকেরও বেশি সময় আগে, বৈদ্যুতিক গাড়ির ক্রেতার সংখ্যা একেবারেই খুঁজে পাওয়া যায়নি। তখন মাত্র ১ শতাংশেরও কম মানুষ জানিয়েছিলেন জীবাশ্ম জ্বালানি চালিত যানবাহনের সঙ্গে দরদামের তুলনায় লাভজনক মনে হলে তারা ইলেক্ট্রিক কার ব্যবহারের কথা ভেবে দেখবেন। ২০১৫ সালে এ সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ২ শতাংশে।
 
অথচ ২০২২ সালে এসে এই সংখ্যা হুড়মুড় করে বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ১০০ শতাংশে।

এ বিষয়ে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, '২ হাজার ক্রেতার ওপর চালানো এক জরিপে দেখা গেছে, ব্যাটারিচালিত-বৈদ্যুতিক যানবাহন (বিইভি) ও প্লাগড ইন হাইব্রিড গাড়ি যদি প্রচলিত গাড়ির দামে বিক্রি হয় তাহলে সবাই ইলেকট্রিক কার কিনতে আগ্রহী।'

এ গবেষণাটিও 'ড্রাইভিং অ্যাওয়ে ফ্রম ফসিল ফুয়েলস' শিরোনামে পরিচালনা করা হয়। তবে সেটা আরও ৭ বছর পর, ২০২২ সালে। 
    
আরেকটি মজার বিষয় হচ্ছে, জরিপে দেখা গেছে, ৮১ শতাংশেরও বেশি সংখ্যক নতুন গাড়ির ক্রেতা স্ট্রিট পার্কিং করতে চান– যা কি না রাতারাতি হোম চার্জিং ব্যবস্থাকে আরও কষ্টসাধ্য করে তোলে। 

ছবি: সংগৃহীত

এ বিষয়ে প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, 'জরিপটি থেকে জানা যায়, গণ চার্জিংয়ের পূর্বের অবকাঠামোগত ব্যবস্থাটি বৈদ্যুতিক গাড়ির জন্য ভোক্তা চাহিদার ওপর তেমন একটা প্রভাব ফেলবে না। কেন না জরিপের ৮১ শতাংশ নতুন গাড়ি ক্রেতারই রাস্তার বাইরে পার্কিং করার সুবিধা রয়েছে। চার্জিং ব্যবস্থা যে নতুন বৈদ্যুতিক গাড়ির চাহিদায় কোনো প্রভাব রাখছে না– এই ফলাফল আবার বেশ কিছু গাড়ি নির্মাণকারী কোম্পানির নীতির বিরুদ্ধে চলে যায়। ২০৩০ সাল থেকে তারা নতুন পেট্রোল এবং ডিজেলের ওপর নিষেধাজ্ঞার মতো নীতিগুলো বাতিল করা দরকার বলে দাবি জানাচ্ছে।'

যুক্তরাজ্যের বৈদ্যুতিক বাহনের সমর্থকরা আশা করছেন, এই প্রতিবেদনটির পর অন্তত পুরোদমে বৈদ্যুতিক গাড়ির দিকে ঝোঁকা যাবে। তারা এ কথাও ভাবছেন যে, প্রতিবেদনটি এই পরিবর্তনকে আরও গতিশীল করবে। এ নিয়ে অবশ্য প্রস্তুতিরও কিছু বিষয় রয়েছে।
 
সাউথ ব্যাসিলডনের কনজারভেটিভ পার্টির সংসদ সদস্য স্টিফেন মেটকালফ এই প্রতিবেদনটির একটি মুখবন্ধ লিখেছেন। তার মতে, 'ফেয়ারচার্জ ক্যাম্পেইনের এই প্রতিবেদন প্রকাশের সঙ্গে কাজ করতে পেরে আমি অত্যন্ত আনন্দিত। জরিপ থেকে পাওয়া ফলাফল অত্যন্ত চমকপ্রদ। এ থেকে জানা যায়, সড়ক পরিবহনের ক্ষেত্রে আমরা আরও পরিবেশবান্ধব, আরও গতিশীল হবার পাশাপাশি বিদ্যুতায়নের সুফল পুরোপুরি উপলব্ধি সুবর্ণ সুযোগ হাতছাড়া করার ঝুঁকিতে আছি। আজকে সংসদে আমরা অন্যদের কাছে এই ফলাফলগুলো উপস্থাপন করব এবং আমি আশা করি যে তারা আমার এবং ৮০ হাজার সমর্থকের সঙ্গে যোগ দেবেন– যাতে আমরা সরকারকে এই বিষয়ে রাজি করাতে পারি।'

 

গ্রন্থনা: অনিন্দিতা চৌধুরী

 

Comments

The Daily Star  | English
Are schools open? Simple issue unnecessarily complicated

Are schools open? Simple issue unnecessarily complicated

Are the secondary schools and colleges open today? It is very likely that no one can answer this seemingly simple question with certainty.

57m ago