ওয়েস্ট ইন্ডিজে ‘শিক্ষা সফরে’ খুশি মিঠুনরা

ওয়েস্ট ইন্ডিজ 'এ' দলের বিপক্ষে দীর্ঘ পরিসরের সিরিজটা কি জুতসই হলো বাংলাদেশ 'এ' দলের? দুই ম্যাচেই ছিল প্রবল বৃষ্টি বাধা। ফাঁকে যেটুকু খেলা হয়েছে তাতেই দেখা গেছে ব্যাটিং ব্যর্থতা। দুই ম্যাচে বলার মতো পারফম্যান্স করেছেন কেবল সাইফ হাসান ও মোহাম্মদ মিঠুন। তবে কোচ মিজানুর রহমান বাবুল ও অধিনায়ক মিঠুন জানালেন ইতিবাচক আছে অনে কিছু। তাতে তারা বেশ খুশি।
শনিবার দ্বিতীয় আনঅফিসিয়াল টেস্টও হয় ড্র। এই ম্যাচের একমাত্র ইনিংসে ১৪৬ রানের ইনিংস খেলে দৃঢ়তা দেখান সাইফ। বাকিদের ব্যর্থতায় বাংলাদেশের দলটি ৩০০ রানের বেশি করতে পারেনি। জবাবে তেজনাইরাইন চন্দরপলের সেঞ্চুরিতে ক্যারিবিয়ানরা ৫ উইকেটে ২৭৭ তুললে ম্যাচ শেষ হয়ে যায়। বৃষ্টির কারণে খেলা হয়নি ম্যাচের অনেকটা সময়।
আগের ম্যাচেও বাংলাদেশের দলটিকে রক্ষা করেছিল বৃষ্টি। ব্যাটিং ব্যর্থতায় বৃষ্টির কারণে এড়ানো গেছে হার। ওই ম্যাচে একমাত্র ফিফটি করেছিলেন মিঠুন।
অফ স্পিনার নাঈম হাসান ছাড়া বোলারদের পারফরম্যান্সেও ছিল না ধারাবাহিকতা।
সিরিজ শেষে নির্বাচক আব্দুর রাজ্জাকের সঙ্গে আলাপে মিঠুন জানান প্রতিকূল কন্ডিশনের চ্যালেঞ্জ জিতে তাদের যা পারফরম্যান্স, তাতে খুশি তারা, 'আসলে এটা তো আমাদের কাছে একদমই নতুন কন্ডিশন। এখানে সবকিছুই আমাদের জন্য ছিল বিরুদ্ধ। আমরা বাংলাদেশ ধেকে যে লক্ষ্য নিয়ে এসেছিলাম, অবশ্যই আমাদের জেতার ইচ্ছে ছিল, তবে পরিবেশ ওইরকম ছিল না। তার পরও, সব মিলিয়ে বলব আমাদের যে লক্ষ্য ছিল, তা পুরোপুরি পূরণ না হলেও আমি বেশ খুশি।'
সেন্ট লুসিয়ায় খেলা হয়েছে পেস বান্ধব উইকেটে, স্পিনারদের জন্যও অবশ্য ছিল কিছু সাহায্য। প্রথম ম্যাচ ব্যাকফুটে থেকে ড্র করলেও দ্বিতীয় ম্যাচে নিজেদের অবস্থান ভাল দেখছিলেন মিঠুন, 'আসলে সত্যি কথা বলতে, উইকেটের ওপরে অনেক কিছু নির্ভর করে, ফল হওয়া বা না হওয়া। আমার কাছে মনে হয়নি দ্বিতীয় ম্যাচের উইকেটে ফলাফল সম্ভব। বৃষ্টিতে যদিও পুরো খেলা হয়নি, তবে পুরো খেলা হলেও আমার মনে হয় ড্রয়ের দিকেই যেত।'
দলের কোচ মিজানুরের কণ্ঠেও একই সুর। প্রত্যাশা অনুযায়ী খেলতে না পারলেও যা হয়েছে তাতে খুশির অনেক কারণ দেখছেন তারা, 'এটা সত্যি, যে ধরনের মান-মানসিকতা নিয়ে আমরা এখানে এসেছিলাম ও প্রস্তুতি যেরকম ছিল… (পারফরম্যান্স তেমন হয়নি)। এক দেশ থেকে আরেক দেশে গেলে যে সমস্যা হয়, শুরুতে সেসবের সম্মুখীন হয়েছি আমরা। উইকেটে ও অন্যান্য কিছুতে মানিয়ে নিতে পারিনি। কিন্তু পেশাদার ক্রিকেটারদের এসবে মানিয়ে নিতে হয়।'
'এগুলোই শিক্ষার ব্যাপার যে, 'এ' দলে এসব শিখে আমরা সিনিয়র দলে কাজে লাগাব। শুরুতে যে বাউন্স ছিল এখানে, সেটার সঙ্গে আমরা মানিয়ে নিতে পারিনি। নিজেদের সহজাত খেলার মধ্যেই ছিলাম আমরা। যে কারণে ১৬৭ রানে অলআউট হয়েছে বা কম ওভার খেলেছি।'
যারা রান পেয়েছেন তাদের বাহবা দিচ্ছেন কোচ, যারা খুব বড় রান করেননি তাদের খেলার ধরণেও অখুশি নন তিনি, 'দ্বিতীয় ম্যাচেই ছেলেরা ভালো ব্যাট করেছে। ৩০০ রান করেছে, নতুন বল খেলার সমস্যাটা কেটেছে। সাদমান নতুন বল পার করে দিয়েছে। জয় বাজে সময়ে ছিল, এখানে রান মাত্র ১৭ করলেও নতুন বল কাটিয়ে দিয়েছে। এরপর সাইফ দুর্দান্ত ব্যাটিং করেছে, তিনশর ওপরে বল খেলে ১৪৭ রান করেছে। উন্নতির ধারাবাহিকতা দেখা গেছে। আমরা ইনিংস ঘোষণা করেছি, এটাও ভালো ব্যাপার ছিল।'
বোলারদের কেউ ৫ উইকেট পাননি। তবে ছোট ছোট পারফরম্যান্সকেই বড় করে দেখতে চান কোচ, 'বোলিংয়ে আমরা আগের ম্যাচের চেয়ে অনেক ভালো করেছি। মৃত্যুঞ্জয় নতুন বলে ভালো করেছে, ২ উইকেট নিয়েছে। আমাদের একটা চ্যালেঞ্জ ছিল যে, এই উইকেটে স্পিনারদের আমরা খেলাব। বাঁহাতি স্পিনার তানভিরকে আমরা খেলিয়েছি, যেন ভবিষ্যতে এরকম উইকেটে দরকার হলে সে খেলতে পারে। সে নিজের স্কিল দেখিয়েছে। উইকেট না পেলেও ভালো জায়গায় বল রেখেছে। নাঈম দুই ম্যাচেই অনেক ভালো করেছে।'
চারদিনের সিরিজ শেষে এবার স্বাগতিকদের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ খেলবে বাংলাদেশ 'এ' দল।
Comments