লঞ্চে সন্তান প্রসব, আজীবন ভাড়া ‘ফ্রি’

লঞ্চে সন্তান প্রসব, আজীবন ভাড়া ‘ফ্রি’
বৃহস্পতিবার রাত ১টার দিকে মেঘনা নদী অতিক্রমের সময় ‘এমভি প্রিন্স আওলাদ-১০’ নামের একটি লঞ্চে এ ঘটনা ঘটে। ছবি: সংগৃহীত

চিকিৎসকের দেওয়া সময় অনুযায়ী আরও দিন ১৮ পরে সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার কথা ছিল ঝুমুর বেগমের। তাই মায়ের বাড়ি বরিশালে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তিনি।

কিন্তু মাঝনদীতেই হঠাৎ প্রসব বেদনা ওঠে ঝুমুরের। সেসময় লঞ্চে ছিলেন ১৫ বছরের অভিজ্ঞ নার্স রাণী বেগম। তার সহায়তায় মাঝ নদীতে লঞ্চের ডেকে ছেলে সন্তানের জন্ম দেন ঝুমুর।

বৃহস্পতিবার রাত ১টার দিকে মেঘনা নদী অতিক্রমের সময় 'এমভি প্রিন্স আওলাদ-১০' নামের একটি লঞ্চে এ ঘটনা ঘটে।

এতে কোম্পানির পক্ষ থেকে ঝুমুর বেগম ও তার সন্তানকে নগদ ১০ হাজার টাকা উপহার দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি নবজাতক ও তার বাবা-মা আজীবন এ কোম্পানির লঞ্চে বিনা ভাড়ায় যাতায়াত করতে পারবেন বলেও ঘোষণা দেওয়া হয়।

এমভি প্রিন্স আওলাদ-১০ এর সুপারভাইজার জিল্লুর রহমান দ্য ডেইলি স্টারকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। 

তিনি বলেন, 'বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯টায় লঞ্চটি ঢাকা সদরঘাট থেকে বরিশালের উদ্দেশে রওনা দেয়। লঞ্চের প্রথম তলার ডেকে যাত্রী ছিলেন ঝুমুর আক্তার। লঞ্চটি ঘাট ত্যাগ করার পর তার প্রসব বেদনা শুরু হয়। তখন তাকে লঞ্চের কেবিনে নেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু তখন তিনি সিঁড়ি বেয়ে উঠে যাওয়ার মতো অবস্থায় ছিলেন না। তাই তাৎক্ষণিকভাবে ডেকের সব পুরুষ যাত্রীকে সরিয়ে  চারদিকে কাপড় টানিয়ে দেওয়া হয় l লঞ্চে একজন নার্স ছিলেন। তার সহায়তায় পুত্রসন্তানের জন্ম দেন ঝুমুর।' 

জানতে চাইলে নার্স রানী বেগম বলেন, 'হঠাৎ করে লঞ্চে একজন অন্তসত্ত্বা নারীর প্রসব বেদনা শুরু হয়। তখন তাকে ওষুধও খাওয়ানো হয়েছিল। কিন্তু ব্যথা আরও বাড়লে কাপড় দিয়ে চারপাশ ঢেকে ফেলা হয়। বাচ্চার পজিশন ভালো থাকায় আমি ডেলিভারি করার  সিদ্ধান্ত নেই ও নিরাপদে সন্তান প্রসব করাই।'

লঞ্চে ঝুমুরের মা মিনু বেগমও ছিলেন। 

তিনি বলেন, 'আমার মেয়ে জামালপুরে স্বামীর সঙ্গে থাকে। আল্ট্রাসনোগ্রামের রিপোর্ট অনুযায়ী তার ডেলিভারির তারিখ আরও ১৮ দিন পরে ছিল। ডেলিভারির সময় ঘনিয়ে আসায় মেয়েকে বরিশালে আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম।' 

'কল্পনায়ও ভাবি নাই যে আমার নাতির জন্ম লঞ্চেই হবে। যেখানে ডাক্তারের হিসাব ও আল্ট্রাসনোগ্রাম অনুযায়ী ডেলিভারির ১৮ দিন বাকি ছিল, সেখানে লঞ্চে বাচ্চা হওয়াটা  আমাদের কাছে স্বপ্নের  মতো । আমার নাতির নাম  ইব্রাহিম রাখা হয়েছে,' বলেন তিনি। 

লঞ্চের সহকারী সুপারভাইজার হৃদয় খান বলেন, 'বর্তমানে নবজাতক সুস্থ আছে; তবে তার মা ঝুমুর একটু অসুস্থ। তাকে হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দিতে হবে। এ জন্য লঞ্চ দ্রুত চালানো হয়েছে।' 

Comments

The Daily Star  | English

JP central office vandalised, set ablaze

A group of unidentified people set fire to the central office of Jatiyo Party in Dhaka's Kakrail area this evening

3h ago