শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে মানসিকতার পরিবর্তন দেখতে চান সুজন

ছবি: বিসিবি

'আমরা যে মানসিকতার পরিবর্তনের কথা বলছিলাম, অভিপ্রায় দেখানোর কথা বলছিলাম, সেটা আমি দেখতে পাইনি বলে, আমি বেশি হতাশ। হারাটার জন্য বড় হতাশ না। হারতেই পারি। এমন না, বাংলাদেশ টি-টোয়েন্টিতে নিয়মিত জিতি বলে আমাদের খারাপ লাগছে যে, জিততে পারিনি। আমার কথা হচ্ছে, আমরা যদি জিততে চাই। জেতার জন্য প্রথম যে শর্ত, সেগুলো আমরা মানছি না আসলে,' হতাশ কণ্ঠে বললেন বাংলাদেশ টিম ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ সুজন।

কি সেই শর্ত যা মানছে না বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা?

জিম্বাবুয়েতে ভরাডুবির পর এবার অনেক পরিবর্তনের কথা বলেছিল বাংলাদেশ দল। কিন্তু অধিনায়ক আর কোচ ছাড়া দেখা যায়নি কিছুই। মাঠে তাদের পারফরম্যান্স আগের মতোই। আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচের শুরু থেকেই টাইগাররা ছিল কোণঠাসা। এক মোসাদ্দেক হোসেন ছাড়া আর ব্যাটার তো দাঁড়াতেই পারেননি সে অর্থে। বোলিংয়েও হয়নি আহামরি কিছু। প্রতিপক্ষ জয় তুলে নিতে প্রায় ১৯ খেলেছে, তাতে মনে হতে পারে অনেক কিছুই। কিন্তু আসলে ঝুঁকি এড়িয়ে সহজ জয় নিশ্চিত করেছে আফগানিস্তান।

মূলত এবার ভয়ডরহীন ক্রিকেটের কথাই শুনিয়েছিলেন ক্রিকেটাররা। মানসিকতার পরিবর্তন আনার গান গেয়েছিলেন। আফগানদের বিপক্ষে পারেননি। কিন্তু শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সেটা দেখতে চান সুজন। কারণ এরমধ্যেই দেওয়ালে পিঠ থেকে গিয়েছে টাইগারদের। শেষ চারে উঠতে হলে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে জিততেই হবে বাংলাদেশকে। একই পরিস্থিতি অবশ্য লঙ্কানদেরও জন্য। ফলে ম্যাচটি এক অর্থে অলিখিত ফাইনাল। তবে হারজিতের আগে এই ম্যাচে টাইগারদের মানসিকতার পরিবর্তন চান বাংলাদেশ দলের টিম ডিরেক্টর। ঠিক যেমনটা নজিবউল্লাহ জাদরান ও ইব্রাহীম জাদরান বাংলাদেশের বিপক্ষে করে দেখিয়েছেন।

আগামীকাল শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে নিজেদের ব্যাটিংয়েও এমন কিছু দেখার অপেক্ষায় সুজন, 'আমাদের ছেলেরা ব্যাটিংয়ে সেন্সিবল থাকে... কাল নাজিবউল্লাহ জাদরান ছাড়া আফগানিস্তানের আর কারো স্ট্রাইক রেট একশর বেশি ছিল না। শুধু একজনের ২৬১, তাতেই আমরা ম্যাচ হেরে গেছি। সুতরাং একটা বিস্ফোরক ব্যাটিং যদি কারো না হয় (জেতা কঠিন)।... দুইজন যদি ১৪০-১৪৫ স্ট্রাইক রেটে ব্যাট করতে না পারে, জুটি গড়তে না পারে তাহলে কাজটা খুব কঠিন।'

সবমিলিয়ে মানসিকতার পরিবর্তনই দেখতে চান তিনি, 'আমাদের ব্যাটিংয়ের উন্নতিটা খুব প্রয়োজন। আমাদের টপ অর্ডারে সবচেয়ে বড় সমস্যা, উদ্বোধনী জুটি ক্লিক করছে না কোনোভাবেই। আমি আশা করি, যারাই খেলবে ওপেনিংয়ে, তাদের যে পরিকল্পনা থাকবে, সেটা অনুযায়ী ব্যাট করবে। প্রথম বলেই ওদের কেউ মারতে গিয়ে আউট হতে পারে, এটা ঠিক আছে, আমি মেনে নেব। যখন অভিপ্রায় দেখি না তখনই আমাদের কষ্ট হয় বেশি। আমি ওই অভিপ্রায়টাই দেখতে চাই। মানসিকতার পরিবর্তন দেখতে চাই।'

অথচ এবার আরব আমিরাতে আসার আগে থেকেই মানসিকতার পরিবর্তনের কথা বলে আসছিলেন টাইগাররা। অনুশীলনেও তাদের তেমন সুযোগ দেওয়া হয়েছিল বলে জানান সুজন, 'যে ফ্রিডমটা দেওয়া হয়েছিল অনুশীলনেও, ঢাকাতেও, তিনদিন প্লাস এখানে যে অনুশীলন করেছি প্রত্যেকটা সেশনই আমাদের এরকম ছিল। মাইন্ডসেটটা আমাদের পরিবর্তন করা প্রয়োজন ছিল, মানসিকতা আসলে ব্যাটিংয়ের মানসিকতা সত্যি করে বলতে গেলে। কিন্তু বলতে গেলে মোসাদ্দেক বাদে কারো ব্যাটিং এরকম হয়নি।'

মানসিকতা কেমন দেখতে চান তার উদাহরণও দেন তিনি, 'যদি কোনো নতুন শট তাদের খেলতে হয়, তো খেলবে। কাল মোসাদ্দেক যেটা ছয় মেরেছে, ম্যাচে আমাদের একমাত্র, সেটা ক্যাচই হয়েছিল। বাউন্ডারি রোপে পা না দিলে তো আউটই। সেটা হলে আমরা মন খারাপ করতাম না। কারণ, আমি বুঝতাম মোসাদ্দেকের অভিপ্রায় ছিল, সোজা ব্যাটে ছয় মারার চেষ্টা করেছিল। আমার কাছে এই চেষ্টাটাই সবচেয়ে বড় জিনিস। আমি এই চেষ্টাটাই কিন্তু দেখতে পাচ্ছি না। আমি চাই এই চেষ্টাটা দেখতে। যদি প্রথম বলেই কেউ মারতে গিয়ে আউট হয়ে যায়, আমি মেনে নেব। কিন্তু কেউ ডিফেন্স করে করে আউট হয়ে যাচ্ছে সেটা মানব না।'

Comments

The Daily Star  | English

Life insurers mired in irregularities

One-fourth of the life insurance firms in the country are plagued with financial irregularities and mismanagement that have put the entire industry in danger.

6h ago