ফুটবলার আঁখিকে দেওয়া প্রধানমন্ত্রীর উপহারের জমিতে ১৪৪ ধারা জারি
সারাদেশের মানুষ যখন সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ জয়ী নারীদের নিয়ে উৎসব করছেন তখন সেই দলেরই একজন সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার পারকোলা গ্রামের আঁখি খাতুনের পরিবার প্রধানমন্ত্রীর উপহারের জমি পাওয়া নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন।
প্রধানমন্ত্রীর উপহারের জমিকে মসজিদের দখল করা জমি বলে দাবি করে আদালতে মামলা করেছেন স্থানীয় এক ব্যক্তি। এতে আদালত জমির ওপর ১৪৪ ধারা জারি করেছে।
আদলতের আদেশ নিয়ে ফুটবলার আঁখির বাড়িতে গিয়ে তার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে শাহজাদপুর থানার ২ পুলিশের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় সিরাজগঞ্জ জেলা পুলিশের ২ সদস্যকে প্রত্যাহার করে জেলা পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়।
সাফ অনূর্ধ্ব-১৮ নারী চ্যাম্পিয়নশিপে গোল্ডেন বুট জেতা ফুটবলার আঁখি খাতুনকে বাড়ি তৈরির জন্য ৮ শতাংশ জমি উপহার দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
নানা জটিলতার পরে চলতি বছরের ৪ জুন সিরাজগঞ্জ অফিসার্স ক্লাবে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে আঁখির পরিবারের কাছে ৮ শতক জমির দলিল হস্তান্তর করেন পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব কবির বিন আনোয়ার।
তবে, জমির দলিল পাওয়ার পর থেকেই শুরু হয় বিপত্তি। শাহজাদপুর উপজেলার দাবারিয়া মৌজার এ জমিটি স্থানীয় একটি মসজিদের দখলের সম্পত্তি বলে দাবি করে মামলা করেন স্থানীয় একজন।
এ ঘটনায় সিরাজগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট গত ১৯ সেপ্টেম্বর জমির ওপর ১৪৪ ধারা জারি করে এবং শাহজাদপুর সহকারী কমিশনারকে (ভূমি) আদলতে ওই জমির ওপর প্রতিবেদন তৈরির নির্দেশ দেয়।
আঁখির বাবা আক্তার হোসেন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বুধবার বিকেলে শাহজাদপুর থানার এএসআই মামুনসহ কয়েকজন পুলিশ সদস্য আমার বাড়িতে এসে বলে আঁখিকে সরকারের দেওয়া জমির ওপরে আদালত থেকে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। পরে একটি কাগজে সই দিতে বলে।'
তিনি সই না দেওয়ায় কটূক্তি করে এবং থানায় ধরে নিয়ে যাবে বলে হুমকি দেওয়া হয় বলে জানান আক্তার হোসেন।
এ ঘটনায় সিরাজগঞ্জ জেলা পুলিশ একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। অভিযুক্ত এএসআই মামুন ও কনস্টেবল মুসাকে শাহজাদপুর থানা থেকে প্রত্যাহার করে সিরাজগঞ্জ জেলা পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে বলে জানান শাহজাদপুর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হাসিবুল ইসলাম।
আঁখির বাবা আক্তার জানান, দরিদ্র পরিবারে বেড়ে উঠা আঁখি দেশের হয়ে সাফল্য বয়ে এনেছে। প্রধানমন্ত্রীর উপহারের জমি পেয়ে ঘর বাঁধার স্বপ্ন দেখেছিল। তবে আইনি জটিলতায় এখন আবারও অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে তাদের স্বপ্ন বাস্তবায়ন।
আক্তার আরও জানান, প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিষ্কণ্টক জমি বুঝিয়ে দেওয়া হলে সমস্যায় পড়তে হতো না।
এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে, শাহজাদপুর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তারিকুল আলম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'শাহজাদপুর উপজেলার পৌরসভা এলাকার দাবারিয়া মৌজায় ১ নম্বর খাস খতিয়ানভুক্ত সরকারি খাস জমি থেকে আঁখির পরিবারকে জমি দেওয়া হয়েছে।'
এটি সরকারি খাস জমি, আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী জমির প্রতিবেদন আদলতে দাখিল করা হলে মামলা জটিলতা নিরসন হবে বলে জানান তিনি।
Comments