শেখ সাদীর ‘বালাগাল উলা বি কামালিহি’

শিল্পীর কল্পনায় গোলাপ বাগানে শেখ সাদী। ১৬৪৫ সালে গুলিস্তাঁ'র একটি পাণ্ডুলিপিতে পাওয়া যায় ছবিটি। ছবি: সংগৃহীত।

আরবি সাহিত্যে তো বটেই, বিশ্বসাহিত্যেও সবচেয়ে জনপ্রিয় কবিতাগুলোর একটি পারস্যের কিংবদন্তি কবি শেখ সাদীর লেখা 'বালাগাল উলা বি কামালিহি'।

কবিতাটি এমন-

 'বালাগাল উলা বি-কামালিহি,

 কাশাফাদ্দুজা বি জামালিহি,

 হাসুনাত জামিয়ু খিসালিহি,

 সাল্লু আলায়হে ওয়া আলিহি…'

কবিতাটির ভাবার্থ হচ্ছে-

'সাধনায় যিনি সুউচ্চ মর্যাদায় পূর্ণতায় পৌঁছেছেন

যার সৌন্দর্যের ছটায় বিতাড়িত হয়েছে সমস্ত আঁধার,

সব সচ্চরিত্রের সম্মিলন ঘটেছে যার মাঝে

তবে আসুন দরুদ ও সালাম জানাই তার ও তার বংশধরদের প্রতি।'

অমর এই কবিতাটি শেখ সাদী লিখেছিলেন ৪ পদে। তার বিশ্বখ্যাত গ্রন্থ 'গুলিস্তাঁ'র একটি অংশে পাওয়া যায় কবিতাটি। শেখ সাদী আরবি ভাষায় যে স্বল্প সংখ্যক কবিতা লিখেছিলেন তারমধ্যে অন্যতম ছিল এই কবিতাটি। কবিতাটি তিনি লিখেছিলেন মহানবী হযরত মুহাম্মদের (সা.) প্রশংসায়।

ঐতিহাসিক এই কবিতার সময়কাল সম্পর্কে নির্দিষ্টভাবে জানা যায়নি। তবে ধারণা করা হয়, ১২৫৫-৫৭ খ্রিস্টাব্দের মধ্যেই কবিতাটি লিখেছিলেন শেখ সাদী। কারণ ১২৫৭ খ্রিস্টাব্দ তথা ৬৫৫ হিজরি সালে গুলিস্তাঁ গ্রন্থটি রচনা শেষ করেন তিনি।

কবিতাটি কোথায় বসে শেখ সাদী রচনা করেছিলেন সেটিও কিছুটা ধোঁয়াশায় ঢাকা। কারণ তিনি এর আগে দীর্ঘ সময় ভ্রমণ করেছেন বিশ্বের নানা শহরে। যে বছর গুলিস্তাঁ গ্রন্থটি রচনা করেন, সেই বছরই জন্মভূমি পারস্যের (বর্তমানের ইরান) শিরাজে ফিরে এসেছিলেন। বাকি জীবন সেখানেই অতিবাহিত করেন।

এই কবিতাটি আজও সারাবিশ্বের মুসলিমরা মহানবীর (সা.) প্রশংসায় পড়ে থাকেন। বাংলাদেশে এই কবিতাটি হামদ-নাত হিসেবে পড়া হয় দোয়া মাহফিল থেকে শুরু করে ইসলামিক জলসায়। এই কবিতাটিকে মহানবীর (সা.) প্রশংসায় রচিত সেরা কবিতাগুলোর একটি বলে ধরা হয়। শেখ সাদীর গুলিস্তাঁ গ্রন্থটি অনূদিত হয়েছে বিশ্বের প্রায় সব ভাষাতেই। এই কবিতাটিকে তার লেখা সর্বশ্রেষ্ঠ কবিতা বলে মনে করেন অনেক ভক্ত।

তথ্যসূত্র:

 The Gulistan of Sa'di/ W. M Thackston

Comments

The Daily Star  | English
Government notification banning Awami League

Govt bans activities of AL until ICT trial completion

A gazette notification was issued in this regard by Public Security Division of the home ministry

2h ago