স্কটিশদের স্বপ্ন গুঁড়িয়ে সুপার টুয়েলভে বাংলাদেশের গ্রুপে জিম্বাবুয়ে

ছবি: টুইটার

নড়বড়ে শুরুর পর জিম্বাবুয়ের উল্লাসের মঞ্চটা প্রস্তুত করে তবেই বিদায় নিলেন সিকান্দার রাজা। অধিনায়ক ক্রেইগ আরভিন এক প্রান্ত আগলে হাফসেঞ্চুরি হাঁকিয়ে খেললেন গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস। এই দুজনের ব্যাটে ভর করে প্রথমবারের মতো টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সুপার টুয়েলভ নিশ্চিত করল জিম্বাবুয়ে। সেখানে বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, দক্ষিণ আফ্রিকা ও নেদারল্যান্ডসের সঙ্গে তারা খেলবে দুই নম্বর গ্রুপে।

শুক্রবার হোবার্টে প্রথম রাউন্ডের 'বি' গ্রুপের বাঁচা-মরার লড়াইয়ে স্কটল্যান্ডকে ৫ উইকেটে হারিয়েছে জিম্বাবুয়ে। এই গ্রুপ থেকে আগেই সুপার টুয়েলভ নিশ্চিত করেছে আয়ারল্যান্ড। দিনের প্রথম খেলায় তারা হারায় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দুইবারের চ্যাম্পিয়ন ওয়েস্ট ইন্ডিজকে। ক্যারিবিয়ানদের পাশাপাশি আসর থেকে ছিটকে গেছে স্কটিশরা। জিম্বাবুয়ে ও আয়ারল্যান্ড দুই দলেরই পয়েন্ট তিন ম্যাচে ৪। রান রেটে এগিয়ে থাকায় গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়েছে জিম্বাবুয়ে, আইরিশরা হয়েছে রানার্সআপ।

টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেটে ১৩২ রান তোলে স্কটল্যান্ড। জবাবে ৯ বল হাতে রেখে ৫ উইকেটে ১৩৩ রান তুলে জয় নিশ্চিত করে জিম্বাবুইয়ানরা।

রাজা ২৩ বলে ৪০ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলে ম্যাচসেরার পুরস্কার জেতেন। তার ব্যাট থেকে আসে ৩ চার ও ২ ছক্কা। আরভিন অধিনায়কোচিত ব্যাটিংয়ে করেন ৫৮ রান। ৫৪ বলের ইনিংসে তিনি মারেন ৬ চার। চাপ সামলে ঘুরে দাঁড়িয়ে চতুর্থ উইকেটে ৪৩ বলে ৬৪ রানের জুটি গড়েন তারা।

জিম্বাবুয়ের পক্ষে বল হাতে দারুণ অবদান রাখেন দুই পেসার টেন্ডাই চাতারা ও রিচার্ড এনগারাভা। ৪ ওভারে চাতারা ১৪ রানে ও এনগারাভা ২৮ রানে ২ উইকেট নেন। রাজাও বল হাতে ছিলেন উজ্জ্বল। ২০ রানে তার শিকার ১ উইকেট।

সাদামাটা লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা বাজেভাবে হয় জিম্বাবুয়ের। প্রথম ওভারেই ব্র্যাড হোয়েলের বলে এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে পড়েন রেগিস চাকাভা। পরের ওভারে আবারও উইকেট হারায় জিম্বাবুয়ে। জস ডেভির স্ট্যাম্পের অনেক বাইরের বলে ইনসাইড এজে বোল্ড হয়ে ফিরে যান ওয়েসলি মাধেভেরে।

ঠাণ্ডা মেজাজে ব্যাট চালিয়ে অপর প্রান্তে টিকে থাকেন অধিনায়ক আরভিন। তাকে কিছুটা সঙ্গ দেন শন উইলিয়ামস। ৩৯ বলে দুজনে তৃতীয় উইকেটে যোগ করেন ৩৫ রান। যখন খোলস ভেঙে বেরিয়ে আসার মতো অবস্থায় আসে জিম্বাবুয়ে, তখনই আবার উইকেট হারায় তারা।

মাইকেল লিস্ক তুলে নেন উইলিয়ামসকে। ১২ বলে ৭ রান করেন তিনি। এরপর জিম্বাবুয়েকে জয়ের পথে নিয়ে আসার কাজটা করেন আরভিন-রাজা। শুরুতে ধীরগতিতে ব্যাট করে রানের চাহিদার চেয়ে পিছিয়ে পড়েছিল তারা। এই দুজন সেই চাপ সরান আক্রমণাত্মক জুটি গড়ে।

আগ্রাসী মেজাজে ছিলেন ছন্দে থাকা অলরাউন্ডার রাজা। তার বিদায়ের পর এক ওভার পর ফিরে যান আরভিনও। তবে ততক্ষণে জয়ের সুবাস পেতে শুরু করেছে জিম্বাবুয়ে। মিল্টন শুম্বা ও রায়ান বার্ল সে পথটুকু পাড়ি দেন নিরাপদেই।

এর আগে স্কটিশ অধিনায়কের সিদ্ধান্ত সঠিক প্রমাণ করতে ব্যর্থ হন দুই ওপেনার। প্রথম ওভারের শেষ বলেই মাইকেল জোনসকে রাজার ক্যাচে পরিণত করেন চাতারা। মাত্র ৫ রানে প্রথম উইকেট হারায় স্কটল্যান্ড।

ওপেনার জর্জ মানসি একপ্রান্ত আগলে খেলতে থাকেন। চতুর্থ ওভারে ব্লেসিং মুজারাবানিকে দুটি চার মেরে পাল্টা আক্রমণ করেন তিনি। তবে পরের ওভারেই এনগারাভা তুলে নেন ম্যাথু ক্রসকে।

তৃতীয় উইকেটে রিচি বেরিংটনকে নিয়ে ৪০ রানের জুটি গড়েন মানসি। ব্যাট হাতে দলকে অবশ্য ভরসা যোগাতে পারেননি স্কটিশ দলনেতা। ১৫ বলে ১৩ রান করে রাজাকে উইকেট দিয়ে ফেরেন তিনি।

ক্যালাম ম্যাকলাউডকে নিয়ে আবার জুটি গড়েন মানসি। কিন্তু ৩৪ রান যোগ করতে লেগে যায় ৪০ বল। ফলে স্কটল্যান্ডের চ্যালেঞ্জিং পুঁজি সংগ্রহের স্বপ্ন খায় ধাক্কা।

১৭তম ওভারের প্রথম বলেই এনগারাভার শিকারে পরিণত হন মানসি। ৫১ বলে ৭ চারে ৫৪ রান করে বিদায় নেন তিনি। এরপর লিস্ককে সঙ্গে নিয়ে ১২ বলে ২১ রানের ছোট কিন্তু কার্যকরী জুটি গড়েন ম্যাকলাউড। শেষ পর্যন্ত ১৩২ রান স্কোরবোর্ডে জমা করে স্কটল্যান্ড। কিন্তু তা যথেষ্ট হয়নি।

Comments

The Daily Star  | English

Cops get whole set of new uniforms

The rules were published through a gazette yesterday, repealing the previous dress code of 2004

2h ago