ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং: পটুয়াখালীতে সব ধরনের নৌযান বন্ধ, প্রস্তুত আশ্রয়কেন্দ্র

পটুয়াখালী সংলগ্ন বঙ্গোপাসাগর উত্তাল হয়ে উঠছে। ছবি: স্টার

ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে পটুয়াখালীতে ভারী বর্ষণ শুরু হয়েছে। ঝড়ো হাওয়ার কারণে কুয়াকাটা সংলগ্ন বঙ্গোপসাগর বেশ উত্তাল হয়ে উঠেছে। জেলার সব নদ-নদীর পানির উচ্চতা ২ থেকে ৩ ফুট পর্যন্ত বেড়েছে।

পটুয়াখালী আবহাওয়া অধিদপ্তর রোববার সকাল ৬টা থেকে আজ সোমবার সকাল ৯টা পর্যন্ত ৭৯ দশমিক ৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে। বৃষ্টির তীব্রতা আরও বাড়তে পারে বলে জানিয়েছেন অধিদপ্তরের ইনচার্জ শাহ মো. আব্দুর রহমান।

তিনি বলেন, 'ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং আজ সকাল ৬টায় পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৪৯৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ পশ্চিমে অবস্থান করছিল। সকাল ৯টা পর্যন্ত বাতাসের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ৩২ কিলোমিটার। তাই এটি উপকূলীয় এলাকায় আঘাত হানার শঙ্কায় পটুয়াখালীর পায়রা সমুদ্রবন্দরে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।'

ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং মোকাবিলায় জেলায় ৭০৩টি সাইক্লোন শেল্টার, ২৬টি মুজিব কিল্লা, ২ হাজার প্যাকেট শুকনা খাবার, ওষুধ ও মেডিক্যাল টিম প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এ ছাড়া, জেলায় উদ্ধারকর্মী ও স্বেচ্ছাসেবকদের প্রস্তুত রাখা হয়েছে জানিয়ে জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা সুমন চন্দ্র দেবনাথ বলেন, 'জেলার ৮ উপজেলায় নগদ ৫ লাখ ৭০ হাজার টাকা, ২৫ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। প্রতিটি উপজেলা ও জেলায় নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খোলা হয়েছে।'

পটুয়াখালীতে আজ সকাল থেকে ঢাকাসহ সব রুটে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নৌযান চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পটুয়াখালী নদী বন্দরের পরিদর্শক দিনেশ কুমার সাহা।

কলাপাড়া ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচির সহকারী পরিচালক আসাদুজ্জামান বলেন, 'মাইকিংয়ের মাধ্যমে ব্যাপক প্রচারণা চালানো হয়েছে। সব সাইক্লোন শেল্টার সেন্টার ইতোমধ্যে খুলে দেওয়া হয়েছে। আমাদের স্বেচ্ছাসেবকরাও প্রস্তুত রয়েছেন।'

পর্যাপ্ত পানি বিশুদ্ধিকরণ ট্যাবলেট ও খাবার স্যালাইনসহ প্রয়োজনীয় ওষুধ নিয়ে প্রতিটি ইউনিয়নে অন্তত একটি করে মেডিকেল টিম প্রস্তুত রয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা সিভিল সার্জন ডা. এসএম কবির হাসান।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফ হোসেন জানান, সম্ভাব্য দুর্যোগ মোকাবিলায় পটুয়াখালী ও কলাপাড়া সার্কেলের আওতায় লোকবলসহ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় ১০ হাজার জিও ব্যাগ প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় গতকাল বিকেলে এক জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামাল হোসেন জানান, জেলার ৭০৩টি সাইক্লোন শেল্টার ও ব্যবহারযোগ্য ২৬টি মুজিব কিল্লা বিদ্যুৎ ও সুপেয় পানিসহ প্রস্তুত রাখা, প্রতিটি ইউনিয়নে একটি করে মেডিকেল টিম গঠন, দরকারি ওষুধের ব্যবস্থা রাখা, পর্যাপ্ত শুকনো খাবার সংগ্রহ, অরক্ষিত ও দুর্বল বেড়িবাঁধ জরুরি মেরামত, সব মানুষের কাছে সতর্কবার্তা পৌঁছে দিয়ে তাদেরকে সতর্ক করা, উদ্ধারকর্মী ও স্বেচ্ছাসেবকদের প্রস্তুত রাখা, জরুরি সড়ক মেরামত, প্রতিটি উপজেলা ও জেলায় নিয়ন্ত্রণকক্ষ খোলা রাখার জন্য বিভিন্ন দপ্তর প্রধানকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে বিদ্যুৎ বিভাগকে পর্যাপ্ত লোকবলসহ ক্ষয়-ক্ষতি মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকার জন্য অনুরোধ জানান তিনি।

Comments

The Daily Star  | English

Stuck in red, shipbreaking slow to turn green

Bangladesh began the green transition in 2017, when PHP Ship Recycling Yard became the first entity in the country to receive international green certification.

13h ago