কোনোমতে আফগান বাধা টপকে টিকে রইল অস্ট্রেলিয়া

অস্ট্রেলিয়া বিশ্বকাপ সাক্ষী হলো আরও একটি উত্তেজনাপূর্ণ লড়াইয়ের। যখন মনে হচ্ছিল নিশ্চিত ম্যাচ থেকে ছিটকে গেছে আফগানরা, তখনই আবার তাদের স্বপ্ন দেখানো শুরু করলেন রশিদ খান। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তার ইনিংস কেবল হতে পেরেছে আফগানিস্তান ভক্তদের হৃদয়ের ক্ষতে প্রলেপ। ম্যাচ জিতে সেমিফাইনালের স্বপ্ন টিকিয়ে রাখল অস্ট্রেলিয়া।

শুক্রবার অ্যাডিলেড ওভালে শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচে আফগানিস্তানকে চার রানে হারিয়েছে অজিরা। আগে ব্যাট করে মিচেল মার্শ ও গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের কল্যাণে আট উইকেট হারিয়ে ১৬৮ রানের পুঁজি পায় ক্যাঙ্গারুরা। জবাবে রহমানউল্লাহ গুরবাজ-গুলবাদিন নাঈমের মাঝারি ইনিংসের পর শেষদিকে রশিদের ২৩ বলে ৪৮ রানের ক্যামিওতে জয়ের স্বপ্ন দেখছিল আফগানরা। কিন্তু আপ্রাণ লড়েও শেষ পর্যন্ত তারা থেমেছে সাত উইকেট হারিয়ে ১৬৪ রানে।

অস্ট্রেলিয়ার মাঝারি লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুতে ঝড় তুলেন গুরবাজ। যদিও আরেক ওপেনার উসমান ঘানি ব্যক্তিগত ২ রান করে ফিরে যান দ্রুতই। দলীয় ৪০ রানে মাত্র ১৭ বলে দুই ছক্কা দুই চারে ৩০ রান করে ফিরে যান গুরবাজ। এরপর ইব্রাহিম জাদরান ও গুলবাদিন মিলে গড়েন ৫৯ রানের জুটি।

১৩ ওভার পর্যন্ত খেলায় বেশ ভালোভাবেই ছিল আফগানরা। কিন্তু এরপর বল হাতে নিয়েই মোহাম্মদ নবীর দলকে ম্যাচ থেকে ছিটকে দেন অ্যাডাম জাম্পা। ১৪তম ওভারের প্রথম চার বলেই তিন উইকেট হারায় আফগানিস্তান। দুই সেট ব্যাটার গুলবাদিন (৩৯) ও ইব্রাহিমের (২৬) সঙ্গে শূন্য রানে ফিরে যান নাজিবুল্লাহও।

পরের ওভারে অধিনায়ক নবিও জশ হ্যাজলউডের শিকার হলে ১০৩ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে হার দেখতে থাকে আফগানিস্তান। তখনও জয়ের জন্য ৩৩ বলে ৬৬ রান প্রয়োজন ছিল তাদের। তবে রশিদ ঝড় তখনও বাকি। দারউইশ রাসুলকে সঙ্গে নিয়ে মাত্র ২৭ বলে ৪৪ রান যোগ করে গ্যালারিতে ফের আফগান ভক্তদের উল্লাসে মাতান তিনি।

শেষ দুই ওভারে জয়ের জন্য রশিদদের সমীকরণ দাঁড়ায় ১২ বলে ৩৩ রান। হ্যাজলউডের সেই ওভার থেকে ১১ রান এলে শেষ ওভারে দরকার পড়ে ২২ রান। ওভারের প্রথম বলেই রশিদকে স্ট্রাইক প্রান্তে ফিরিয়ে আনতে গিয়ে নিজের উইকেট বিসর্জন দেন দারউইশ। দ্বিতীয় বলে ঠিকমতো ব্যাটে বলে করতে পারেননি রশিদ।

তবে দ্বিতীয় বলে চার ও চতুর্থ বলে ছক্কা হাঁকিয়ে শেষ দুই বলে ১১ রানের সমীকরণ সৃষ্টি করেন তিনি। কিন্তু বিধি বাম, পঞ্চম বলে দুই রানের বেশি নিতে পারেননি রশিদ। শেষ বলে বাউন্ডারি এলেও আফগানরা পুড়ল কাছে গিয়েও হেরে যাওয়ার বেদনায়। অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে দুটি করে উইকেট শিকার করেন জাম্পা ও হ্যাজলউড।

এর আগে টস হেরে নবির আমন্ত্রণে ব্যাট করতে নামে ক্যাঙ্গারুরা। উদ্বোধনী জুটিতে আজও কাঙ্ক্ষিত সাফল্য পায়নি তারা। দুই বলে ৩ রান করে ফিরে যান ক্যামেরন গ্রিন। নিয়মিত অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চ না খেলায় সুযোগ মিলেছিল তার। ওয়ান ডাউনে মিচেল মার্শ যথারীতি ছিলেন উজ্জ্বল। তবে ১৮ বলে ২৫ রান করে নাভিন-উল-হকের বলে বোল্ড হয়ে যান ডেভিড ওয়ার্নার।

আজ সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি স্টিভেন স্মিথও, ৪ রান করে নাভিনের দ্বিতীয় শিকারে পরিণত হন তিনি। একাদশ ওভারে ৩০ বলে ৪৫ রান করে মিচেল মার্শ ফিরে গেলে দলীয় ৮৬ রানে চতুর্থ উইকেটের পতন ঘটে অস্ট্রেলিয়ার। এরপর অজিদের লড়াইয়ের পুঁজি মিলে গ্লেন ম্যাক্সওয়েল ও মার্কাস স্টয়নিসের ব্যাটে।

মাত্র ২৯ বলে ৫৩ রানের বিধ্বংসী জুটি গড়েন তারা। স্টয়নিস ২৫ রান করে ফিরে গেলেও শেষ পর্যন্ত অজিদের রানের চাকা সচল রাখেন ম্যাক্সওয়েল। ৩২ বলে দুই ছক্কায় ৫৪ রান করে অপরাজিত থাকেন তিনি। ম্যাচসেরাও নির্বাচিত হন এই অজি অলরাউন্ডার। তিন উইকেট নিয়ে আফগান বোলারদের মধ্যে সবচেয়ে উজ্জ্বল ছিলেন নাভিন। দুটি শিকার করেন ফজল হক ফারুকি।

Comments

The Daily Star  | English
Kudos for consensus in some vital areas

Kudos for consensus in some vital areas

If our political culture is to change, the functioning of our political parties must change dramatically.

4h ago