সাঙ্গু নদীতে পাওয়া গেল নতুন প্রজাতির মহাশোল

নতুন প্রজাতির মহাশোল মাছ। ছবি: সংগৃহীত

দেশে প্রথমবারের মতো বাণিজ্যিক গুরুত্বসম্পন্ন মহাশোল মাছের নতুন প্রজাতির সন্ধান পাওয়া গেছে।

বান্দরবান জেলার সাঙ্গু নদীতে বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিএফআরআই) বিজ্ঞানীরা এ প্রজাতির সন্ধান পেয়েছেন।

এই প্রজাতির সন্ধান পাওয়ায় এখন দেশে মহাশোল মাছের প্রজাতির সংখ্যা বেড়ে ৩টি হয়েছে।

বিএফআরআই সূত্রে জানা গেছে, এতদিন দেশে মহাশোল মাছের দুটি প্রজাতি ছিল। এদের আবাসস্থল নেত্রকোণা জেলার কংস এবং সোমেশ্বরী নদী। এই ২ প্রজাতি মূলত পাহাড়ি ঝরনা প্রবাহিত স্রোতস্বিনী জলাশয়ে বসবাস করে এবং পাথরের গায়ে লেগে থাকা শ্যাওলা জাতীয় খাবার খেয়ে বেঁচে থাকে। ২০১৫ সালে আইইউসিএন'র তথ্যমতে, মহাশোল বিপন্ন প্রজাতির দামী মাছ। বিএফআরআই পরিচালিত সমীক্ষায় বান্দরবানের সাঙ্গু নদীতে নতুন এই প্রজাতির মহাশোল মাছের সন্ধান পাওয়ায় এখন দেশে মহাশোল মাছের প্রজাতির সংখ্যা দাঁড়ালো ৩টি। এতে দেশে মিঠাপানির মাছের সংখ্যা হবে ২৬১টি।

বিএফআরআই সূত্র আরও জানায়, গত এক বছর আগে নতুন প্রজাতির মহাশোল মাছের দেখা পাওয়ার খবর পেয়ে বিএফআরআই রাঙ্গামাটি উপকেন্দ্র থেকে বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় মৎস্যজীবীদের সহযোগিতায় সমীক্ষা পরিচালনা করা হয়। এরপর সন্ধান মেলে মহাশোল আকৃতির এক প্রজাতির মাছের। ওই মাছ সংগ্রহের পর বাহ্যিক গঠন এবং অন্যান্য দিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়। গবেষণায় দেখা যায়, এর আঁইশ মহাশোল মাছের মতো হলেও পাখনার রং দেশের অন্যান্য প্রজাতির মহাশোলের মতো হলদে নয় এবং মুখটি অপেক্ষাকৃত সরু। পরবর্তীতে প্রজাতি শনাক্ত করার জন্য ডিএনএ বারকোডিং করা হয়। এরপর কৌলিতাত্ত্বিক গবেষণায় সংগ্রহীত নমুনায় মহাশোলের রেফারেন্স জিনোমের সঙ্গে শতভাগ সাদৃশ্য পাওয়া যায় এবং দেশে প্রথমবারের মতো নতুন প্রজাতির মহাশোল শনাক্তকরণ নিশ্চিত হয়।

বান্দরবানের থানচি উপজেলার সাঙ্গু নদীর আন্দারমানিক, বড়মোদক ও লিগরি এলাকায়, যেখানে পানির গভীরতা এবং তলদেশে পাথরের পরিমাণ বেশি, সেখানে নতুন প্রজাতির মহাশোল মাছটি পাওয়া যায়। স্থানীয়ভাবে এ মাছটি 'ফড়ং' কিংবা 'মিকিমাউ' নামে পরিচিত। এটি ওজনে ১০ থেকে ১৫ কেজি পর্যন্ত হয়ে থাকে।

এ বিষয়ে বিএফআরআই'র মহাপরিচালক ড. ইয়াহিয়া মাহমুদ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'মহাশোলের নতুন এই প্রজাতির প্রজনন ও চাষাবাদ নিয়ে শিগগির গবেষণা শুরু হবে। মাছটি দামী ও আকারে বড় হওয়ায় এর বাণিজ্যিক গুরুত্ব রয়েছে। মহাশোলের অন্যান্য প্রজাতি নিয়ে ইনস্টিটিউটের দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা এ ক্ষেত্রে কাজে লাগানো যাবে।'

Comments

The Daily Star  | English
future of bangladesh after banning awami league

What are we building after dismantling the AL regime?

Democracy does not seem to be our focus today. Because if it were, then shouldn’t we have been talking about elections more?

13h ago