এমবাপের নৈপুণ্যে সবার আগে নকআউট পর্বে ফ্রান্স

সেই ২০১০ সাল থেকে শুরু। চ্যাম্পিয়নরা পরের বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্ব থেকে নেয় বিদায়। এরপর ১৯৯৮ সালে চ্যাম্পিয়ন হয়ে ২০০২ সালে এ পরিণতি হয়েছিল খোদ ফ্রান্সেরও। কাতারে বিশ্বকাপ শুরুর আগে ফরাসিদের বিবর্ণ পারফরম্যান্সে এবারও ছিল এমন কিছুর শঙ্কা। তবে কিলিয়ান এমবাপের জোড়া গোলে শেষ পর্যন্ত সব শঙ্কা উড়িয়ে সবার আগেই নকআউট পর্ব নিশ্চিত করেছে চ্যাম্পিয়নরা।

শনিবার দোহার স্টেডিয়াম ৯৭৪'এ ফিফা বিশ্বকাপের 'ডি' গ্রুপের ম্যাচে ডেনমার্ককে ২-১ গোলের ব্যবধানে হারিয়েছে ফ্রান্স। অথচ কিছু দিন আগেই নেশন্স লিগে দুটি লেগের ম্যাচেই ফরাসিদের হারিয়েছিল ডেনিশরা।

হারলেও সব সম্ভাবনা শেষ হয়ে যায়নি ডেনমার্কের। কাগজে কলমে টিকে আছে তারা। শেষ ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে জয় পেলে এবং ফ্রান্সের বিপক্ষে তিউনিসিয়া না জিতলে দ্বিতীয় রাউন্ডে উঠবে ডেনিশরা।

২০১০ সালে বিশ্বকাপ জয়ের পথে প্রথম ম্যাচ হেরে টানা ছয়টি ম্যাচ জিতেছিল স্পেন। এরপর ফ্রান্সই প্রথম টানা ছয়টি ম্যাচ জিতে নিল বিশ্বকাপে।

তবে মাঝমাঠের দখল দুই দলের প্রায় সমান থাকলেও আক্রমণে বেশ এগিয়েছিল ফরাসিরা। ২১টি শট নেয় দলটি, যার ৭টি ছিল লক্ষ্যে। অন্যদিকে ১০টি শট নিয়ে ২টি লক্ষ্যে রাখতে পারে ডেনমার্ক।

ম্যাচের দশম মিনিটে থিও হার্নান্দেজের ক্রসে অলিভার জিরুদ বলে পা লাগাতে পারলেই গোল পেতে পারতো ফ্রান্স। তিন মিনিট পর কর্নার থেকে ভারানের নেওয়া হেড গোলমুখ থেকে ব্লক করেন এক ডেনিশ ডিফেন্ডার। ২১তম মিনিটে দেম্বেলের ক্রসে রাবিউতের হেড ঝাঁপিয়ে ঠেকান ডেনিশ গোলরক্ষক স্মাইকেল। 

সাত মিনিট পর জুলস কুন্দের জোরালো শট ব্লক করেন এক ডিফেন্ডার। ৩৩তম মিনিটে আতোঁয়ান গ্রিজমানের দুরূহ কোণ থেকে নেওয়া শট কোনো মতে পা দিয়ে ঠেকান গোলরক্ষক স্মাইকেল।

৩৬তম মিনিটে গোল দেওয়ার দারুণ সুযোগ ছিল ডেনিশদের। কিন্তু আন্দ্রেয়াস কর্নেলিয়াসের শট অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। পরের মিনিটে এমবাপের ভলি থেকে জিরুদের হেড লক্ষ্যে থাকলে এগিয়ে যেতে পারতো ফ্রান্স।

৪০তম মিনিটে দেম্বেলের কাটব্যাক থেকে একেবারে ফাঁকায় বল পেয়ে গিয়েছিলেন এমবাপে। কিন্তু অবিশ্বাস্যভাবে উড়িয়ে মারেন এ পিএসজি তরুণ। ফলে গোলশূন্য ভাবেই শেষ হয় প্রথমার্ধ।

দ্বিতীয়ার্ধে দুই দলের খেলাতেই বাড়ে গতি। ৫৬তম মিনিটে একক দক্ষতায় মাঝ মাঠ থেকে বল নিয়ে ডি-বক্সে ঢুকে জোরালো শট নিয়েছিলেন এমবাপে। কর্নারের বিনিময়ে রক্ষা করেন গোলরক্ষক স্কাইকেল।

৬০তম মিনিটে এর চুয়ামেনির বল বুক দিয়ে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে এক খেলোয়াড়কে কাটিয়ে গোলরক্ষককে একা পেয়ে গিয়েছিলেন গ্রিজমান। কিন্তু উড়িয়ে নষ্ট করেন গোল দেওয়ার সুবর্ণ সে সুযোগ।

তবে পরের মিনিটেই এগিয়ে যায় ফ্রান্স। সতীর্থের কাছ থেকে বল পেয়ে থিও হার্নান্দেজকে পাস দেন ডি-বক্সে ঢুকে যান তিনি। কাটব্যাক পেয়ে দারুণ এক শটে লক্ষ্যভেদ করেন এ তরুণ।

আট মিনিট পর সমতায় ফেরে ডেনিশরা। কর্নার থেকে উড়ে আসা বলে হেড নেন জোয়াকিম অ্যান্ডারসন। ফাঁকায় বল পেয়ে ফের হেড নিয়ে লক্ষ্যভেদ করেন বার্সেলোনা ডিফেন্ডার আন্দ্রেয়াস ক্রিস্তেনসের। 

৭৩তম মিনিটে দিনের সেরা সুযোগ নষ্ট করেন জেস্পার লিন্ডস্টর্ম। মিকেল ড্যামসগার্ডের কাটব্যাক থেকে গোলরক্ষককে এক পেয়েও বুদ্ধিদীপ্ত শট নিয়ে পারেননি লিন্ডস্টর্ম। গোলরক্ষক বরাবর শট নিলে তা ঠেকিয়ে দেন হুগো লরিস।

৭৮তম কর্নার থেকে চুয়ামিনির হেড এক ডিফেন্ডার ব্লক না করলে তখনই এগিয়ে যেতে পারতো ফরাসিরা। পরের মিনিটে কুন্দের হেডও ঠেকান এক ডেনিশ ডিফেন্ডার। ৮০তম ফ্রিকিক থেকে রাবিউতের সাইড ভলি অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। পরের রাবিউতের আরও একটি শট লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়।

৮৬তম মিনিটে এগিয়ে যায় ফ্রান্স। গ্রিজমানের ক্রস থেকে লাফিয়ে ঊরুর ধাক্কায় বলের দিক বদলে লক্ষ্যভেদ করেন এমবাপে। এরপরও বেশ কিছু সুযোগ পেয়েছিল দুই দল। তবে গোল না হলে জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ে চ্যাম্পিয়নরা।

Comments

The Daily Star  | English

Hasnat calls for mass rally after Juma prayers demanding AL ban

The announcement came during an ongoing protest programme that began last night in front of Jamuna.

3h ago