আয়াত হত্যা: খাল সেচে খণ্ডিত পায়ের অংশ উদ্ধার

স্টার অনলাইন গ্রাফিক্স

চট্টগ্রামে খুন হওয়া ৫ বছর বয়সী শিশু আয়াতের মরদেহের খণ্ডিত অংশ উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।

পিবিআই জানিয়েছে, বুধবার বিকেলে নগরীর আউটার রিং রোড এলাকার আকমল আলী ঘাটের খালের অংশ থেকে অর্ধগলিত অবস্থায় আয়াতের ২ পায়ের অংশ উদ্ধার করা হয়।

তদন্ত কর্মকর্তা ও পুলিশ পরিদর্শক মনোজ দে দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আসামি আবীরের তথ্য অনুযায়ী- খালের অংশ বিশেষ সেচে খণ্ডিত পায়ের অংশ উদ্ধার করা হয়। আমরা এখন এটিকে ডিএনএ টেস্টের জন্য পাঠাব।'

পিবিআই মেট্রোর পুলিশ সুপার নাইমা সুলতানা বলেন, 'মুক্তিপণ আদায়ের জন্য শিশুটিকে অপহরণ করেছিল তাদেরই ভাড়াটিয়ার ছেলে আবীর। একপর্যায়ে শ্বাসরোধে হত্যা করে। মরদেহ গুম করতে টুকরো করা হয় এবং প্যাকেটে মুড়িয়ে সাগর ও খালের ২টি জায়গায় ছড়িয়ে দিয়েছে। ভারতীয় টিভি শো ক্রাইম পেট্রোল ও সিআইডি দেখে হত্যাকাণ্ড ও আলামত লুকিয়ে ফেলার এমন কৌশল রপ্ত করেছে বলে জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশকে জানিয়েছে আবির।'

পিবিআই মেট্রোর পরিদর্শক ইলিয়াস খান বলেন, 'আবীরের উদ্দেশ্যে ছিল অপহরণ করে আয়াতের পরিবারের কাছ থেকে টাকা আদায় করা। এজন্য সে পরিকল্পনা করছিল। কয়েক মাস আগে রাস্তায় একটি সিম খুঁজে পায় আবীর। নতুন ফোন কিনে মুক্তিপণ দাবির জন্য সে মোবাইলে সিমটি ঢোকায়। কিন্তু, সিমটি কাজ না করায় আর মুক্তিপণ চাইতে পারেনি।'

'সিসিটিভি ফুটেজে আবিরকে ২টি ব্যাগ নিয়ে যেতে দেখা যায়। পিবিআই কর্মকর্তারা তার মায়ের বাসায় গিয়ে ব্যাগ ২টি খোঁজেন। একটি ব্যাগ পেলেও অন্যটি পাননি। তখন তাদের সন্দেহ হয়। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আবিরকে নিয়ে পিবিআই কার্যালয়ে আনা হয়। একপর্যায়ে হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করে আবির,' বলেন ইলিয়াস।

পিবিআই কর্মকর্তারা জানিয়েছে, আবীর জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে- সে ২০ লাখ টাকা মুক্তিপণ নিতে চেয়েছিল। তার বাবা-মার মধ্যে সমস্যা আছে। আর বেকার থাকা অবস্থায় তার টাকার দরকার ছিল। সিএনজি কিনে তা দিয়ে ব্যবসা করার পরিকল্পনা ছিল তার।

আবীরের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী তার আরেক বন্ধু হাসিবকেও আটক করে পিবিআই। হাসিব চায়ের দোকানে কাজ করে। পরে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। এই ঘটনায় আবীরের বাবা-মা এবং বোনকে হত্যাকাণ্ডে দায়ের হওয়ায় মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ।

জানা গেছে, নিহত শিশু আয়াত ইপিজেড থানার দক্ষিণ হালিশহর বন্দরটিলা নয়ারহাট ওয়াজ মুন্সীর নতুন বাড়ির সোহেল রানার মেয়ে। সে স্থানীয় মাদ্রাসার শিক্ষার্থী ছিল। গত ১৫ নভেম্বর বিকেলে বাসা থেকে বের হয় আয়াত। তারপর বিভিন্ন জায়গায় খুঁজেও তার সন্ধান পাওয়া যায়নি। পরে ইপিজেড থানায় একটি জিডি করে তার পরিবার।

আয়াতদের ভবনের নিচতলায় দীর্ঘদিন ধরে পরিবার নিয়ে ভাড়া থাকতেন রংপুরের আবীরের পরিবার। চলতি মাসের শুরুতে তার মা আকমল আলী রোডের পকেট গেট এলাকায় আলাদা বাসা নেন। সেখানে মায়ের সঙ্গে আবীর থাকত।

Comments

The Daily Star  | English

Yunus meets Chinese ambassador to review China visit, outline next steps

Both sides expressed a shared commitment to transforming discussions into actionable projects across a range of sectors

5h ago