সাকিবের স্পিন ঘূর্ণিতে কাবু ভারতের মামুলি পুঁজি

Shakib Al Hasan
ছবি: ফিরোজ আহমেদ

মিরপুরের মন্থর উইকেটে নিজের তূণের সেরা অস্ত্রগুলো মেলে ধরলেন সাকিব আল হাসান। প্রথাগত বাঁহাতি স্পিনের সঙ্গে আর্ম বলের মোহ ছড়ালেন তিনি। এক লোকেশ রাহুল ছাড়া ভারতের ব্যাটাররা যার জবাবই দিতে পারলেন না। ওয়ানডেতে চতুর্থবারের মতো এবং ভারতের বিপক্ষে প্রথমবার ৫ উইকেট পেলেন সাকিব। শক্তিশালী ভারতকে অল্প রানে আটকে রাখল বাংলাদেশ।

রোববার মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আগে ব্যাটিং পেয়ে  ৪১.২ ওভারে ১৮৬  রানে গুটিয়ে গেছে ভারত। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৭৩ রান আসে রাহুলের ব্যাটে। বাকি কেউ আর ৩০ রানও করতে পারেননি। ভারতীয়দের ধসিয়ে ১০ ওভারে ৩৬ রান দিয়ে  ৫ উইকেট নেন সাকিব। ৪৭ রান দিয়ে ৪ উইকেট নেন ইবাদত হোসেন।

টস হেরে খেলতে নেমে সতর্ক শুরু করেছিলেন ভারতের দুই ওপেনার। পঞ্চম ওভারে গিয়ে অবশ্য ভাঙ্গে জুটি। ছন্দে থাকা শেখর ধাওয়ান মেহেদী হাসান মিরাজের বলে রিভার্স সুইপ খেলার চেষ্টায় লাইন মিস করে বোল্ড হন।

মিরপুরের মন্থর উইকেটে স্পিনাররা আক্রমণে আসতেই রানের চাকা শ্লথ হয়ে পড়ে। দুই রকম বাউন্স, বল থেকে আসার ছবি ভাসতে থাকে।

একাদশ ওভারে বল হাতে নিয়েই ঝলক দেখান সাকিব। দুই বলের মধ্যে তুলে নেন ভারতের সেরা দুই ব্যাটার রোহিত শর্মা ও বিরাট কোহলিকে।  তার আর্ম ডেলিভারিতে বোকা বনে বোল্ড হয়ে যান ভারত অধিনায়ক। থিতু হওয়া রোহিত ৩১ বল খেলে ৪ বাউন্ডারি আর ১ ছক্কায় করেন ২৭ রান। এক বল পরই লিটন ঝলক।

সাকিবের ডেলিভারিতে ড্রাইভ করেছিলেন কোহলি। কাভারে দাঁড়ানো লিটন ডান দিকে ঝাঁপিয়ে ছোবল মেরে হাতে জমান চোখ ধাঁধানো ক্যাচ। ব্যাটার কোহলি যেন নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছিলেন না।

দ্রুত দুই উইকেট হারিয়ে ভড়কে যাওয়া ভারত ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করে রাহুল-শ্রেয়াস আইয়ায়ের ব্যাটে। চতুর্থ উইকেটে জুটি বেধে এই দুজন দেখাচ্ছিলেন আস্থা। স্পিনে পটু শ্রেয়াস থিতু হয়ে গিয়েছিলেন। তার বিদায় ইবাদতের পেসে। শর্ট বল পুল করতে গিয়েছিলেন তিনি, টপ এজ হয়ে ক্যাচ উঠে সোজা। ৩৯ বলে ২৪ করে ফেরেন এই ডানহাতি।

ওয়াসিংটন সুন্দরকে নিয়ে পরে জুটি গড়েন রাহুল। দলকে খেলায় ফিরিয়ে আনেন দুজন। মাঝের ওভারে রানও বাড়াতে থাকেন রাহুল।

নতুন স্পেলে ফিরে এই দুজনের ৭৫ বলে ৬০ রানের জুটিও ভাঙেন সাকিব। ১২ রানে জীবন পেয়েও পাওয়া সুন্দর সাকিবের বলে রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে ধরা দেন পয়েন্টে। ৪৩ বল খেলে ১৯ রান করেন বাঁহাতি ব্যাটার। পরের ওভারে ইবাদত কোন রান করার আগেই ফিরিয়ে দেন শাহবাজ আহমেদকে। ব্যাক অফ দ্য লেন্থ ডেলিভারিতে ড্রাইভ করতে গিয়ে কাভারে ধরা দেন সাকিবের হাতে।

বাংলাদেশের সেরা বোলার সাকিব মুন্সিয়ানা দেখান তার পরের ওভারেও। পেস অলরাউন্ডার শার্দুল ঠাকুর সাকিবের হালকা টার্ন করা দারুণ এক ডেলিভারিতে বিভ্রান্ত হয়ে যান। অফ স্টাম্প উপড়ে যায় তার। ওই ওভারেই কাবু দীপক চাহার।

এই পেসার টিকতে পেরেছেন ৩ বল। সাকিবের আর্ম ডেলিভারি একদম  বুঝতে পারেননি তিনি। এলবিডব্লিউ সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করেও লাভ হয়নি ভারতের।

ভারতের আশা টিমটিম করে জ্বলছিল রাহুলের ব্যাটে। বাকিদের ব্যর্থতায় মনে হচ্ছিল ভিন্ন উইকেটে ব্যাট করছেন তিনি। রান করছিলেন একশোর বেশি স্ট্রাইকরেটে। মোহাম্মদ সিরাজকে নিয়ে নবম উইকেটেও তিনি যোগ করেন ৩১ বলে ২১ রান।

ইবাদতের বলে পুল করতে গিয়ে ফাইন লেগে এনামুল হক বিজয়ের হাতে ধরা দেন তিনি। ৭০ বলের ইনিংসে ৫ চারের সঙ্গে ৪ ছক্কা মারেন রাহুল। ইবাদত সিরাজকে তুলে মুড়ে দেন ইনিংস।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

Comments

The Daily Star  | English

Prof Yunus sends birthday greetings to Khaleda Zia with flower bouquet

The bouquet was handed over to Khaleda Zia's private secretary ABM Abdus Sattar

1h ago